• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
নুসরাত হারেনি, হেরেছি আমরা

ছবি : সংগৃহীত

মুক্তমত

নুসরাত হারেনি, হেরেছি আমরা

  • প্রকাশিত ১৬ এপ্রিল ২০১৯

মোহাম্মদ রনি খাঁ

 

 

২০১৬ সালের ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকা থেকে সোহাগী জাহান তনুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। তনু হত্যাকাণ্ডের পর বিচারের দাবিতে তার কলেজের শিক্ষার্থী, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন জোরালো আন্দোলন করেছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিল। কিন্তু কিছুদিন পরেই আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যায়। তনু ও নুসরাত তো আপনার আমার আপন কেউ নয়। তাই সময়ের প্রয়োজনে ভাবতে হবে প্রত্যেকের মা, বোন কতটা নিরাপদ। বাসে ধর্ষণ, স্কুলে ধর্ষণ! আহা জাতি! গর্বিত জাতি তুমি! শিশু শ্রেণির একজন শিক্ষার্থীও নিরাপদ তো? বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ! এ পরিস্থিতিতে কোনো মায়ের মন কি চাইবে নিজের মেয়েকে সুদূর শহরের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে পাঠাতে? কোনো ভাইয়ের মনে কি বোনের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা জাগবে না? বাবা কি পারিবারিক সম্মানের কথা ভেবে মেয়েকে নিজ শহরের বাইরে কিংবা পাশের গ্রামের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে শান্তিতে ঘুমানোর নিশ্চয়তা পাবেন?

নুসরাত হারেনি, হেরেছি আমরা! হেরেছে পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা। হেরেছে প্রতিটি পিতা! পিতা তার নিজের কন্যার জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল তৈরিতে ব্যর্থ। বোনের ভাই হেরেছে। সে তার বোনের জন্য নিরাপত্তার চাদরে সজ্জিত করতে পারেনি পৃথিবীকে। হেরেছে আমাদের বিচারব্যবস্থা। রাষ্ট্রের বিচারহীনতা তনুকে যথাযথ বিচার দিতে পারেনি। নুসরাতের বিচার কার্যক্রম নয়-ছয় করে হয়তো অস্ত যাবে! এভাবেই হেরে যাবে আমাদের সভ্যতা, বাঙালির স্বাধীন চেতনাবোধ।

ফেনীর সোনাগাজীতে এবার প্রধান শিক্ষকের ধর্ষণে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা। এসব খবর হয়ে ঘুরে বেড়াবে বিবেকের অন্ধ গলিতে। ফেসবুক তোলপাড়। তারপর মামলা, মানববন্ধন আর বিচারের দাবি। কিন্তু সমাধান কী? এখনই সমাধান নিয়ে ভাবতে হবে। সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সময়ের স্রোতে হারিয়ে যাবেন না; বরং মা-বোনের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবুন। নিজের বোনের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।

 

লেখক : শিক্ষার্থী; গণ বিশ্ববিদ্যালয়

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads