• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটের বলি ১২

সংরক্ষিত ছবি

ভারত

তৃণমূলের দাবি ‘নগণ্য ঘটনা’

পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটের বলি ১২

  • ঈশিকা অথৈ, কলকাতা
  • প্রকাশিত ১৫ মে ২০১৮

পশ্চিমবঙ্গের ২০ জেলার পঞ্চায়েত ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় সোমবার অন্তত ১২ জনের প্রাণ হারানোর খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে একজন সাধারণ ভোটার, একজন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এবং বাকিরা সিপিএম, বিজেপি ও তৃণমূলের সমর্থক।

ভোটগ্রহণের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে কলকাতার একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া টেলিফোন সাক্ষাৎকারে রাজ্যটির প্রশাসনিক প্রধান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করতে শান্তিপূর্ণ ও অবাধ-সুষ্ঠু ভোট উপহার দেবে তার প্রশাসন। কিন্তু সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাজ্যবাসীর সঙ্গে গোটা পৃথিবীর মানুষ পশ্চিমবঙ্গে শাসক দলের চরম রাজনৈতিক সহিংসতা চাক্ষুস করল।

তবে ভোটের সহিংসতাকে ‘নগণ্য ঘটনা’ বলে দাবি করলেন রাজ্যের শাসক দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আবার খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাবি, সীমান্তবর্তী উত্তর চব্বিশ পরগনার ভোটে বাংলাদেশি দুষ্কৃতকারীরা ঢুকে নৈরাজ্য চালিয়েছে। এই দাবিকে বিরোধীরা হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, সীমান্তে নিয়োজিত বিএসএফ কিংবা রাজ্য সরকারের পুলিশ তাহলে কী করল? তারা কি বাংলাদেশ থেকে সন্ত্রাসী ঢুকে যাওয়ার সুযোগ করে দিল? এ দায় তো তাহলে প্রশাসনেরই। যদিও এই নিয়ে বিতর্ক চলার মধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় হতাহতের ঘটনাসহ গোটা রাজ্যের নৈরাজ্যকে অত্যন্ত নগণ্য ঘটনা বলে অবহিত করেন। তিনি বলেন, টেলিভিশনে যা দেখানো হচ্ছে সেটা অত্যন্ত নগণ্য। তবুও রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন যথেষ্ট চেষ্টা করছে। বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এ ঘটনাকে তৃণমূল সরকারের ব্যর্থতা বলে দাবি করেন। বলেন, রাজ্যে রাষ্ট্রপতির শাসন দাবির সুপারিশ করা হচ্ছে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে এ বিষয়ে তিনি আলোচনা করবেন।

সিপিআইএমের পলিটব্যুরোর সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে আজ ভোটের সহিংসতার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের মৃত্যু হলো। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, নির্বাচনের নামে প্রহসনের সাক্ষী থাকল গোটা দেশ। লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে।

তবে এদিন বিকাল পৌনে ৫টা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে ভোট নিয়ে কোনো ব্রিফিং হয়নি।

কলকাতার গণমাধ্যম, স্থানীয় সাংবাদিক ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে- ভোট এবং ভোটের কয়েক ঘণ্টা আগে কলকাতার পাশের দুই জেলা উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় চারজন, নদীয়ায় দুজন, মুর্শিদাবাদে একজন, দক্ষিণ দিনাজপুরে একজন, মেদেনিপুরের নন্দীগ্রামে দুইজন সিপিআইএম সমর্থকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

ভোটের কয়েক ঘণ্টা আগে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কাকদ্বীপে এক দম্পতিকে হত্যার ঘটনা ঘটে। অভিযোগ উঠেছে, সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীর সমর্থক ছিল ওই দম্পতি। রাতের অন্ধকারে তাদের পুড়িয়ে মেরেছে তৃণমূলের সন্ত্রাসীরা।

এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দেন ৩ কোটি ৩৮ লাখ ভোটার। যদিও মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ৫ কোটি। ৩১ হাজার ৮২৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে ভোট হয়েছে।

এরই মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়া তৃণমূলের ৩৪ শতাংশ আসনের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। আগামী জুলাইয়ে পরবর্তী শুনানির পর সরকারিভাবে গেজেট প্রকাশ করারও নির্দেশনা রয়েছে শীর্ষ আদালতের। তবে যে আসনগুলোতে ভোট হয়েছে, সেগুলোর ফল ঘোষণা হবে আগামী ১৭ মে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads