• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
বিস্ফোরণের পথে অসংক্রামক রোগ

প্রতীকী ছবি

স্বাস্থ্য

বিস্ফোরণের পথে অসংক্রামক রোগ

  • এস এম মুকুল
  • প্রকাশিত ২৪ অক্টোবর ২০১৯

অসংক্রামক রোগ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেই এ ধরনের রোগের দ্রুত বিস্তার ঘটছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে অনেক আগে থেকেই সংক্রামক ব্যাধির প্রকোপ রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে ক্যানসার, হূদরোগ, দীর্ঘমেয়াদি ফুসফুসের রোগ ও ডায়াবেটিসের মতো অসংক্রামক রোগ মহামারী অনুপাতে বাড়লেও জীবনযাপন থেকে সৃষ্ট এসব রোগ নিয়ন্ত্রণে তেমন প্রস্তুতি নেই। ফলে দেখা গেছে, অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশের তরুণরাই অসংক্রামক রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। অসংক্রামক ব্যাধির মধ্যে বিশেষ করে ডায়াবেটিস, হূদরোগ, ক্যানসার, কিডনি রোগের বিষয়ে সচেতন হওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। এ প্রসঙ্গে দেশের খ্যাতনামা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী বলেন, আমাদের অসচেতন জীবনযাপনের ধারা পরিবর্তন করতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করা, লবণ, চিনি এবং অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত, ভেজাল ও বিষাক্ত রাসায়নিকযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যসম্মত জীবনপ্রণালী মেনে চলা প্রয়োজন। ওজন ও স্থূলতা নিয়ন্ত্রণে রাখা গেলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যানসার ও কিডনি রোগের মতো অসংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ করা এবং এসব কারণে মৃত্যু কমানো সম্ভব হবে। তবে এ ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও স্থূলতার প্রবণতাসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগপ্রতিরোধে পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি চালু করা প্রয়োজন। তেমনি শিশুদের দিকে আরো গুরুত্বের সঙ্গে নজর রাখা উচিত বলে এই বিশেষজ্ঞ মত প্রকাশ করেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশে শিশু-কিশোরদের মধ্যেও সব ধরনের অসংক্রামক রোগের প্রকোপ শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এখনোই উপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।

বাড়ছে অসংক্রামক রোগের হার

মৃত্যুর জন্য বিশ্বে যে মোট দশটি কারণ রয়েছে তার মধ্যে সাতটিই নন- কমিউনিকেবল ডিজিজ (এনসিডি) বা অসংক্রামক রোগের কারণে হচ্ছে। বাংলাদেশে সংক্রামক রোগের চাইতে অসংক্রামক রোগের বিস্তার বাড়ছে। ক্যানসার, হূদরোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের কারণে আগের যেকোনো সময়ের চাইতে মানুষ বেশি অসুস্থ হচ্ছে এবং একই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুহারও। জানা গেছে ২০১২ সালে এই মৃত্যুর হার ছিল ৫২ ভাগ, ২০১৪ সালে ৫৯ ভাগ এবং ২০১৭ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৬৭ ভাগ। এনসিডির রোগগুলোর মধ্যে হূদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, সিওপিডি ও মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতির জন্য তামাক, অ্যালকোহল, অস্বাস্থ্যকর খাবার, বায়ুদূষণ ও শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা দায়ী বলা হচ্ছে। অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়ে তার মধ্যে তামাক, অ্যালকোহল, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, বায়ুদূষণ ও কায়িক শ্রমের অভাব উল্লেখযোগ্য।  বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে কোলেস্টেরেলের বৃদ্ধির হার ২৮ দশমিক ৪ ভাগ, উচ্চ রক্তচাপ ২৬ দশমিক ২ ভাগ, ক্যানসারে আক্রান্ত ১১ ভাগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি) ১০ ভাগ এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্তের হার ৮.৪ ভাগ।

লাইফস্টাইল এবং খাদ্যাভ্যাস দায়ী

দেশে অসংক্রামক রোগী বাড়ছে! অসংক্রামক রোগ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা বলেন, আমাদের কায়িক পরিশ্রম কম। জীবনযাপনে নানামুখী চাপ বেড়ে গেছে এখন। আমরা পরিশ্রম করি কম। আমাদের লাইফস্টাইল এবং খাদ্যাভ্যাস এই অসংক্রামক রোগ বেড়ে যাওয়ার জন্য প্রধান দায়ী। খাদ্যাভ্যাস আগে বাংলাদেশে যে রকম ছিল তার থেকে অনেক বদলে গিয়েছে এখন। বর্তমান সময়ে ফার্স্টফুড, রিচফুডসহ রাস্তার ধারে পোড়া তেলের খাবার আমাদের শরীরের যে ক্ষতি করে সেটাই এই রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার প্রমাণ। এর আরো কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা দায়ী করছেন খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান, প্রক্রিয়াজাত খাবারের প্রসার, বায়ু এবং ধুলাদূষণ, মানসিক চাপ এবং সড়ক দুর্ঘটনার প্রকোপকে। প্রতিবেদনে ক্যানসার, হূদরোগ, ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ, স্থায়ী বক্ষব্যাধি, শ্রবণ প্রতিবন্ধিতা, স্নায়ুবিক রোগগুলোকে অসংক্রামক রোগ বলা হয়েছে। এ থেকে মুক্তি পেতে খাদ্যাভ্যাস এবং লাইফস্টাইল অবশ্যই বদলাতে হবে। তা না হলে দিন দিন অসংক্রামক রোগীর সংখ্যা বেড়েই যাবে।

রোগ নিরূপণে তথ্য সংগ্রহ

অসংক্রামক রোগের সম্পর্ক নিরূপণে রাজধানীর মিরপুরের বাউনিয়াবাঁধ এলাকায় ২০ হাজার বস্তিবাসীর তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু করেছে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)। জানা গেছে, চলতি বছরসহ তিন বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০২১ সালের মধ্যে প্রাথমিকভাবে তথ্য সংগ্রহের এ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। যেসব বস্তিবাসীর তথ্য সংগ্রহ করা হবে ভবিষ্যতেও তাদের স্বাস্থ্যগত তথ্যের বিষয়ে ফলোআপ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। অসংক্রামক রোগের মধ্যে রয়েছে ক্যানসার, হূদরোগ, ডায়াবেটিস, বক্ষব্যাধিসংক্রান্ত সিওপিডি রোগ ইত্যাদি।

রোগ নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম

যুক্তরাজ্যোর বিখ্যাত ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটিসহ দেশি-বিদেশি ৭টি প্রতিষ্ঠান ‘ক্যামব্রিজ প্রোগ্রাম টু অ্যাসিস্ট বাংলাদেশ ইন লাইফস্টাইল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিস্ক রিডাকশন (ক্যাপাবল-ঈঅচঅইখঊ) শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে বলা হয় দেশে প্রতিনিয়ত বাড়ছে অসংক্রামক রোগ। বর্তমানে দেশের ৬২ ভাগ মানুষ কোনো না কোনোভাবে অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত। মোট আক্রান্তদের মধ্যে ৫৭ ভাগই শহুরে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশি-বিদেশি ৭টি প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগ ও সহায়তায় শুরু হতে যাচ্ছে পরিবেশের সঙ্গে অসংক্রামক রোগের সম্পর্ক নিরূপণে গবেষণা কার্যক্রম। শহর, গ্রাম ছাড়াও বস্তিবাসীদের নিয়ে এ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হবে। গবেষণার মাধ্যমে শহরের বস্তিবাসীদের মাঝে পরিবেশ সম্পর্কিত অসংক্রামক রোগের সম্পর্ক রয়েছে কি না-সেটি নিরূপণ করা হবে। অসংক্রামক রোগের মধ্যে রয়েছে- ডায়াবেটিস, হূদরোগ, ক্যানসার ইত্যাদি। এ গবেষণা কার্যক্রমটি ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডন, যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব এবার ডিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ইনস্টিটিউট অব ইপিডেমিওলজি ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ (আইইডিসিআর), আইসিডিডিআরবি এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের যৌথ উদ্যোগ ও পারস্পরিক সহায়তায় পরিচালিত হবে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবদুল মালিক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান প্রমুখ।

নিয়ন্ত্রণ বড় চ্যালেঞ্জ

বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে অসুস্থ মানুষদের মধ্যে কমবেশি ৬১ শতাংশই অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত। এক হিসাবে দেখা গেছে, ২০১৭ সালে সব রোগে আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু সংখ্যার শতকরা ৬৭ ভাগের জন্য দায়ী ছিল অসংক্রামক রোগ। যা ২০১১ সালে ছিল ৫২ শতাংশ। সহজ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, অসংক্রাসক রোগের প্রকোপ আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে। তথ্য-উপাত্ত বলছে, দেশের ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের ৯৭ শতাংশের কমপক্ষে একটি অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি আছে। বিশ্লেষণ তথ্য অনুযায়ী, এসব রোগের চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে অনেক অসংক্রামক রোগে আক্রান্তকে চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করতে হয়। গত সাত বছরে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর হার বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশের বেশি। যার ফলে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে গড় আয়ু বৃদ্ধি, মাতৃমৃত্যু হ্রাসসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি লাভ হলেও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ। যদিও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থ জীবনযাপনে সচেতন করার পাশাপাশি প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও চিকিৎসার মধ্যে দিয়ে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুহার ২০৩০ সালের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। ২০১৭ সালের বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ প্রতিবেদনে অসংক্রামক রোগপ্রতিরোধে সরকারের কোনো রকম প্রস্তুতি নেই বলে সতর্ক করা হয়েছে। আর অসংক্রামক রোগ ‘বিস্ফোরণের’ পর্যায়ে আছে উল্লেখ করে ‘দ্রুত কাজ করতে হবে’ বলে তাগিদ দিয়েছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা।

অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ বড় চ্যালেঞ্জ

অসংক্রামক রোগপ্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগের ওপর জোর দিয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে এখন সংক্রামক রোগের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে চলে এলেও বেড়েছে অসংক্রামক রোগের প্রকোপ। সচেতনতা বৃদ্ধি এবং রোগটি প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে অসংক্রামক রোগপ্রতিরোধ করা সম্ভব। এক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারিভাবেও নানা কর্মসূচি গ্রহণের পরামর্শ দেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের মধ্যে দেশে প্রায় ২ কোটি লোক কোনো না কোনো ধরনের কিডনি রোগে ভুগছে। দেশে প্রতিবছর ২৫ হাজার লোকের কিডনি বিভিন্ন কারণে হঠাৎ করে অকেজো হয়ে যায়। প্রতিবছর কিডনিজনিত রোগে প্রায় ৪০ হাজার লোক মারা যায়। বাংলাদেশে ডায়াবেটিস এখন মহামারী হয়ে উঠছে। দেশে প্রায় ৭১ লাখ, বছরে বাড়ছে আরো ১ লাখ রোগী। শুধু ডায়াবেটিসের কারণে বিশ্বে প্রতি সেকেন্ডে একজনের মৃত্যু হয়।  আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ২৫ শতাংশ কমাতে হবে। অসংক্রামক রোগের ব্যাপকতা ও গুরুত্বের ওপর নীতিনির্ধারক এবং পেশাজীবীসহ সর্বস্তরের মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি করা দরকার। রোগপ্রতিরোধে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে বিভিন্ন সেক্টরকে কেন্দ্র করে একটি সমন্বিত পদ্ধতির প্রবর্তন করতে হবে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় জনশক্তি ও কাঠামোগত উন্নয়ন, ঝুঁকির কারণগুলো সংশোধন ও নিয়ন্ত্রণ, রোগ শনাক্তকরণ এবং চিকিৎসার মাধ্যমে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সব পর্যায় শক্তিশালী করতে হবে।

সচেতনতায় দরকার সমন্বিত উদ্যোগ

‘এনসিডি চ্যালেঞ্জ হেলথ ইন অল পলিসি হোল সোসাইটি অ্যাপ্রোচ’ শীর্ষক এক আলোচনায় উপস্থাপিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, অসংক্রামক রোগের বার্ষিক খরচের বার্ষিক খরচ প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। বিশিষ্ট চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্যবিদদের মতে, অসংক্রামক রোগ মোকাবেলায় চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধে বেশি জোর দেওয়া দরকার। জনসচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার। এক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। কারণ দেশে অসংক্রামক রোগের প্রকোপ এবং এসব রোগে মৃত্যু অনেক বেশি। দীর্ঘস্থায়ী এসব রোগের চিকিৎসা ব্যয় অনেক।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads