• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
ধূলিদূষণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বৃদ্ধ ও শিশুরা

ছবি : সংগৃহীত

স্বাস্থ্য

ধূলিদূষণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বৃদ্ধ ও শিশুরা

  • প্রকাশিত ০৩ জানুয়ারি ২০১৯

আমি মনে করি এবং সবসময় বলে এসেছি, ওষুধ দিয়ে বহু রোগ সারানো যায় না বা যাবে না। মানুষকেও পুরোপুরি সতর্ক করা যাবে না, কর্তৃপক্ষও যথাসময়ে সতর্ক হবে না, যতই মুখে বা কাগজে-কলমে লেখা হোক না কেন। অনেক রোগের এখনো কোনো ওষুধ আবিষ্কার হয়নি এবং অনেক রোগের জন্য কোনো ওষুধের দরকার হয় না। ওষুধ দিয়ে মহামারী ঠেকানোর পথও সম্ভবত কার্যকর হবে না। তবে আমি জোর দিয়ে বলতে পারি, সব ধরনের ফ্লু বা রোগের বিরুদ্ধে জয়লাভের জন্য আমাদের পরিবেশ সংরক্ষণ করতে হবে এবং শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। এ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে যদি আমরা ব্যায়াম করি, সুষম খাবার খাই, পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করি, সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকি, পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিই, নিরুপদ্রব ঘুম নিশ্চিত করি, মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাই, চিনিসমৃদ্ধ খাবার কম খাই এবং অকার্যকর ভ্যাকসিন ও হাসপাতাল বর্জন করে চলি। আমরা সমাজ বা রাষ্ট্রীয় জীবনে যেসব সমস্যার মুখোমুখি হই, তার মূল কারণ মানুষ। আমরা নিজেরাই নিজেদের সমস্যা সৃষ্টি করি। আমরা নিজেরাই নিজেদের কারণে অসংখ্য রোগে ভুগি। আমরা যদি প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতাম, একটু সচেতন ও সহনশীল হতাম, একটু বিবেক-বুদ্ধি প্রয়োগ করতাম, স্বার্থপর না হতাম তাহলে আমার মনে হয় আমাদের এত সমস্যা থাকত না। সমস্যা থাকলেও সহজ হোক, কঠিন হোক, উত্তরণের কোনো না কোনো পথ পাওয়া যেত। তখন অবশ্যই আমাদের অসুখ-বিসুখ কমে যেত এবং জীবনযাত্রার মান আরো অনেক উন্নত হতো।

ঢাকার পরিবেশ দূষণের কারণে মানুষ দিন দিন বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং মারা যাচ্ছে। অনেকেই হয়তো জানেন না, ঢাকার পরিবেশ দূষণের কারণে ভাইরাস ও জীবাণু সংক্রমণ ছাড়াও শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের ক্যানসার, ব্রংকাইটিস, হাঁপানির মতো অসংখ্য রোগ দেখা দিচ্ছে। শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় ভাইরাসসহ বিভিন্ন সংক্রামক রোগ ও ধূলিদূষণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তারা। পরিবেশ দূষণের কারণে অধিক হারে মানুষ অ্যাজমা ও নানা রকম অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এতে শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বেশি। পরিবেশ দূষণের ফলে সংক্রামক রোগের হার বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। মশাবাহিত চিকুনগুনিয়ায় ঢাকায় এখন হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। মশা শুধু চিকুনগুনিয়ার কারণ নয়, মশার কারণে ডেঙ্গু ও জিকা হয়। মশার কারণে হয় আরো একটি প্রাণঘাতী রোগ ম্যালেরিয়া। যে মশার কারণে চারটি ভয়ানক রোগের উৎপত্তি, সেই মশার উৎপত্তির কারণ কি কোনো না কোনোভাবে মানুষ নয়? উন্নত বিশ্বে এত মশা দেখা যায় না কেন? কারণ ওইসব দেশে প্রতিটি মানুষ সচেতন এবং পরিবেশ সংরক্ষণে সদা সচেষ্ট।

 

মুনীরউদ্দিন আহমদ

লেখক : অধ্যাপক, ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি ও

ফার্মাকোলজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

drmuniruddin@gmail.com

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads