• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
‘ছেলে ভুল করেছে, ছেড়ে দিন ওকে’

ছেলে প্রদীপ ও বাবা মানিক লাল

সংগৃহীত ছবি

ভারত

থানায় সেই লাঞ্ছিত বাবার আর্জি

‘ছেলে ভুল করেছে, ছেড়ে দিন ওকে’

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৬ অক্টোবর ২০১৮

সেস্যাল মিডিয়ার বদৌলতে এই দু’জনকে আমরা অনেকেই চিনি। সম্পর্কে এরা বাবা আর ছেলে। বুধবার এই ছেলে বৃদ্ধ বাবাকে উপূর্যপরি চড়-থাপ্পড় মারেন। বৃদ্ধের অপরাধ ছিল, স্ত্রী বন্দনাকে আড়ালে ডেকে মিষ্টি খাইয়েছিলেন তিনি। স্ত্রী সুগারের রোগী। বাবা কেন তাকে মিষ্টি খাওয়ালেন, তা নিয়ে রেগে আগুন ছেলে। বাবাকে শিক্ষা দিতে গায়ে হাত তুলতেও বাধেনি তার। এই গর্হীত অন্যায়ের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সোস্যাল মিডিয়ায়। ভারতের বার্তা সংস্থাগুলোও এই খবর প্রকাশ করে বেশ গুরুত্ব দিয়েই। কিন্তু ছেলের হাতের চড়-থাপ্পড় খেয়ে বেমালুম মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন বৃদ্ধ বাবা। পড়শিরা বৃদ্ধকে বোঝান। শেষমেশ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন অশোক নগরের বিল্ডিং মোড়ের বাসিন্দা মানিক লাল বিশ্বাস। পুলিশ গ্রেফতার করে ছেলে প্রদীপকে।

সেই ছেলেকেই ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে বুধবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ অশোক নগর থানায় হাজির মানিক লাল। ওসি আশিস দলুইয়ের কাছে অনুরোধ করেন, ‘ছেলে ভুল করেছে, ছেড়ে দিন ওকে’। এতসবের পরেও বাবার স্নেহ দেখে ওসি হতবাক। লক আপ থেকে তিনি ডেকে পাঠান প্রদীপকে। বলেন, ‘দেখো, তুমি বাবাকে মারধর করো, আর উনিই তোমাকে ছাড়াতে থানায় এসেছেন।’ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়েছিল ছেলে বলেন, ‘অন্যায় করেছি, এমন কাজ আর করব না।’

ততক্ষণে অবশ্য বৃদ্ধ বাবাকে মারধরের ঘটনা নির্দিষ্ট আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। প্রদীপকে থানা থেকে ছাড়া হয়নি। বুঝিয়ে-সুঝিয়ে বা়ড়ি পাঠানো হয় তাকে। বৃহস্পতিবার বারাসত জেলা আদালতে তোলা হয় প্রদীপকে। জামিন পেয়েছে সে। আদালত চত্বরে মানিক লালকে বলতে শোনা গেছে, ‘ছেলে জামিন না পেলে আমি আত্মহত্যা করব।’

পাড়া-পড়শির অভিযোগ, ২০ অক্টোবরের যে ঘটনার ছবি সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে, তা নতুন কিছু নয়। বৃদ্ধ বাবাকে প্রায়ই মারধর করত প্রদীপ। সকলে যে কারণে ক্ষিপ্ত অশোকনগর-কল্যাণগড় পৌরসভার কর্মী বছর চল্লিশের প্রদীপের বিরুদ্ধে। আজ সকালে স্থানীয় বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, মানিক লাল গালে হাত দিয়ে বসে বলছেন, ‘ছেলে অন্যায় করেছে ঠিকই, তবে ওর কোনো শাস্তি হোক চাই না। আমার একটাই তো ছেলে। ওর কিছু হলে আমাদের কে দেখবে।’ প্রদীপের মা বন্দনাও স্বামীর কথায় সায় দেন।

বৃদ্ধের একটাই আফসোস, ‘ছেলে মারধর করে, আমি তো কখনো কাউকে বলিনি। লোকজন যে কিভাবে সব জেনে গেল...!’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads