ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির কর্মীরা। আসাম রাজ্যের খসড়া নাগরিকপঞ্জির তালিকা থেকে ৪০ লাখ মানুষ বাদ পড়ার ঘটনায় ‘গৃহযুদ্ধ ও রক্তগঙ্গা’ বয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা জানানোয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়। এনডিটিভির খবর।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ‘ঘৃণা ও উত্তেজনা’ ছড়াচ্ছেন বলে পুলিশের কাছে দায়ের করা ওই মামলায় অভিযোগ করেছেন বিজেপির ডিব্রুগড় যুব শাখার তিন কর্মী। গত সোমবার ভারতের ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স (এনআরসি) আসাম রাজ্যে নাগরিকপঞ্জির সংশোধিত খসড়া তালিকা প্রকাশ করে। রাজ্যটির ৪০ লাখের বেশি বাসিন্দা ওই তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন, যা নিয়ে উত্তেজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
নাগরিকপঞ্জির তালিকা সংশোধন করে বিজেপি দেশকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন মমতা। ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে এক আলোচনা সভায় মমতা বলেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সামনে রেখেই এনআরসি তৈরি করা হয়েছে। আমরা এটি হতে দেব না। তারা (বিজেপি) জনগণকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে। এই পরিস্থিতি সহ্য করা হবে না। এতে দেশে গৃহযুদ্ধ, রক্তগঙ্গা বয়ে যেতে পারে।
রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য বিজেপি সরকার লাখ লাখ মানুষকে ‘রাষ্ট্রহীন’ করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। পাল্টা অভিযোগ করে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী গৃহযুদ্ধের কথা বলে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। মমতা ভোট ব্যাংক রাজনীতি খেলছেন বলেও অভিযোগ করেছেন অমিত।
অবৈধ ‘বাংলাদেশিদের’ চিহ্নিত করে তাদের ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যে এএনআরসির নাগরিকপঞ্জি চূড়ান্ত করা হচ্ছে বলে এর আগে জানিয়েছিল আসাম সরকার। নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য বাসিন্দাদের আবেদনপত্রের সঙ্গে ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে থেকে রাজ্যে বসবাস করছেন এমন প্রমাণপত্র দিতে হচ্ছে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি প্রকাশিত প্রথম তালিকায় মাত্র এক কোটি ৮০ লাখ মানুষের নাম ছিল। সংশোধিত তালিকায় আরো এক কোটির বেশি নতুন নাম যোগ হয়েছে।
তবে সোমবার প্রকাশিত তালিকাটিও চূড়ান্ত নয়; যাদের নাম নেই তারা আপিল করার সুযোগ পাবেন বলে জানিয়েছে আসাম সরকার। এ তালিকা ধরে এখনই কাউকে গ্রেফতার বা বিতাড়নও করা হবে না বলে আশ্বস্ত করেছে তারা। ৭ আগস্ট খসড়া তালিকাপঞ্জি প্রকাশ করা হবে এবং তালিকা থেকে যারা বাদ পড়েছেন তারা যথাযথ প্রমাণ নিয়ে আগামী ৩০ আগস্ট থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট।