• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

স্বাস্থ্য

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ডায়েট অ্যান্ড নিউট্রিশন প্ল্যান

যে কোনো খাবারই খাওয়া যাবে তবে তা হতে হবে নির্দিষ্ট পরিমাণে

  • পুষ্টিবিদ আয়েশা সিদ্দিকা
  • প্রকাশিত ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮

খাবার খাওয়ার পর আমাদের শরীরে এনার্জি তৈরি হয়। শরীরে এনার্জি তৈরি করার জন্যে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট এই তিনটি উপাদানে খাবারগুলো ভেঙে যায়। এই পদ্ধতিটি হলো মেটাবলিজম। আমাদের শরীরের ইনসুলিন হরমোন এই তিনটি উপাদানকে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। খাওয়ার পর পাকস্থলীতে এই উপাদানগুলো হজম হয়। হজমের পর কার্বোহাইড্রেট থেকে গ্লুকোজ রক্তে প্রবেশ করে এনার্জি দেয়। তাই ডায়াবাটিসের রোগীর ক্ষেত্রে কতটা পরিমাণে খাবার খেলে, রক্তে সুগারের পরিমাণ বাড়ছে বা কমছে, তা জানা জরুরি। ওজন, উচ্চতা, শারীরিক কর্মক্ষমতার ওপর নির্ভর করে মিল প্ল্যান করা উচিত। সাধারণত ডায়াবেটিসের রোগীদেরই ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণের জন্য অতিরিক্ত শর্করা খাওয়ার ব্যাপারে সাবধান থাকতে বলা হয়। যে কোনো খাবারই খাওয়া যাবে তবে তা হতে হবে নির্দিষ্ট পরিমাণে। ডায়াবেটিসের টাইপ এবং তার ওজন অনুযায়ী পুষ্টিবিদের দেওয়া ডায়েট চার্ট অনুসরণ করুন।

ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ : ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে না থাকলে ডায়াবেটিস রোগীর জীবন ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ডায়াবেটিস না থাকলেও ব্লাড সুগার যদি বেশি হয় তাহলে ক্লান্তি লাগতে পারে, ডিহাইড্রেশন দেখা দিতে পারে, ব্লাড প্রেশার হয়ে যেতে পারে অনিয়ন্ত্রিত। কিন্তু সবসময়েই যদি আপনার ব্লাড সুগার বেশি থাকে, তাহলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। বাড়তে পারে ওজন এবং পেটের মেদ।

ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাবার : ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার- শিম, ডাল, হোল গ্রেইন, বাদাম ইত্যাদি খাবারে অনেকটা ফাইবার থাকে। এগুলো খেলে হজম প্রক্রিয়া ধীর হয়ে থাকে। কাঠবাদাম, বার্লি এবং ওটমিলের মতো খাবারগুলো এক্ষেত্রে সহায়ক।

দারুচিনি- প্রতিদিন দারুচিনি খেলে ফাস্টিং ব্লাড গ্লুকোজ কম হয়। এ ছাড়া টাইপ টু ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে এটা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

শাকসবজি- ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য শাকসবজি খাওয়া জরুরি।

মিষ্টি নয় এমন ফল- লেবু বেশি বেশি খাওয়া ভালো। জামও খাওয়া যাবে। পাকা পেঁপে মিষ্টি হয় বলে এটা না খেয়ে কাঁচা পেঁপে খেতে হবে। ডাব/নারকেল খাওয়াটাও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো। তেল-মশলা, রেডিমেড সসে রান্না করা খাবার ডায়াবেটিসের পেশেন্টদের পক্ষে উপযোগী নয়। সবুজ ও হলুদ রঙের সবজি যেমন ব্রুকলি, বেলপেপার, পালংশাক, গাজর খান। ছাঁকা তেলে ভাজা খাবার না খেয়ে মুখরোচক খাবারগুলো ওভেনে বেক করে বা গ্রিল করে খেতে পারেন। গোটা গম, জোয়ার, বাজরা, ব্রাউন রাইসের মতো কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খেতে পারলে ভালো। সিম্পল কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ খাবার যেমন কেক, চিনি, টফি, জ্যামের মতো খাবার এড়িয়ে চলুন। কমলালেবু, আপেল, নাশপাতি, পেঁপে, বেদানায় গ্লুকোজের পরিমাণ কম। সরষের তেলে রয়েছে ভালো ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড। সরষের তেল ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ। ঘি, নারকেল তেলে রয়েছে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড। ডায়েটে ৩/৪ ভাগ রাখুন সরষের তেল, ১/৪ ভাগ রাখুন নারকেল তেল, ঘি। লো ফ্যাট দুধ (ডবল টোনড), টক দই খেতে পারেন। প্রোটিনের মধ্যে ডাল, সয়াবিন, মাছ, ডিমের সাদা অংশ, চিকেন ব্রেস্টের মধ্যে যে কোনো একটা খাবার দুপুরে বা রাতে খান। লো-ফ্যাট ডেয়ারি প্রডাক্ট খেতে পারেন। বাড়িতে তৈরি খাবার খান। প্রসেসড খাবার এড়িয়ে চলুন।

 

লেখক : পুষ্টি কনসালট্যান্ট

জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হসপিটাল

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads