• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

স্বাস্থ্য

মলত্যাগের সমস্যায় সাবধান হোন

  • অধ্যাপক ডা. এসএমএ এরফান
  • প্রকাশিত ১৮ এপ্রিল ২০১৯

আসিফ সাহেব মধ্যবয়সী। একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করেন। অফিসের দায়িত্বপূর্ণ কাজে সবসময় ব্যস্ত থাকতে হয়। শত ব্যস্ততার মাঝেও স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতন। সবকিছু নিয়মিত চেকআপ করান। প্রেসার, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল সব ঠিক আছে। নিয়মিত সকালে হাঁটাহাঁটি করেন। কোনো দিকে তেমন সমস্যা নেই। ইদানীং পায়খানার ব্যাপারে একটু সমস্যা হচ্ছে। পায়খানা এখন আর আগের মতো নয়। আগে প্রতিদিন সকালে নিয়মিত কোষ্ঠ পরিষ্কার হতো। এখন তা কখনো সকালে কখনো বিকালে কখনো একাধিকবার হচ্ছে। আসিফ সাহেব তেমন পাত্তা দেননি। হয়তো খাওয়া-দাওয়ায় কোনো সমস্যা হয়েছে, সেজন্য এরকম সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু সমস্যাটি তার ক্রমান্বয়ে বাড়তে লাগল। তিনি কার সঙ্গে আলাপ করবেন। এ বিষয়ে আলাপ করতে সঙ্কোচ বোধ হয়। তিনি পেঁপে ইত্যাদি খেয়ে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করেন। এভাবে অনেক মাস চলে যায়। শেষে তিনি তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকের কাছে বিষয়টি খুলে বলেন। তিনি পেট টিপেটুপে পরীক্ষা করে বললেন সব টিক আছে। আপনার মনে হয় খাবারে গন্ডগোল আছে। তবু আপনার সন্দেহ হলে একজন বিশেষজ্ঞ কোলোরেকটাল সার্জনের কাছে যান। এরপর যাব যাব করেও আসিফ সাহেব বেশ কিছুদিন পার করে দেন। তারপর হঠাৎ একদিন তার পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়। পেট একটু ফেঁপে যায়। তড়িঘড়ি করে তিনি একজন সার্জনের শরণাপন্ন হন। সার্জন তাকে পরীক্ষা করেন এবং পাররেক্টাল অর্থাৎ পায়ুপথের পরীক্ষা করেই তার মুখ কালো হয়ে যায়। কারণ সেখানে একটি টিউমার পায়খানার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। সঙ্গে পরীক্ষা করে দেখা গেল সেটি রেক্টাল ক্যানসার।

রেক্টাল ক্যানসার বর্তমানে বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের মধ্যে যাদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তিত হয়ে গেছে। যারা ফাস্টফুড, রিফাইন্ড ফুড বেশি খাচ্ছেন, শাকসবজি কম খাচ্ছেন তাদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা আসিফ সাহেবের মতো বাড়ছে।

প্রথম কথা হচ্ছে, রেক্টাল ও কোলন ক্যানসারের লক্ষণ কী? এ ক্যানসার হওয়ার অনেকদিন পর্যন্ত কোনো লক্ষণ দেখা নাও দিতে পারে। তারপরও রোগের প্রথম দিকে রোগী খেয়াল করলে যেসব বিষয় বুঝতে পারবেন সেগুলো হচ্ছে- পায়খানার অভ্যাস পরিবর্তিত হওয়া অর্থাৎ আগে যদি দিনে একবার কোষ্ঠ পরিষ্কার হতো, এখন তা কয়েকবার হওয়া। মলের প্রকৃতি পরিবর্তিত হওয়া অর্থাৎ আগে স্বাভাবিক মল হলে এখন তা আগের থেকে কঠিন অথবা নরম হওয়া, কালো পায়খানা হওয়া, সকাল বেলা পাতলা পায়খানা হওয়া, মিউকাস যাওয়া, একবার টয়লেটে যাওয়ার পর মনে হয় পায়খানা রয়ে গেছে আবার হবে ইত্যাদি। আর হতে পারে ওজন কমে যাওয়া, পেট ব্যথা করা ইত্যাদি। একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, প্রাথমিক পর্যায়ে রেক্টাল ক্যানসার নির্নয় করা গেলে তার চমৎকার চিকিৎসা আছে বাংলাদেশেও। কিন্তু রোগ অগ্রসর হয়ে গেলে এর চিকিৎসা পৃথিবীর কোথাও নেই। তাই এ-জাতীয় লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ সার্জন বিশেষত কোলোরেক্টাল সার্জনের শরণাপন্ন হওয়া অত্যন্ত জরুরি।

 

বাংলাদেশের পাইওনিয়ার কোলোরেক্টাল সার্জন

জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হসপিটাল

৫৫, সাতমসজিদ রোড, জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড, ধানমন্ডি, ঢাকা

মোবাইল : ০১৬২৬-৫৫৫৫১১, ০১৮৬৫-৫৫৫৫১১

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads