সারা বিশ্বের বিভিন্ন অঙ্গনের তারকাদের মধ্যে কারা গত এক বছরে বেশি আয় করেছেন? মার্কিন ব্যবসাসংক্রান্ত ম্যাগাজিন ফোর্বস এর উত্তর দিয়েছে।
এদিকে সবচেয়ে বেশি সম্মানী পাওয়া তারকাদের মধ্যে শীর্ষে আছেন মার্কিন গায়িকা টেলর সুইফট। ২০১৬ সালেও সবার ওপরে ছিলেন তিনি। গত বছর তার আয় হয়েছে ১৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার (১ হাজার ৫৫৭ কোটি ৩৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা)। এর বেশিরভাগই এসেছে ২৯ বছর বয়সী এই তারকার ‘রেপুটেশন’ অ্যালবাম ও কনসার্ট থেকে।
সুমিষ্ট গলা আর তার চেয়েও মিষ্টি চেহারার টেইলর সুইফট সারা বিশ্বের সংগীতপ্রেমীদের কাছে এক অতি পরিচিত নাম। সোনালি চুল, গাঢ় নীল চোখ আর পাতলা গড়নের টেইলরকে হঠাৎ দেখলে রূপকথার পাতা থেকে উঠে আসা পরীদের মতোই মনে হয়। রূপকথার আবেশ থাকে তার প্রতিটি গানের কথাজুড়ে। এক নতুন দিন, নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা আর নতুন প্রতিজ্ঞার কথাই থাকে তার প্রতিটি গানের কথায়। মাত্র ২৮ বছরের জীবনেই টেইলরের আকাশছোঁয়া খ্যাতি, অঢেল অর্জন আর পৃথিবীজোড়া কোটি ভক্তের ভালোবাসা প্রাপ্তি।
কনসার্ট নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে বেশ কিছুদিন ধরে নতুন গান থেকে দূরে সরে ছিলেন তরুণ মার্কিন পপ তারকা টেইলর সুইফট। তবে এই ব্যস্ততার মধ্যেই নতুন গানের খবর জানালেন এই গায়িকা এবং অভিনেত্রী। সেই সঙ্গে ঘোষণা দিলেন তার সপ্তম একক অ্যালবামেরও। এরই মধ্যে অ্যালবামের অনেক অংশের কাজ শেষ করেও ফেলেছেন। অ্যালবামের নাম রাখা হয়েছে ‘লাভার’। তবে অ্যালবাম প্রকাশের আগে অচিরেই তিনি নতুন একটি গান উপহার দিতে যাচ্ছেন ভক্তদের। ‘ইউ নিড টু কাম ডাউন’ শিরোনামের এই গানটি পুরোপুরি রোমান্টিক ঘরানার, যা প্রেমিক ভক্তদের মনে নতুন এক রোমান্স ও আবেগের সৃষ্টি করবে বলে জানালেন সুইফট। তিনি আরো জানান, এই গানের পরই আসবে তার নতুন অ্যালবাম। এই অ্যালবামের মাধ্যমে প্রায় তিন বছর পর অডিও বাজারে স্থান পাচ্ছে সুইফটের গান।
২০১৭ সালে বাজারে আসে সুইফটের ষষ্ঠ অ্যালবাম ‘রিপুটেশন’। অ্যালবামটি সাজানো হয়েছিল ১৫টি গান দিয়ে। এই অ্যালবামের ‘লুক হুয়াট ইউ মেক মে ডু’ গানটির ভিডিওটি বেশ সাড়া ফেলেছিল ভক্তমহলে। এরপর অ্যালবামের আরেক হিট গান ‘মি’র মিউজিক ভিডিওটিও রাতারাতি আলোচনায় এনে দেয় তাকে। এ শিল্পী ফিরে এসে সোজা কথায় চমকেই দিলেন ভক্তদের।
কান্ট্রি মিউজিক দিয়েই টেইলরের সংগীত সাধনা শুরু। ২০০৬-এর অক্টোবরে বের হয় নামে টেইলরের প্রথম অ্যালবাম। এই অ্যালবামটি বিলবোর্ডে পঞ্চম স্থান দখল করে নেয় আর এর গানগুলো ১৫৭ সপ্তাহ ধরে চলতে থাকে। কিশোরী মনের অনুভূতি, একেবারে সাদামাটা মনের কথা সোজাসাপ্টা ভাষায় এভাবে হয়তো আর কেউ উপস্থাপন করতে পারেননি আগে। অদ্ভুত এক সারল্য আছে তার গানগুলোয়। টিনএজারদের মধ্যে সাড়া জাগাতে তাই বেগ পেতে হয়নি টেইলরের।
একজন সুকণ্ঠী গায়িকার পাশাপাশি টেইলর একজন অসাধারণ অভিনেত্রীও। ২০০৯-এ ‘হানা মনটানা’ মুভিতে টেইলর অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেন। ২০১০ সালে ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ ছবিতে জেসিকা অ্যালবা, অ্যানি হ্যাথওয়ে, ব্র্যাডলি কুপারের পাশাপশি টেইলর অভিনয় করেন। তার মনোমুগ্ধকর উপস্থিতি ও অভিনয় এককথায় তুলনাবিহীন। এছাড়া নিজের অভিনীত মিউজিক ভিডিওগুলোও টেইলরের অভিনয় প্রতিভার অনন্য নিদর্শন। গানের ভিডিওতে সেই সোনালি চুলের রাজকুমারী বা গিটার হাতে সুরের ঢেউ তোলা স্টেজ শিল্পী বা সেই গোবেচারা চশমিশ মেয়েটা, অথবা দুরন্ত অবতার সব রূপেই নিজেকে সমান সুচারুরূপে ফুটিয়ে তুলেছেন টেইলর।
টেইলরের অর্জনের রয়েছে ১০টি গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড, ২৩টি বিলবোর্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ড, ১১টি কান্ট্রি মিউজিক অ্যাসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড, ৮টি একাডেমি অব কান্ট্রি মিউজিক অ্যাওয়ার্ড, ১৯টি আমেরিকান মিউজিক অ্যাওয়ার্ড, ১টি ব্রিট অ্যাওয়ার্ড এবং ১টি এমি অ্যাওয়ার্ডসহ আরো অনেক পুরস্কার ও পুরস্কারের মনোনয়ন। ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী গ্র্যামি বিজেতা শিল্পীও তিনি। ২০১০ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে, তিনি এই অর্জন নিজের করে নেন।