• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

হলিউড

মৃত্যুগুজবে বিরক্ত ‘দ্য রক’

  • বিনোদন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১৬ নভেম্বর ২০১৯

ডোয়াইন জনসন। একজন রেসলার হিসেবে যিনি ‘দ্য রক’ নামেই সর্বাধিক পরিচিত। বর্তমানে তিনি হলিউড অভিনেতা। চলচ্চিত্রে অভিনয় করেও তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছেন।

একটি স্টান্টে অংশ নিতে গিয়ে মারা গেছেন বলে বিবিসি নিউজ’র নামে একটি ভিডিও লিংক ছড়িয়ে পড়ে বুধবার। বিবিসি নিউজের নাম ও লোগো ব্যবহার করে এ খবর ছড়িয়ে পড়ে।

ওই খবরে বলা উল্লেখ করা হয়, সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেয়া হলিউড অভিনেতাদের অন্যতম ডোয়াইন জনসন (দ্য রক) মারা গেছেন! মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪৭ বছর! এমন খবরে চোখ ছানাবড়া সবার! কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, খবরটি একেবারেই ভিত্তিহীন, বানোয়াট।

তবে অভিনেতাদের মৃত্যুগুজব নতুন কিছু নয়। হলিউড, বলিউড এমনকি ঢালিউডে হরহামেশাই এমন গুঞ্জন শোনা যায়। তবে এরকম খবরে বিরক্ত রক। এই রেসলার বলেন, ‘আমি মারা গেছি। আমিই তো জানি না। নিন্দুকেরা আর কে কি করবে।’

দ্য রক খ্যাত ডোয়াইন জনসন। ছোটবেলায় ভেবেছিলেন আমেরিকান ফুটবলার হবে। স্কুলে থাকতে ভালোই খেলতেন। ১৯৯৫ সালে তিনি ক্রিমিনোলজি ও ফিজিওলজি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। এরপর কানাডিয়ান ফুটবল লিগের একটা ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু, মাত্র দু’মাস পরই বাদ পড়েন। আয় না থাকায় ওই সময়টায় একদমই ভেঙে পড়েছিলেন জনসন। পকেটে সম্বল মোটে সাত ডলার। জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়টা কাটাচ্ছিলেন। মায়ের কাছে গেলেন, অনেক কান্নাকাটি করলেন। ভবিষ্যতে কী হবে, এই ভেবে নিজেকে অসহায় ভাবতে শুরু করেছিলেন।

তবে শরীরে যে তার লড়াকুর রক্ত। বাবা ছিলেন পেশাদার রেসলার, দাদাও তাই। তাঁর বাবার বাবার রেসলিংয়ে তখন পয়সাকড়ি ছিল না বললেই চলে। একদিন বাড়ি ফিরে দেখেন দরজায় তালা। বাড়িতে ঝুলতে উচ্ছেদের নোটিশ। মা চিৎকার করে বললেন, ‘এখন আমরা কোথায় যাবো?’। অভাব-অনটনে এক পর্যায়ে বাবা-মার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেল।

তাই বাবা-দাদাকে নিজের হিরো মানলেও কখনোই রেসলার হতে চাইতেন না দ্য রক। অর্থাভাবে সেই না চাওয়া পথেই হাঁটা শুরু করলেন। বাবার কাছে গেলেন। বাবা প্রথমে ছেলের রেসলার হওয়ার ইচ্ছায় সায় দিলেন না। কারণ, তিনি নিজেই জানেন এই জীবনে কী আছে, আর কী নেই।

বাবাকে বোঝাতে সক্ষম হলেন জনসন। বলা ভাল, ছেলের আগ্রহ দেখে রাজি হতে বাধ্য হলেন বাবা। বাবার কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করলেন। বাবার নাম ছিল রকি জনসন, সেখান থেকেই রক নিজের নামকরণ করেন।

এরপরও বাধা এসেছে। রেসলিংয়ের সরঞ্জাম কেনার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ ছিল না তাঁর হাতে। বাধ্য হয়ে ভলিভলের নি-প্যাড কিনলেন, এক চাচার কাছ থেকে শর্টস ধার করলেন। রেসলিংয়ে নিজের অভিষেকের দিন প্রায় এক হাজার মাইল গাড়ি চালিয়ে আসেন।

পৌঁছানো মাত্রই সঞ্চালক তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আগে কখনো রেসলিং করেছো?’ ডোয়াইন জনসন ঠোঁটে এক চিলতে হাসি ধরে রেখে গর্বের সঙ্গে জবাব দিলেন, ‘রেসলিংটা আমার রক্তেই আছে।’ ঠিক এরপর রেসলিংয়ের সাতটি ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নেন দ্য রক।

রেসলিংয়ে যখন সুসময়ে ছিলেন, তখন ক্যারিয়ারে নাটকীয় এক মোড় এলো। ডোয়াইন জনসন নাম লেখালেন সিনেমায়, কাজ করা শুরু করলেন হলিউডে। শুরুটা হয় ২০০২ সালের ‘দ্য স্করপিয়ন কিং’ দিয়ে। সেই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য তিনি পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন সাড়ে পাঁচ মিলিয়ন ডলার। গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস বলছে এর আগে আর কোনো অভিনেতাই নিজের অভিষেক সিনেমার জন্য এত পারিশ্রমিক নেননি।

এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক ছবি করে চলেছেন। জিতেছেন একগাদা পুরস্কার। শোনা যাচ্ছে, অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু করে একটা সময় তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনও করবেন। নিজের ক্যারিয়ারের সাফল্য নিয়ে জনসনের মূল্যায়ন খুব সাদামাটা। তিনি বলেন, ‘সাফল্যকে সব সময় গ্রেটনেস নিয়ে মাপা যায় না। এটা ধারাবাহিকতার একটা ব্যাপার। আপনাকে ধারাবাহিক ভাবে কঠোর পরিশ্রম করে যেতে হবে, গ্রেটনেস আসতে বাধ্য।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads