• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
স্বাস্থ্য পরীক্ষায় রোজা নষ্ট হয় না

ছবি : সংগৃহীত

স্বাস্থ্য

স্বাস্থ্য পরীক্ষায় রোজা নষ্ট হয় না

  • প্রকাশিত ১৬ মে ২০১৯

ডা. এবিএম আবদুল্লাহ

 

চিকিৎসকরা আলেমদের সঙ্গে আলাচনা করে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, রোজা থাকা অবস্থায় বেশ কয়েকটি পন্থায় ওষুধ সেবন ও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলে রোজা নষ্ট হবে না। রোজা রাখা অবস্থায় চোখ, কান ও নাকে ড্রপ নেওয়া যাবে। এছাড়া হূদরোগীর বেলায় বুকে ব্যথা হলে নাইট্রোগ্লিসারিন স্প্রে বা ট্যাবলেট জিহ্বার নিচে নিতে পারবেন। মহিলা রোগীর তলপেটে পরীক্ষার জন্য যোনিদ্বার দিয়ে চিকিৎসক বা নার্স হাতের আঙুল অথবা কোনো যন্ত্র প্রবেশ করালে রোজা ভাঙবে না। এমনকি চিকিৎসার জন্য যোনিপথে পেসারি বা কোনো ওষুধ ব্যবহার করা যাবে। মূত্রথলি পরীক্ষা বা এক্স-রে করার জন্য রোগীর প্রস্রাবের দ্বার দিয়ে ক্যাথেটার অথবা অন্য কোনো যন্ত্র প্রবেশ করালে অথবা রেডিও-ওপেক ডাই প্রবেশ করালে রোজা ভঙ্গ হবে না। দাঁত তোলা, ড্রিলিং করা বা মেসওয়াক বা ব্রাশ দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করলে রোজা ভঙ্গ হবে না। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন এগুলো করার সময় পাকস্থলীতে থুতু বা টুথপেস্ট প্রবেশ না করে। রোগীর চামড়া, মাংস, অস্থিসন্ধি ও শিরায় ইনজেকশন দেওয়া যাবে। কিন্তু স্যালাইন, ডেক্সট্রোজ প্রোটিনজাতীয় জিনিস ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যকে রক্ত দিতে পারবেন আবার জরুরি প্রয়োজনে নিজেও নিতে পারবেন। কোনো রোগী অক্সিজেন অথবা অজ্ঞানকারী গ্যাস (অ্যানেসথেসিয়া) নিলে রোজা ভঙ্গ হবে না। ত্বকের মাধ্যমে শরীরের ভেতরে যায় এমন মলম, ক্রিম, অয়েন্টমেন্ট ব্যবহার করা যাবে। পরীক্ষার জন্য রোগীর শরীর থেকে রক্ত নেওয়া যাবে। হূদরোগে আক্রান্ত রোগী হার্টের এনজিওগ্রাম এবং কার্ডিয়াক ক্যাথেটার করা যাবে। রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বা চিকিৎসার অংশ হিসেবে এন্ডোস্কপি করলে রোজা ভাঙবে না। মুখ পরিষ্কারের জন্য মাউথ ওয়াশ বা গড়গড়া বা মুখে স্প্রে জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যাবে, তবে যেন পাকস্থলীতে কোনো কিছু না যায়।

জরায়ু পরীক্ষার জন্য শরীরে হিস্টারোস্কপি করা যাবে, এমনকি জরায়ুুতে কোনো যন্ত্রপাতি বা অন্য কিছু পরীক্ষার জন্য প্রবেশ করালে রোজায় কোনো সমস্যা হবে না। লিভার বায়োপসি অথবা অন্য কোনো অঙ্গের বায়োপসি করলে রোজা নষ্ট হবে না। অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ অনুমোদন করেন, নাকে স্প্রে বা হাঁপানি রোগীর বেলায় ইনহেলার জাতীয় কিছু নিলে কোনো সমস্যা নেই। রোগীর পায়ুপথে ইনজেকশন অথবা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আঙুল বা অন্য কোনো যন্ত্র প্রবেশ করালে রোজা ভাঙবে না। জরুরি কোনো অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলে রোজা রাখা অবস্থায় করা যাবে। কিডনি অকেজো হলে রোগীর ডায়ালাইসিস করলে রোজা ভাঙবে না। অতএব দ্বিধাদ্বন্দ্বে না ভুগে শারীরিক সুস্থতায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি রোজা রাখুন।

লেখক : মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, একুশে পদকপ্রাপ্ত চিকিৎসক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads