• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে নিয়ম মানা জরুরি

ছবি : সংগৃহীত

মুক্তমত

সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে নিয়ম মানা জরুরি

  • এস এ ইমন
  • প্রকাশিত ২২ এপ্রিল ২০১৯

সড়ক দুর্ঘটনা বর্তমানে আমাদের জন্য মারাত্মক এক ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশে প্রতিদিন কোনো না কোনো স্থানে সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছেই। কখনো ড্রাইভারের ভুলে আবার কখনও নিজেদের ভুলে প্রাণ হারাচ্ছে কত মানুষ। এ ব্যাপারে প্রশাসনেরও কম দৌড়ঝাঁপ নেই, তারপরও থেকে যায় ফাঁক-ফোকর, তা থেকে বেরিয়ে আসে ফিটনেসবিহীন অদক্ষ কত শত গাড়ি। অদক্ষ ড্রাইভার দ্বারা চালিত এসব গাড়ি ঘটাচ্ছে নানা দুর্ঘটনা। পত্রিকা খুললেই চোখে পড়ে প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটেছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ সেন্টারের (এআরসি) গবেষণার তথ্য অনুযায়ী দেশে প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে ১২ হাজার লোক নিহত ও ৩৫ হাজার আহত হচ্ছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশে প্রতি ১০ হাজার যানবাহনে মৃত্যুর হার ৮৫ দশমিক ৬।

নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলনও কম হয়নি। সড়ক নিরাপত্তার দাবিতে ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত একটি আন্দোলন বা গণবিক্ষোভ হয়। ঢাকায় ২৯ জুলাই সংঘটিত এক সড়ক দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে নিহত দুই কলেজ শিক্ষার্থীর সহপাঠীদের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ পরে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তার ঠিক আট মাসের ব্যবধানে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আবারো উত্তাল হয় রাজধানী ঢাকা। বাসের চাপায় এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এ বছরের ১৯ মার্চ আবারো শুরু হয় এ আন্দোলন। সেখানেও উঠে আসে প্রশাসনের দুর্বলতা। লাইসেন্সবিহীন গাড়ি ঘুরে বেড়াচ্ছে রাজধানীর মাঝে। নজর নেই প্রশাসনের। যখনই কোনো আন্দোলন হচ্ছে তখনই বের হচ্ছে এসব অনিয়ম। পাল্টে যাচ্ছে গাড়ির নাম এবং রং। এসব কিছু কিন্তু আমাদের চোখের সামনেই হচ্ছে। কিন্তু আমরা ওসব দেখেও না দেখার ভান করে এড়িয়ে যাচ্ছি। প্রশাসনকে সুযোগ করে দিচ্ছিই আমরা।

আমাদের দেশে সড়কগুলোতে সব থেকে বেশি যেটা দেখা যায় সেটা হলো জেব্রা ক্রসিং। সারা দেশে প্রতিটা সড়কে রয়েছে কমবেশি জেব্রা ক্রসিং পয়েন্ট, যা কিনা আমাদের নিরাপদভাবে রাস্তা পারাপারের জন্য তৈরি বা চিহ্নিত করা। আমাদের দেশে জেব্রা ক্রসিং সম্পর্কে ড্রাইভার ও জনগণ তেমন সচেতন নয়, এর জন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা।  তাহলে কিছু হলেও সড়ক দুর্ঘটনা কমবে। আমরা কতটা মেনে চলছি নিয়ম।  সেটাও দেখার বিষয়। সময় বাঁচানোর জন্য নেমে পড়ছি মৃত্যুকূপে। চলন্ত গাড়ির সামনে থেকে জীবন বাজি রেখে রাস্তা পারাপার করছি।

এরপর আসি ফুটওভার ব্রিজের ব্যাপারে, আমাদের দেশে উল্লেখযোগ্য কিছু স্থানে ফুটওভার ব্রিজ রয়েছে, যা কিনা সব থেকে নিরাপদ রাস্তা পারাপারের জন্য। সেই ফুটওভার ব্রিজ থাকতেও আমরা রাস্তা পারাপার হচ্ছি ব্যস্ত সড়ক দিয়ে, যা সুইসাইড করার মতো। রাস্তা পারাপারে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার নিশ্চিতে প্রয়োজন আরও বেশি জনসচেতনতা।

বাসে চলাচলের ক্ষেত্রে সব থেকে যেটা মেনে চলা উচিত তা হলো নির্দিষ্ট বাস স্টপেজ থেকে বাসে ওঠা। দৌড়ে চলন্ত বাসে উঠতে গিয়েও দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন অনেকে। এছাড়া বাসচালকদের আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্দিষ্ট বাস স্টপেজে থামা এবং তাছাড়া যাত্রী না উঠানো নিয়ম করে প্রশাসনকে এসব নিশ্চিত করা। তাহলে আর যাই হোক মূল্যবান এ জীবন রাস্তায় হারাবে না। এসব জিনিস সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে পারলে কিছুটা হলেও সড়ক দুর্ঘটনা কম হবে।

লেখক : ছাত্র, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads