• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
ভোটের স্বার্থেই যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে : মমতা 

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

সংগৃহীত ছবি

ভারত

ভোটের স্বার্থেই যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে : মমতা 

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার ঘটনা নিয়ে নরেন্দ্র মোদির সরকারের ভূমিকায় আগেই সংশয় প্রকাশ করেছিল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সরাসরি মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। বলেছেন, রাজনৈতিক ফায়দা তুলতেই খবর থাকা সত্ত্বেও জওয়ানদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। খবর : এনডিটিভি, আনন্দবাজার পত্রিকা ও ডন।   

সোমবার তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে  বলেন, এমন ঘটনা যে ঘটবে আপনি তো আগে থেকেই জানতেন। আপনার কাছে খবর ছিল। সরকারের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল। তা হলে কেন সে দিন জওয়ানদের এয়ারলিফট না করে, নাকা চেকিং না করে, রাস্তাগুলো স্যানিটাইজ না করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিলেন। জওয়ানদের রক্ত নিয়ে ভোটের রাজনীতি করাই কি আসল লক্ষ্য? আর কিছুদিন পরই লোকসভা ভোট। ভোট আসছে বলেই কি আপনি এ বিষয়ে চুপ ছিলেন। মমতার তোলা এই প্রশ্ন এবং তার ইঙ্গিত নিয়ে ইতোমধ্যে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। শুধু মমতাই নয়, এর আগে অন্যান্য বিরোধী দলগুলোও বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। কিন্তু এ দিন মমতা স্পষ্টই বিজেপির দিকে তথা মোদির দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন। রাজনৈতিক স্বার্থেই জঙ্গি হামলা ঘটতে দেওয়া হলো বলে ইঙ্গিত দেন। কিন্তু জওয়ানদের রক্ত নিয়ে ভোটের রাজনীতি হয় না, হবে না। কিছু দিনের জন্য হয়তো ভুল বুঝিয়ে রাখতে পারবেন। ভোটের স্বার্থেই যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা চলছে। এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আবারো বলেছেন, পুলওয়ামার হামলা সম্পর্কে যদি পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ দিতে পারে ভারত তাহলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জের প্রতিক্রিয়ায় দুই দেশে শান্তি স্থাপনের সুযোগ দিতে অনুরোধও করেন ইমরান। এর আগে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে মোদি বলেছিলেন, পাঠানের সন্তান হলে পুলওয়ামায় নিহত সেনা পরিবারগুলোর সঙ্গে অন্যায় হতে দেবেন না ইমরান। তাদের সুবিচার নিশ্চিত করবেন তিনি। মোদির চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি বিবৃতি জারি করা হয়।   

এতে বলা হয়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এখনো নিজের বক্তব্যে অনড়। দিল্লি যদি পুলওয়ামা হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ দিতে পারে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে ইসলামাবাদ। তবে কোনো ধরনের প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা না নিতে দিল্লিকে হুশিয়ারি দেন তিনি। যদিও পুলওয়ামায় ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলার ঘটনায় এবার পাকিস্তানকে টেকসই পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। 

শুধু জাতিসংঘের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীই নয় বরং পুলওয়ামায় হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেও স্বচ্ছ ও টেকসই পদক্ষেপ নিতে পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় ভারতের সিআরপিএফের ৪৪ সেনা নিহত হয়েছেন। ওই হামলার পরপরই এর দায় স্বীকার করে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ। এরপর থেকেই ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সংঘাত চরমে উঠেছে। দুই দেশের মধ্যে বাকবিতণ্ডা চলছেই। দুই দেশের মধ্যে যে উত্তেজনা শুরু হয়েছে তা অতি দ্রুত কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন ইইউয়ের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতিবিষয়ক শীর্ষ প্রতিনিধি এবং ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফেডেরিকা মোঘেরিনি। এক বিবৃতিতে তিনি জানান, এ বিষয়ে  রোববার পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশির সঙ্গে আলাপ হয়েছে। ইইউয়ের তরফ থেকে ভারতের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। অন্যদিকে জম্মু-কাশ্মিরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি চরম অবনতি হওয়ায় জরুরি বৈঠক ডেকেছে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা ওআইসি। পাকিস্তানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ ২৬ এ বৈঠকে হবে। এক বিবৃতিতে ওআইসি জানিয়েছে, পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পর সেখানকার নিরাপত্তা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য সংস্থার জেনারেল সেক্রেটারিয়েটে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।   

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads