• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
দেহের হাড় সুস্থ রাখা জরুরি

ছবি : সংরক্ষিত

স্বাস্থ্য

দেহের হাড় সুস্থ রাখা জরুরি

  • ফিচার ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২১ জুন ২০১৮

আমাদের অনেকেরই জানা নেই কোন খাবার হাড় মজবুত করে আর কোন খাবার হাড়কে দুর্বল করে। যদিও প্রত্যেকের জন্যই তা জানা জরুরি। কারণ আমাদের দেহের সঠিক পরিচালনার জন্য হাড় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখা চাই, দেহের ভেতরে হাড়ের তৈরি কঙ্কালই আমাদের দেহকে ধারণ করে রাখে। তাই আমাদের প্রত্যেকের হাড়ের সুস্থতা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। খেতে হবে হাড় মজবুত রাখার জন্য কার্যকর খাবারগুলো এবং বর্জন করতে হবে হাড় দুর্বল করে এমন খাবার।

যেসব কারণে দুর্বল হয় হাড়

যেসব খাবার হাড়কে অত্যধিক দুর্বল করে সেগুলো হলো—

অ্যালকোহল : অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন হাড়ের সমস্যা সৃষ্টি করে। এটি দেহের মধ্যে ক্যালসিয়াম শোষণ হ্রাস করে এবং হাড়ের ক্যালসিয়াম হ্রাস করে বলে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে।

ঠান্ডা পানীয় : অতিরিক্ত ঠান্ডা পানীয় আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর। এর মধ্যে উপস্থিত কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং ফসফরাস হাড়কে দুর্বল করে দেয়।

কফি : কফিতে ক্যাফিনের মাত্রা বেশি থাকে বলে অতিরিক্ত কফি পান করা উচিত নয়। অতিরিক্ত কফি পানের ফলে দেহে ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমতে থাকে এবং এতে করে হাড় দুর্বল হয়ে যায়।

অতিরিক্ত লবণ : অতিরিক্ত লবণ সেবন শরীরের ক্যালসিয়ামকে ইউরিনের মাধ্যমে বের করে দেয় এবং হাড় দুর্বল হতে থাকে।

অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ : অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস দেহের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। এর ফলে দেহের ওজন বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এ কারণে হাড়ের ওপর বেশি চাপ পড়তে থাকে।

অতিরিক্ত ওষুধ সেবন : কিছু ওষুধ এমন হয় যেগুলো টানা বেশিদিন খাওয়ার ফলে হাড়ের ওপর ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, বিশেষ করে বাত ও হাঁপানি রোগের বেলায় এমন ওষুধ থাকে, যেগুলো গ্রহণের ফলে হাড়ের ক্ষতি হয়। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এ ধরনের ওষুধ সেবন উচিত নয়।

ধূমপান : বিড়ি ও সিগারেটে উপস্থিত বিষাক্ত পদার্থগুলো হাড় দুর্বল করে দেয়। অতিরিক্ত ধূমপানের অভ্যাস হাড়ের টিস্যুকে নষ্ট করে দেয় এবং নতুন টিস্যু দ্রুত তৈরি হয় না। তার মানে, ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে হাড় দুর্বল হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

হাড় মজবুত রাখতে যা খাওয়া উচিত

দেহের হাড় মজবুত করতে যে ধরনের খাবার গ্রহণ করা উচিত—

প্রচুর শাকসবজি খাওয়া : শাকসবজি ভিটামিন সি’র সবচেয়ে ভালো উৎস, যা হাড় গঠনকারী কোষ উৎপাদনকে মজবুত করে। শাকসবজি হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায়।

পর্যাপ্ত প্রোটিনযুক্ত খাদ্য গ্রহণ : সুস্থ হাড় গঠনের জন্য পর্যাপ্ত প্রোটিন অপরিহার্য। পর্যাপ্ত প্রোটিনের অভাবে হাড়ের ক্যালসিয়াম শোষণের মাত্রা কমে যায় এবং হাড় গঠন ব্যাহত হয়, হাড় ভঙ্গুর হয়। তবে অতিমাত্রায় ক্যালসিয়াম গ্রহণ করলেও আবার রক্তে এসিডিটি হয়ে হাড় থেকে ক্যালসিয়াস বের হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে।

নিয়মিত উচ্চ ক্যালসিয়ামযুক্ত খাদ্য গ্রহণ : ক্যালসিয়াম হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, শক্ত হাড় গঠনে সাহায্য করে। ক্যালসিয়ামের অভাবে হাড় দুর্বল ও ক্ষয় হয়। তাই আমাদের অবশ্যই প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা উচিত। একজন বয়স্ক পুরুষের গড়ে প্রতিদিন অন্তত এক গ্রাম ক্যালসিয়াম গ্রহণ জরুরি হলেও উঠতি বয়সীদের দৈনিক ১৩শ মিলিগ্রাম এবং বয়স্ক নারীদের দৈনিক ১২শ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা দরকার।

প্রয়োজনীয় ভিটামিন খাওয়া : ভিটামিন ‘ডি’ হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য একাধিক উপায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষ করে এটি মানবদেহকে ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে, ব্লাড লেভেল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই বেশি করে ভিটামিন ‘ডি’ এবং ভিটামিন ‘কে’ সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন।

ম্যাগনেসিয়াম এবং জিংক : হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি ম্যাগনেসিয়াম এবং জিংকসহ অন্যান্য খনিজ পদার্থও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব নারী প্রতিদিন ৪০০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করেছেন, তাদের হাড়ের ঘনত্ব ২-৩% বৃদ্ধি পায়। জিংক স্বল্প পরিমাণে হলেও হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। জিংক হাড় গঠনের সেলগুলোকে জোরদার করতে সাহায্য করে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads