বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে প্রতিনিয়তই মৃত্যুর পাশাপাশি বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশেও। দেশে এখন পর্যন্ত দশজন আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বন্ধ করা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সিনেমা হল, ও সব ধরনের খেলা। এ কারণে সারাদেশে চলছে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্ক।
কিছুদিন আগেও মানুষের জ্বর, ঠান্ডা লাগা, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, মাথা যন্ত্রণা করলে সাধারণ ফ্লুর কথাই ভাবা হতো। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে। এখন এসব উপসর্গ দেখা দিলেই করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) থাবা বসাল কিনা তা নিয়ে শুরু হচ্ছে নতুন চিন্তা।
এই দুই ধরনের জ্বরের উপসর্গে এতটাই মিল যে রোগ নির্ণয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। অনেক সময় আবার অসুখ ধরা পড়তেও দেরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে আগে থেকেই সচেতন থাকা জরুরি।
রোগ নির্ণয়ের সুবিধার জন্যই জেনে রাখা ভালো, এই দুই জ্বরের ধরন কেমন। আনন্দবাজার পত্রিকা অবলম্বনে জেনে নিন সাধারণ ফ্লু ও করোনাভাইরাসের মধ্যে কিছু মিল ও অমিল-
মিল
১- দুই ধরনের ফ্লু-ই ভাইরাসবাহিত।
২- দুই রোগই সংক্রমণজনিত।
৩- মানবশরীর থেকেই ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম।
৪- দুই ধরনের ফ্লু-ই সময়মতো সচেতন না হলে বা বাড়াবাড়ি আকার ধারণ করলে নিউমোনিয়ার দিকে বাঁক নিতে পারে।
অমিল
১- সাধারণ ফ্লু ও করোনা দুই-ই ভাইরাসজনিত অসুখ হলেও দুই রোগের ভাইরাস সমগোত্রীয় নয়। সাধারণ ফ্লু ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের প্রকোপে হয়, আর কোভিড-১৯ হয় করোনা গ্রুপের ভাইরাসের কারণে।
২- করোনাভাইরাস ছড়ায়ও অনেক দ্রুত। তুলনায় ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস ছড়ায় অনেক ধীরে।
৩- সাধারণ ফ্লুর বেলায় ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার ২-৩ দিনের মধ্যে অসুখ দেখা দেয়। করোনাভাইরাসের বেলায় ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার ৭-১৪ দিনের মধ্যে অসুখ দেখা দেয়।
৪- সাধারণ ফ্লুর বেলায় জ্বর ১০৩-১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠে যেতে পারে, তবে ওষুধের কাজ শুরু হলে তা নামতেও শুরু করে। করোনাভাইরাসের বেলায় জ্বর প্রবল হলেও নামতে চায় না সহজে। ওষুধও কাজ করে না।
৫- সাধারণ ফ্লু বোঝার জন্য কোনো আলাদা করে পরীক্ষার দরকার পড়ে না। কিন্তু করোনাভাইরাস কি না জানতে গেলে পলিমারেস চেন রিঅ্যাকশন বা পিসিআর পরীক্ষা করা হয়।
৬- সাধারণ ফ্লুর জন্য প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন রয়েছে। কিন্তু করোনাভাইরাস রোধে তেমন কোনো ভ্যাকসিনের সন্ধান এখনো পাননি গবেষকরা।
