• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
অস্কারে সেরা অভিনেত্রীরা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

হলিউড

অস্কারে সেরা অভিনেত্রীরা

  • প্রকাশিত ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

৯১তম একাডেমি অ্যাওয়ার্ডে সেরা অভিনেত্রী বিভাগে মনোনীত হয়েছেন পাঁচ তারকা। তারা হলেন অ্যালিতজা আপারেসিও (রোমা), গ্লেন ক্লোজ (দ্য ওয়াইফ), ওলিভিয়া কোলম্যান (দ্য ফেভারিট), লেডি গাগা (আ স্টার ইজ বর্ন), মেলিসা ম্যাককার্থি (ক্যান ইউ এভার ফরগিভ মি?)। বহু আকাঙ্ক্ষিত অস্কার মনোনয়নপ্রাপ্ত সেরা পাঁচ অভিনেত্রীর সাতসতেরো নিয়ে আমাদের আজকের প্রতিবেদন। প্রতিবেদনটি সাজিয়েছেন তাবাস্সুম তৈয়বা-

অ্যালিতজা আপারেসিও মার্টিনেজ : মেক্সিকান অভিনেত্রী অ্যালিতজা আপারেসিও মার্টিনেজ। তার অভিষেক ঘটে আলফুনসা কারুনস পরিচালিত ছবি ‘রোমা’তে ক্লিওর ভূমিকায় অভিনয় করে। তার অভিনয়ের ওপর প্রাতিষ্ঠানিক কোনো দক্ষতা বা ধারণাও ছিল না। অ্যালিতজা প্রাইমারি স্কুল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ছবিতে শুদ্ধভাবে কথা বলার জন্য ভাষাও আয়ত্ত করতে হয়েছে এ অভিনেত্রীকে। সালমা হায়েকের পর অ্যালিতজা আপারেসিও দ্বিতীয় মেক্সিকান অভিনেত্রী যিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে অস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। এ ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসেবে ‘শিকাগো ফিল্ম ক্রিটিক অ্যাসোসিয়েশন পুরস্কার’, ‘ক্রিটিক চয়েজ পুরস্কার’, ‘স্যাটেলাইট পুরস্কার’ পান। নবাগত একজন যার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান নেই সেই অভিনেত্রী একটি ছবিতে অভিনয় করে রাতারাতি পুরো বিশ্বকে হতবাক করেছেন। ছবিতে অ্যালিতজা আপারেসিও মেক্সিকান ডাক্তার পরিবারের গৃহকর্মীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।

গ্লেন ক্লোজ : গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়াডের্র ৭৬তম আসরে ‘দ্য ওয়াইফ’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছেন গ্লেন ক্লোজ। ১৯৪৭ সালের ১৯ মার্চ আমেরিকার কানেকটিকাটের গ্রিনউইচে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ক্লোজের জন্মের সাত বছর পর থেকে তার বাবা-মা ইন্টারন্যাশনাল মরাল অ্যান্ড স্পিরিচুয়াল মুভমেন্ট নামে একটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন পনের বছর। মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও দ্বিধা দূর করে মানসিক ভারসাম্য তৈরিতে এ সংগঠনটি কাজ করত। স্বাভাবিকভাবেই ক্লোজও এখান থেকে অনেক কিছুই নিজের জীবনে ধারণ করেছেন। ২২ বছর বয়সে ক্লোজ সংগঠনটি ছেড়ে নিজের মতো ক্যারিয়ার গঠনে কাজ শুরু করেন। প্রথম দিকে তিনি যাত্রাপালা করতেন। ১৯৭৪ সালে ‘লাভ ফর লাভ’ নামে যাত্রার মাধ্যমে অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু করেন গ্লেন ক্লোজ। সত্তর ও আশির দশকে নিউইয়র্কে জনপ্রিয় স্টেজ পারফরমার ছিলেন তিনি। এরপর ৪০ বছর ধরে চলচ্চিত্রে কাজ করছেন। হলিউডের জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনার সঙ্গেও যুক্ত। তার অভিনীত ‘দ্য ওয়াইফ’ মুক্তির পর ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন তিনি। এ ছবিতে বৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রীর খোলামেলা যৌনতার বিষয়টিও বেশ আলোচিত। একবার কানাডার টরন্টোয় এ ছবির প্রদর্শনী শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ক্লোজ বলেছিলেন, “সমাজে যারা ‘খারাপ’ বলে বিবেচিত এমন একটি নারীর চরিত্রে আমি অভিনয় করেছি। এ ঘরানার নারীরা মানসিকভাবে বেশ দৃঢ় হয়, এ বিষয়টি আমাকে আকর্ষণ করে। তা ছাড়া আমি কমর্জীবনে এ সমস্যার মুখোমুখিও হয়েছি।” তিনি আরো বলেন, ‘আমার মনে হয়, মানুষ জানে না তারা ইচ্ছা করলে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিজেদের যৌনতা ধরে রাখতে পারে।’ ক্যারিয়ারে অভিনয়ের জন্য তিনবার টনি অ্যাওয়ার্ড, তিনবার গোল্ডেন গ্লোব ও তিনবার প্রাইমটাইম এমি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ক্লোজ। এ ছাড়া অস্কারে ছয়বার মনোনয়ন পেয়েছেন। সে কারণে ক্লোজকে বলা হয় পুরস্কারের মনোনয়ন অভিনেত্রী।

ওলিভিয়া কোলম্যান : ওলিভিয়া কোলম্যান একজন ইংলিশ অভিনেত্রী। সেরা অভিনেত্রী হিসেবে এ পর্যন্ত তিনবার ব্রিটিশ একাডেমি টেলিভিশন অ্যাওয়ার্ড, চারবার ব্রিটিশ ইনডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড দুইবার গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড পান। হলিউডের অসংখ্য হিট ছবিতে অভিনয় করেন ওলিভিয়া। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ট্রাইরানোসোর, হট ফায, দ্য আইরন লেডি, হাইড পার্ক অন হাডসন, লকি, দ্য থারটিন টেল, দ্য লবস্টার। সর্বশেষ ২০১৮-তে অভিনয় করেন ‘ দ্য ফেভারিট’ ছবিতে। এ ছবিতে অভিনয় করে অস্কারের সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়ন পান ৪৪ বছর বয়সী ওলিভিয়া কোলম্যান। বড়পর্দার পাশাপাশি ছোটপর্দায়ও জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী।

লেডি গাগা : জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী লেডি গাগা প্রথমবারের মতো মনোনয়ন পেয়েছেন অস্কারে। তাও আবার সেরা অভিনেত্রীর বিভাগে। ‘আ স্টার ইজ বর্ন’ চলচ্চিত্রের মৌলিক গান ‘শ্যালো’র সহগীতিকার হিসেবে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো গোল্ডেন গ্লোবের দেখা পেয়েছেন লেডি গাগা। বেভারলি হিল্টনে বসা গোল্ডেন গ্লোবের আসরে গাগার হাতে পুরস্কার তুলে দেন টেইলর সুইফট ও ইদ্রিস আলবা। এর আগে ২০১৬ সালে মিনি সিরিজ বা টেলিভিশন চলচ্চিত্র ক্যাটাগরিতে ‘আমেরিকান হরর স্টোরি : হোটেলে’র জন্য সেরা অভিনেত্রীর গোল্ডেন গ্লোব জয় করে নেন গাগা। এবার ‘আ স্টার ইজ বর্ন’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে সমালোচকদের বহুল প্রশংসা অর্জন করা গাগা চলচ্চিত্রের ড্রামা ক্যাটাগরিতে সেরা অভিনেত্রী হিসেবেও মনোনয়ন পান। গাগা ও ব্র্যাডলি কুপারের গাওয়া ‘শ্যালো’ চারটি গ্রামি মনোনয়ন পেয়েছে। সেই সঙ্গে বিলবোর্ডের হট ১০০ তালিকার টপ-ফাইভে জায়গা করে নিয়েছিল। ২০১৯ সালের অস্কারে মৌলিক গান হিসেবে সংক্ষিপ্ত তালিকায়ও নাম লিখিয়েছে ‘শ্যালো’।

মেলিসা ম্যাককার্থি : মেলিসা ম্যাককার্থি একজন ইংলিশ অভিনেত্রী। এ ছাড়া তিনি লেখক, প্রযোজক, ফ্যাশন ডিজাইনার, কমেডিয়ান। এ পর্যন্ত দুবার সেরা অভিনেত্রী হিসেবে প্রাইমটাইম এমি অ্যাওয়ার্ড পান। ১৯৯০ সালে ছোটপর্দা দিয়ে অভিনয় শুরু করেন। টিভি সিরিজ ‘হিলমোর গার্ল’ এ অভিনয় করে প্রথম তারকা খ্যাতি পান। সিরিজটি ২০০০ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত প্রচারিত হয়। পরবর্তী সময়ে ছোটপর্দায় টিভি সিরিজ ‘সামান্থা হু’ (২০০৭ -২০০৯), মাইক অ্যান্ড মলি (২০১০-২০১৬) সিরিজ দুটোতে কমেডি চরিত্রে অভিনয় করে প্রাইমটাইম এমি অ্যাওয়ার্ড পান। বড়পর্দায় অভিষেক হয় ২০১১ সালে কমেডি ছবি ‘ব্রাইড মেডসে’। ছবিতে কমেডি চরিত্রে অভিনয় করে বাফটা, গিল্ড অ্যাওয়ার্ডে সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়ন পান। মূলত একজন কমেডিয়ান অভিনেত্রী হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন মেলিসা। তার উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে ‘দ্য নাইন’ (২০০৭), ‘দ্য বেক আপ প্ল্যান ’ (২০১০), ‘এসটি ভিনসেট’ (২০১৪), ‘স্পাই’ (২০১৫), ‘দ্য বস’ (২০১৬) অন্যতম। ২০১৮-তে অভিনয় করেন তিনটি ছবিতে। এর মধ্যে ‘লাইফ অব দ্য পার্টি’ ও ‘দ্য হেপিটাইম মার্ডারার্স’ দুটো কমেডি ছবি। বায়োগ্রাফিক্যাল ছবি ‘ক্যান ইউ এভার ফরগিভ মি!’তে অভিনয় করে অস্কারে সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়ন পান। ছবিতে লেখকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মেলিসা। ২০১৫, ২০১৬-এর ফোর্বস ম্যাগাজিনের জরিপে হলিউডে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেত্রীদের মধ্যে মেলিসা ম্যাককার্থি  ছিলেন প্রথম।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads