• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন পাঠদান কার্যক্রম কতটুকু ফলপ্রসূ হবে?

ফাইল ছবি

মুক্তমত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন পাঠদান কার্যক্রম কতটুকু ফলপ্রসূ হবে?

  • প্রকাশিত ৩০ জুন ২০২০

আগামীকাল পহেলা জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার প্রতিষ্ঠার শতবার্ষিকী উদযাপন করতে যাচ্ছে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের সংক্রমন মোকাবেলায় এ বছরের মার্চ মাস থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি উন্নতি কবে হবে এ নিয়ে রয়েছে কেবলই সংশয়। বাংলাদেশের মত জনবহুল, দরিদ্র অসচেতন জনগণের দ্বারা চীন, কোরিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের দেশগুলোর মত লকডাউন শতভাগ কার্যকর করে করোনা ভাইরাস মোকাবেলা করা দিবাস্বপ্ন ছাড়া কিছুই না। তবুও সরকার আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে যতটুকু সম্ভব মোকাবেলা করার জন্য।

এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ায় সেশন জটের ফাঁদে পড়েছে দেশের লাখ লাখ শিক্ষার্থী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য ১-৭ জুলাইয়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম অনলাইনে শুরু করার নির্দেশ প্রদান করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান। তবে অনলাইনের এই পাঠদান কার্যক্রম কতটুকু ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে রয়েছে দ্বিধা, সংশয়। শিক্ষা কার্যক্রম অনলাইনে শুরু করা যেতে পারে কি না, এটা নিয়ে অনলাইনে একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়েছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে। সেখানে মাত্র ৪৭% ছাত্রছাত্রী অনলাইন পাঠদানের পক্ষে রায় দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৭০% ছাত্রছাত্রীই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পরপরই তাদের প্রায় সবাই ই নিজ এলাকায় চলে গিয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা খুবই নাজুক। যেখানে 2g সংযোগই ঠিকমত পাওয়া যায়না, সেখানে ভিডিও ক্লাসে অংশগ্রহণ করার স্বপ্ন কেবলই দিবাস্বপ্ন।

তাছাড়া নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পর মোবাইলের কলরেট, ইন্টারনেট প্যাকেজের মূল্য আগের তুলনায় বেড়েছে। এই খাত থেকে সরকারের ভ্যাটের পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। অনেক ছাত্রছাত্রীই স্মার্ট ফোন ব্যবহার করেনা। স্মার্টফোন, ল্যাপটপ কেনার সামর্থ্য নেই অনেকেরই। তাই অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহন করা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিংহভাগ ছাত্রছাত্রীই বঞ্চিত হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য নিয়োগ পাওয়া প্রো-উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কালাম বলেছেন, "অনলাইন কার্যক্রমের মাধ্যমে শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হবে। কোনো পরীক্ষা নেওয়া হবেনা।"

পরীক্ষাই যদি না নেওয়া হয়, তবে শিক্ষার্থীদের সেশনজটের কোনো সমাধান বাস্তবে হচ্ছেনা।

ইতোমধ্যে নতুন অর্থবছরের যে বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে, সেখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৮৩০ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। 

শিক্ষার্থীদের অভিমত, ওই টাকার অর্ধেক যদি শিক্ষার্থীদের মোবাইল ডাটা এবং স্মার্ট ডিভাইস কেনার জন্য বরাদ্ধ দেওয়া হয় অথবা সরকারীভাবে এই খাতে প্রণোদনা দেওয়া হয়, তাহলে হয়তো অনলাইন কার্যক্রমের সুফল সীমিত আকারে হলেও পাওয়া যাবে।

লেখক: মোহাম্মদ আহসান হাবীব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads