• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

স্বাস্থ্য

করোনা প্রতিরোধে মুখ ও দাঁতের যত্ন

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১৮ মে ২০২০

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের প্রথম ও প্রধান আশ্রয়স্থল আমাদের মুখের ভেতরভাগ। এজন্যই সাধারণত কনুই দিয়ে মুখ চেপে হাঁচি-কাশির অভ্যাস আয়ত্ত করা কিংবা কথা বলার সময় দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

করোনা মহামারির আগে বেশিরভাগ মানুষই এসব বিষয়ে তেমন গুরুত্ব না দিলেও, এখন সকল ধরণের স্বাস্থবিধি মেনে চলাই কোভিড-১৯ প্রতিরোধের অন্যতম উপায়।

চিকিৎসকরা জানান, ‘মুখের ভেতরে থাকা লালাগ্রন্থিতে কোভিড-১৯ ভাইরাস চুপচাপ বসে থাকে। সেই সময়টাতে আক্রান্তের কোনোরকম উপসর্গই থাকে না, অর্থাৎ অ্যাসিম্পটোম্যাটিক অবস্থায় থাকে। এ অবস্থায় হাঁচি, কাশি, কথা বলার সময় ড্রপলেটের মাধ্যমে অসুখ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি খুব বেশি।’

ডেন্টাল সার্জন শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, ‘ওরাল হাইজিন অর্থাৎ মুখের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখলে কোভিড-১৯ ভাইরাসকে কিছুটা প্রতিহত করা যায়। লকডাউন চলাকালীন এবং পরবর্তী পর্যায়ে নিতান্ত দরকার না হলে ডেন্টাল চেম্বারে যাওয়া ঠিক নয়। অনেক সময় উপসর্গহীন রোগীর কাছ থেকে চিকিৎসকের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।’

এজন্য কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে দন্তচিকিৎসকদের পিপিই পরে রোগী দেখা উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। চিকিৎসকদের অভিমত, অনেক সময় দাঁত বা চোয়ালের বিভিন্ন সমস্যায় অস্ত্রোপচারের দরকার হতে পারে। তবে চলমান পরিস্থিতিতে নিতান্ত দরকার হলে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করিয়ে তারপরই সার্জারি করা যেতে পারে।

দাঁত ও মুখের যত্ন নেয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের পরামর্শ:

১) নিয়ম করে দু'বার ব্রাশ করা উচিত। ১৫ দিন পর পর ব্রাশ বদলে নিতে পারলে ভালো হয়।

২) বাড়ির বাইরে গেলে ফেরার পর গরম জলে লবণ দিয়ে গার্গল করে নেয়া উচিত। এ ছাড়া দিনে ৩/৪ বার লবণ পানি দিয়ে কুলকুচি করলে ভালো হয়।

৩) দাঁতে কিছু আটকে গেলে ফ্লস দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।

৪) দিনে দু'বার মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করলে ভালো হয়।

৫) অনেক সময় করোনাভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ হিসেবে মুখের ভেতরে, জিভে বা ঠোঁটে আলসার হতে পারে। তবে মুখে আলসার মানেই কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ ভেবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।

৭) মুখে বা দাঁতে হাত কিংবা টুথপিক দিয়ে অযথা খোঁচাখুচি করবেন না।  

৮) দাঁত দিয়ে নখ কাটবেন না। শিশুদেরকেও এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে।

৯) চকলেট, চিপস, বেশি চিনি বা মিষ্টি দেয়া স্টিকি খাবার খাবেন না। পেয়ারা, লেবু, কলা, আপেল জাতীয় ফল খাওয়া বাড়ালে মুখগহ্বরের সুস্বাস্থ্য বজায় থাকবে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত শাকসব্জি ও ফাইবারযুক্ত খাবার খান। 

১০) যেকোনো খাবার খাওয়ার পর ভালো করে কুলকুচি করে নিন।

১১) মুখগহ্বরের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখুন এবং মুখে বা দাঁতে হাত দেয়া থেকে বিরত থাকুন।

১২) পান, খয়ের, তামাক, খাবেন না।

১৩) যেখানে সেখানে থুতু ফেলবেন না ।

১৪) ব্রাশ পরিষ্কার জায়গায় রাখুন। সবার ব্রাশ একসাথে না রেখে আলাদা আলাদা রাখুন। ব্রাশে ক্যাপ লাগিয়ে রাখতে পারলে ভালো হয়। দাঁত মাজার আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে ভুলবেন না।

১৫) খাবার আগে ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ও মুখ ধুয়ে নিতে হবে।

১৭) মাস্ক পরে বের হলে বাড়ি ফিরে সাবান দিয়ে অবশ্যই সেটি ধুয়ে নেবেন। ডিসপোসেবল মাস্ক হলে তা ফেলে দিতে হবে।

১৮) দাঁত বা মাড়িতে কোনো সমস্যা হলে টেলিফোনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads