• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

স্বাস্থ্য

মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পেতে হলে

  • ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল
  • প্রকাশিত ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮

মাথাব্যথা খুব সাধারণ একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। প্রত্যেক মানুষ এ সমস্যায় কোনো একটি কারণে অথবা বিভিন্ন কারণে ভুগে থাকেন। এটি খুব সাধারণ কারণ, যেমন— অবসাদ, ক্লান্তি কিংবা দুশ্চিন্তার কারণে হতে পারে, আবার মারাত্মক সমস্যা যেমন মেনিনজাইটিস অথবা ব্রেইন টিউমারের কারণেও হতে পারে।

সাধারণ কথা : — মাথাব্যথা এমন একটি অবস্থা, যেখানে ব্যথা মাথাতেই হয়। — বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগী ব্যথার কথাই বলেন। — বেশিরভাগ মাথাব্যথা ক্ষতিকর নয়, চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। — কিছু মাথাব্যথা নির্দিষ্ট কিছু কারণে হয়ে থাকে।

মাথাব্যথার কারণ : দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ, অবসাদ, নিদ্রাহীনতা, কোষ্ঠকাঠিন্য, চোখে চাপ, ত্রুটিপূর্ণ দৃষ্টি, দাঁতের সমস্যা, সাইনাসের ইনফেকশন, জ্বর, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া কিংবা কমে যাওয়া, ঠান্ডা লাগা, চোখে দেখতে সমস্যা, পানিস্বল্পতা, আইসক্রিম, যৌনতা, বর্জ্র ধ্বনি, ক্যাফিন/ ড্রাগ প্রত্যাহার, মস্তিষ্ক সম্পর্কিত সমস্যা বা জটিলতা, যেমন- মাথায় আঘাত, টিউমার, অ্যানুরিজম, মেনিনজাইটিস, এনকেফালাইটিস ইত্যাদি।

মাথাব্যথার প্রকারভেদ : ১. ভাসুকলার হেডঅ্যাক (সচরাচর নারীদের বেশি হয়) : মাইগ্রেন, জ্বরজনিত মাথাব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি। * পেটে সমস্যা * মাথার একপাশে কিংবা দুই পাশে ব্যথা * দেখতে সমস্যা। ২. মাসকুলার হেডঅ্যাক : চাপজনিত মাথাব্যথা : * মুখ কিংবা ঘাড়ের মাংসপেশি শুষ্ক হয়ে যাওয়া। * ব্যথা কপালের দিকে আসা। ৩. সার্ভাহকোজেনিক হেডঅ্যাক : স্পনডিলাইটিস ৪. প্রদাহের কারণে মাথাব্যথা : সাইনোসাইটিস

চিকিৎসা : — যদি আপনার অতিরিক্ত কাজের কারণে কিংবা চাপের কারণে মাথাব্যথা হয়, তা হলে সচরাচর ব্যবহূত ব্যথানাশক ওষুধ নিতে পারেন। যেমন : এসপিরিন বা প্যারাসিটামল গ্রহণ করলে ব্যথা কমবে। এসপিরিন বা ডিসপিরিন একটি বা দুটি ট্যাবলেট দুধ বা খাবারের সঙ্গে গ্রহণ করতে পারেন। কখনোই শিশুদের এসপিরিন দেবেন না। শিশুদের ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল সিরাপ দেবেন। টিনএজারদেরও এসপিরিন দেবেন না, যদি সে ফ্লু ধরনের উপসর্গ, ভাইরাসজনিত ইনফেকশন কিংবা চিকেন পক্সে ভুগে থাকে। পরবর্তী নির্দেশনার জন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করবেন। — যদি আপনার মাথাব্যথা স্থায়ীভাবে থেকে যায়, তাহলে মাথাব্যথার কারণ খুঁজে বের করুন। এ থেকে কিছু পরীক্ষা করতে হবে। — যত্রতত্র ব্যথানাশক ওষুধ খেলে আপনার কিডনি ও পাকস্থলী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। — টেনশন হেডঅ্যাকের ক্ষেত্রে আপনার শরীরের তাপমাত্রা কমালে মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে পারেন। — শিশুদের ক্ষেত্রে শিশুকে অন্ধকার, শান্ত রুমে শোয়াবেন। তাকে প্রয়োজনে প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রফেন দেওয়া যেতে পারে। তার কপালে বা চোখের ওপর ঠান্ডা বা ভেজা কাপড় রাখবেন।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন : যদি মাথাব্যথার সঙ্গে নিচের কোনো উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন— — কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথা — ফুসফুসে বা গলার ইনফেকশন হলে — ঘাড় শক্ত হলে — জ্বর ও র্যাশ থাকলে — মানসিক দ্বিধাগ্রস্ততা — খিঁচুনি  — চোখে দেখতে সমস্যা — প্যারালাইসিস — দুর্বলতা — ভারসাম্যহীনতা —শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া কিংবা কথা বলতে কষ্ট হলে — চোখ লাল হলে — অসাড়তা কিংবা ঝিনঝিন অনুভূতি — মাথায় আঘাতের পর মাথাব্যথা —যদি আপনার বয়স ৫০-এর বেশি হয় কিংবা অস্বাভাবিক ধরনের মাথাব্যথায় ভোগেন।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, অর্থোপেডিকস ও ট্রমা বিভাগ

ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads