• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
গর্ভাবস্থায় কাটিয়ে উঠুন বিষণ্নতা

গর্ভাবস্থায় কাটিয়ে উঠুন বিষণ্নতা

ছবি : সংগৃহীত

স্বাস্থ্য

গর্ভাবস্থায় কাটিয়ে উঠুন বিষণ্নতা

  • সৈয়দ ফয়জুল আল আমীন
  • প্রকাশিত ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

যে কোনো ব্যক্তির জন্য শারীরিক সুস্থতার সঙ্গে মানসিক সুস্থতা খুবই প্রয়োজনীয়। বিশেষ করে হবু মায়ের জন্য মানসিক সুস্থতার প্রয়োজন অনেক বেশি। গর্ভাবস্থায় বিষণ্নতা মাকে একরকম অসহায় অবস্থার মধ্যে ফেলে দেয়। বিষণ্নতা কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন ধরনের থেরাপি এবং চিকিৎসার পাশাপাশি প্রয়োজন নিজের ইচ্ছা ও প্রস্তুতি। বিষণ্নতা কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রতিদিনের কাজকর্ম, খাওয়াদাওয়া, জীবনপ্রণালি এমনকি চিন্তা-ভাবনায়ও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। এ সময় যত বেশি প্রফুল্ল থাকা যায় মায়ের জন্য তো বটেই, গর্ভস্থ শিশুর জন্যও মঙ্গলজনক। বিষণ্নতাকে তাই কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়। বরং এটি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা উচিত। বিষণ্নতা কাটিয়ে ওঠার তেমন কিছু বিষয় থাকল হবু মায়েদের জন্য। লিখেছেন সৈয়দ ফয়জুল আল আমীন

#   বিষণ্নতা যেন আপনাকে ছুঁতে না পারে, সেজন্য এসময় নিজের ভালো লাগার কাজগুলো বাড়িয়ে দিন। আরামদায়ক গোসল আর পরিচ্ছন্ন পোশাকে নিজেকে ছিমছাম রাখা, গান শোনা, ভালো বই পড়া, প্রার্থনা করা ইত্যাদি মনে প্রশান্তি এনে দেবে।

 

#   গর্ভাবস্থায় নানামুখী সমস্যা তৈরি হওয়া খুবই সাধারণ বিষয়। কিন্তু আমাদের সমাজে গর্ভকালীন নানা রকম সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে কথা বলার চর্চা খুবই কম। তাই অনেক মা-ই স্পর্শকাতর এ সময়টিতে নানা রকম সমস্যার মধ্যে দিয়ে গেলেও কারো সঙ্গে তা বলতে পারেন না, যার ফলে নিজে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং একপর্যায়ে তাকে বিষণ্নতা গ্রাস করে। এক্ষেত্রে কাছের কারো সঙ্গে যেমন- স্বামী, শাশুড়ি, মা, বোন, বন্ধু, প্রয়োজনে ডাক্তারের সঙ্গে যাবতীয় কথা শেয়ার করা যেতে পারে। এ ধরনের সাবলীল আলোচনা বিষণ্নতা ও উদ্বেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে।

     যেকোনো সঙ্কটময় মুহূর্তে কারো কাছে সাহায্য চাওয়া কোনো দুর্বলতা নয়, বরং এটি প্রয়োজনে সঠিক তথ্য পেতে ও সচেতন হতে সহায়তা করবে। এ সময় ছোটখাটো অসুবিধা হলেও তা চেপে রাখা ঠিক নয়।

#  গর্ভাবস্থায় বিষণ্নতা দেখা গেলে যত তাড়াতাড়ি পারা যায় চিকিৎসক কিংবা কনসালট্যান্টের সঙ্গে যোগাযোগ করা প্রয়োজন। তিনি বিষণ্নতার মাত্রা জেনে করণীয় সম্পর্কে মাকে যথাযথ পরামর্শ দেবেন। এই সমস্যায় ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই, কেননা এটি অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয় এবং এ সমস্যা নিজ ইচ্ছায় সহজেই কাটিয়ে ওঠা যায়।

 

#   গর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শানুযায়ী হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করা যেতে পারে। হালকা যোগব্যায়াম শরীরে শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং মন ভালো করার ডোপামাইন হরমোনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে- যা ডিপ্রেশন কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করবে। একটানা বসে না থেকে পরিবারের ছোটখাটো দায়িত্বগুলো নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন, এতে করে মন এক জায়গায় কেন্দ্রীভূত হবে না এবং নানা রকম বাজে চিন্তা থেকে মুক্ত থাকা যাবে।

 

#   বিষণ্নতা বা ডিপ্রেশন কমানোর জন্য পর্যাপ্ত ঘুম মহৌষধের মতো কাজ করে। গর্ভাবস্থায় ঘুমের সমস্যা হওয়া খুবই স্বাভাবিক। তাই, প্রথমেই ঘুম সমস্যার সমাধান করতে হবে। দৈনন্দিন জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে নিদ্রাহীনতা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। প্রতিদিন ঘুমোতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে এবং শোবার ঘরে টিভি, কম্পিউটার, মোবাইল- এগুলোর ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে।

 

#   গর্ভাবস্থায় একজন নারীর সবচেয়ে ভালো আর কাছের মানুষের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় তার জীবনসঙ্গী। তাই গর্ভাবস্থায় তাকে সুস্থ ও খুশি রাখতে আপনাকে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাচেতনার বিকাশ ঘটাতে হবে। তাকে হাসিখুশি রাখতে কোথাও বেড়াতে নিয়ে যেতে পারেন অথবা পরিবারে যে নতুন সদস্য আসছে তাকে নিয়ে আগামী দিনের পরিকল্পনা করতে পারেন।

     এত কিছুর ভিড়ে দেখবেন সে আর বিষণ্ন হওয়ার সুযোগই পাচ্ছে না।

 

#    হবু মা যদি কর্মজীবী হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে এ সময় কর্মক্ষেত্রে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং সহকর্মীদের সঙ্গে আপনার কাজের বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করুন। কেননা গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত কাজ মানসিক চাপের মাত্রা বাড়াতে পারে। হালকা কাজ এবং প্রয়োজনে যেন বিশ্রাম নেওয়া যায় সে বিষয়ে আলোচনাসাপেক্ষে ঠিক করে নিন।

 

#   হবু মাকে বিষণ্নতা থেকে দূরে রাখতে পরিবারের মানুষগুলোর কিছু দায়িত্ব পালন করা জরুরি। এ সময় বাড়ির পরিবেশ শান্ত রাখা এবং মাকে যথাসম্ভব তেমন সব আলোচনা থেকে দূূরে রাখা, যা তার মানসিক অস্থিরতা ও বিষণ্নতা বাড়িয়ে দেবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads