• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

মুক্তমত

প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ সব সময় ভালো

  • প্রকাশিত ০২ এপ্রিল ২০২০

আবু তালহা আকাশ

 

 

বর্তমানে করোনা নামক মহামারীর কবলে পড়ে পুরো বিশ্ব এক আতঙ্কজনক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। করোনা-সংকট মোকাবিলা ও করোনা নিয়ে ভাবনার গভীরতায় আমরা অন্য সব রোগ বা অসুখকে যেন প্রায় ভুলতেই বসেছি। তারই সুযোগে ডেঙ্গু তার অবাধ বিস্তার লাভ করে চলেছে। ‘প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ সব সময় ভালো’ এই প্রবাদবাক্যটি আমরা প্রতিনিয়ত শুনলেও, এর কার্যকর ব্যবহার আমাদের মধ্যে কখনোই পরিলক্ষিত হয় না। যতক্ষণ না পর্যন্ত তা এক বিরাট রকমের খারাপ রূপ না নেয়, ততক্ষণ পর্যন্ত জাতি হিসেবে আমাদের মধ্যেই থাকে নানা মতদ্বৈধতা। বর্তমান সংকটময় মুহূর্তে যা একটি দেশের জন্য খারাপ নিদর্শন। এডিস মশা খুব অল্প পানিতে ডিম পাড়ে, যা পানি ছাড়াও প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে। এর জন্যেই এর লার্ভা ধ্বংস করা খুবই জরুরি, নির্মাণাধীন ভবনের প্রজননস্থল ধ্বংস করেই ৪০ শতাংশ প্রর্যন্ত রোগের প্রাদুর্ভাব কমানো সম্ভব। বাংলাদেশে ২০০০ সালে প্রথম ডেঙ্গু জ্বর দেখা দেয়। দাবি করা হয়েছিল, সেই বছরে ৯৩ জন মারা গেছে। ৩ বছর পরে মৃত্যুর সংখ্যা ধীরে ধীরে প্রায় শূন্যে নেমে আসে। তবে এটি আবার ২০১৮ সালে ফিরে আসে, এতে ২৬ জন মারা যায় এবং ১০ হাজার ১৪৮ জন আক্রান্ত হয়। ২০১৮-এর আগে সর্বোচ্চ আক্রান্ত লোকের সংখ্যা ছিল ২০০২ সালে, ৬ হাজার ২৩২ জন। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট ৫০ হাজার ১৪৮ জন ডেঙ্গুর চিকিৎসা নেয়। সারা দেশে শুধু ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিল ১ লাখ ২০১ জন। এর মাঝে মারা যায় অন্তত ২৬৪ জন। আগস্ট মাসে ৫২ হাজার ৬৩৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। গত কয়েক বছরের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুতে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়ে থাকে। ২ জানুয়ারি ২০২০ প্রথম আলোতে প্রকাশিত তথ্যমতে, বর্তমানে দেশের হাসপাতালগুলোতে ২২ জন ডেঙ্গুরোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছে ১৭ জন। তাই করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগ যাতে আবার গত বছরের ন্যায় মহামারী আকার ধারণ করতে না পারে, সে জন্য আমাদের এখন থেকেই সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করাও বাঞ্ছনীয়। এর জন্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয়সহ কর্তব্যরত ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি। আমাদের অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে, করোনা প্রতিরোধ করতে গিয়ে ডেঙ্গুর মতো অন্যান্য রোগ যেন প্রকট আকার ধারণ করতে না পারে।

 

লেখক : শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads