• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
কিন্ডারগার্টেনে দরকার ব্যাংকঋণ নীতিমালা

ছবি : সংগৃহীত

মুক্তমত

কিন্ডারগার্টেনে দরকার ব্যাংকঋণ নীতিমালা

  • প্রকাশিত ২৩ মে ২০১৯

মন্জুরুল হক

 

সারা দেশে বেকার যুবকদের জন্য ঘুষ ছাড়া চাকরির কোনো ব্যবস্থা নেই। নেই কোনো ভালো কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। কর্মসংস্থানের জন্য বড় ভূমিকা রাখছে শিল্প-কারখানাসহ বেশ কয়েকটি সেক্টর। শিল্প-কারখানার বাইরে লাখ লাখ বেকার যুবক ঘুরে বেড়াচ্ছে। বেকার যুবকদের ক্ষুদ্র আকারে হলেও ঠাঁই রাখছে কিন্ডারগার্টেন নামক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আর এই কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় উদ্যোক্তাদের নেই কোনো ব্যাংকঋণ নীতিমালা।

তরুণদের অনেকেই কৃষক পরিবার থেকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেকে গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। অনেকেই কোনো কাজ না পেয়ে অভিভাবকের চাপে বাধ্য হয়ে অসৎ উপায়ে হলেও অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করে। আবার অনেকে পছন্দের কাজ না পেয়ে হতাশ হয়। সারা দেশে প্রত্যেক উপজেলা, জেলা শহরে শত শত কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয় শিশু-কিশোরদের শিক্ষা নিয়ে কাজ করছে। একই সঙ্গে কম করে হলেও আর্থিকভাবে তরুণদের স্বাবলম্বী করছে এসব বিদ্যালয়। গ্রামে অবহেলিত নারীদেরও স্বাবলম্বী করছে কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়।

সর্বোপরি কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়গুলো সরকার নিয়ন্ত্রিত। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায় সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়ের। কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয় থেকে সরকারিভাবে বিনামূল্যে বই বিতরণ কর্মসূচি এবং প্রাক-প্রাথমিকে বিনামূল্যে বই ও খাতা পাচ্ছে ছোট শিশুরা। বিদ্যালয়গুলো থেকে তুলনামূলকভাবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিক্ষার্থীরা ভালো রেজাল্ট করছে। বিদ্যালয়ের অবকাঠমোগত দিক বিবেচনা করলে জরাজীর্ণ অবস্থায় পাওয়া যায় বেশিরভাগ বিদ্যালয়। এর প্রধান কারণ হলো ব্যাংকঋণ নীতিমালা না থাকা এবং প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তার আর্থিক সচ্ছলতা না থাকা। কিন্ডারগার্টেন প্রতিষ্ঠানের কোড নম্বর রয়েছে। তথাপি সরকারি ব্যাংকঋণ নীতিমালা না থাকার কারণে সরকারি-বেসরকারি বা কোনো এনজিও কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়কে ব্যাংক ঋণ দিচ্ছে না। এতে বিদ্যালয়গুলো পিছিয়ে পড়ছে। বেকার হচ্ছে হাজারো নারী-পুরুষ।

তরুণদের এগিয়ে নিতে কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়গুলোকে স্বল্পসুুদে ব্যাংকঋণ দিয়ে সরকারের সহায়তা করা দরকার। কিন্ডারগার্টেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রতি বাজেটের দিকে তাকিয়ে থাকেন। ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও সরকারি-আধাসরকারি প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষকরা যেভাবে ব্যাংকঋণ সুবিধা পেয়ে থাকেন। ঠিক একইভাবে বাজেটে কিন্ডারগার্টেন প্রতিষ্ঠান সুবিধার আওতায় আনা যেতে পারে। যদি কিন্ডারগার্টেন প্রতিষ্ঠান ব্যাংকঋণ সুবিধায় আসে, তাহলে নতুন করে আরো উদ্যোক্তা তৈরি হবে, আরো কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এতে প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ, প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা, মানসম্মত শিক্ষা উপকরণ, শিক্ষা সহায়ক কর্মসূচি গ্রহণ এবং সর্বোপরি শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে তরুণ সমাজ কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করবে। বেকার সমস্যার সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়টি ভেবে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি।

 

লেখক : শিক্ষক, বেলাশী প্রগতি একাডেমি, কাপাসিয়া, গাজীপুর

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads