• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
করোনা প্রতিষেধক এবং  আরো কিছু কথা

সংগৃহীত ছবি

মুক্তমত

করোনা প্রতিষেধক এবং আরো কিছু কথা

  • প্রকাশিত ২৫ মার্চ ২০২০

আহসান হাবীব লিংকন:

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ভাবনার বিষয় করোনা ভাইরাস বা কভিড-১৯। প্রতিদিন সংক্রমিত হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। বেড়ে চলেছে মৃতের সংখ্যা। এর মাঝেও আশার বাণী প্রতিষেধকবিহীন এ ভাইরাসেও সুস্থ হচ্ছে অধিকাংশ মানুষ। বৈশ্বিকভাবে প্রভাব পড়ায়, একে বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

করোনা বা কভিড-১৯ এখন পর্যন্ত ১৫০টির বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উন্নত বিশ্বের রাষ্ট্রগুলো। আক্রান্ত হয়েছে ভেটো ক্ষমতাধর পাঁচ দেশসহ বিশ্বের অন্যতম ট্রিলিয়ন অর্থনীতির ১৬টি দেশ। বৈশ্বিক এ মহামারীর প্রভাবে যোগাযোগ, অর্থনীতি, বাণিজ্য, পর্যটন সহকারে বিভিন্ন খাত ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

অঞ্চলভেদে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মহামারী নানা সময়ে সংক্রমিত হয়েছে, মোকাবিলা করা হয়েছে প্রতিষেধক দ্বারা। এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাস বা কভিড-১৯ আছে প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিনশূন্য। তাই সাম্প্রতিক সময়ের বৈশ্বিক ভাবনার বিষয় করোনা ভ্যাকসিন। বিশ্ব আধিপত্যকে ধরে রাখতে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো প্রবল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ভ্যাকসিন আবিষ্কারের। এছাড়াও বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা আবিষ্কারের চেষ্টা করে চলেছে করোনা ভ্যাকসিনের। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির দাবি তারা করোনা ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করেছে। (সূত্র : দৈনিক সমকাল, ১৬/০৩/২০২০ এবং  বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক)।

প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে এই মহামারীকে জয় করতে সক্ষম হবে গোটা বিশ্ব। কারণ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে এই ভ্যাকসিন এখন এই চলমান দুরবস্থার ভেতরে বিশ্ববাসীর কাছে এক আরাধ্য বস্তু। তবে কে বা কাদের কাছে প্রথম ধরা দেবে এই আলাদিনের প্রদীপ! আবিষ্কারের পরই বা কেমন থাকবে রাষ্ট্রটির কূটনৈতিক ব্যবহার। এসব প্রশ্নও এখন দেখা দিচ্ছে জনমনে।

বিশ্ব ক্ষমতাধর দেশগুলোর অন্যতম কেউ আবিষ্কার করলেই বা কেমন আচরণ থাকবে অন্য ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের প্রতি। পূর্বের জের ধরে বাণিজ্য বা স্নায়ুযুদ্ধ চলমান রাখবে নাকি বেঁধে দেবে বিশেষ কোনো শর্ত। উন্নয়নশীল বা অ-উন্নত রাষ্ট্রের প্রতি কতটা সহনশীলতা বজায় রাখবে উৎপাদনকারী রাষ্ট্রটি তা দেখার বিষয়। তবে বৈশ্বিক এ মহামারী মোকাবেলায় যে রাষ্ট্রই এই প্রতিষেধক আন্তর্জাতিক বাজারে নিয়ে আসবে, সেই রাষ্ট্র যে চলমান বিশ্বের অন্যতম গ্রগণযোগ্য এবং আধিপত্যের অধিকারী হবে, তা বলাই যায়।

এছাড়া যেখানে বিশ্ব অর্থনীতিতে ধ্বনিত হচ্ছে মন্দার শঙ্কা, সেখানে উৎপাদক রাষ্ট্রটি প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন বাণিজ্য করে এগিয়ে যাবে অন্য অর্থনৈতিক পরাশক্তিগুলো থেকে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সর্বোপরি, এ মহামারী মোকাবেলায় প্রয়োজন বৈশ্বিক রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ সব আন্তর্জাতিক সংস্থাকে রাখতে হবে বিশেষ দায়িত্বশীলতা। এছাড়া বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোর নেতাদের হতে হবে সহনশীল, মানবিক এবং বাড়িয়ে দিতে হবে সবার প্রতি সবার উদারতার হাত। তবেই বৈশ্বিকভাবে এ মহামারী মোকাবেলা করা সহজ হয়ে উঠবে।

 

লেখক : শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ, সরকারি ব্রজলাল কলেজ, খুলনা

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads