• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯

শিল্প

বেজার চূড়ান্ত অনুমোদন

নারায়ণগঞ্জে অর্থনৈতিক অঞ্চল করছে সিটি গ্রুপ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৩ জানুয়ারি ২০১৮

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ৭৭.৯৬৫৫ একর জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে দেশের অন্যতম ভোগ্যপণ্যের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপ।

আগামী তিন বছরের মধ্যেই সেখানে ‘সিটি ইকোনমিক জোন’ তৈরি হবে। চলতি বছরে এ অঞ্চলে ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে গ্রুপটি।

মঙ্গলবার এ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুল রহমানের হাতে নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার অনুমোদনপত্র তুলে দেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী।

এ সময় ফজলুল রহমান জানান, এ অঞ্চল আগামী তিন বছরের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে। আর প্রথম বছরেই (২০১৮) সেখানে ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। পরে তা আরো বাড়বে। এখানে সিটি গ্রুপ গতানুগতিক ভোগ্যপণ্যের সঙ্গে আরো নানামুখী খাতের ইন্ডাস্ট্রি করার কথা ভাবছে।

বেজার পক্ষ থেকে জানানো হয়, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে দুই কিলোমিটার দূরে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে নোয়াগাঁও, চরগন্ধপুর, গন্ধবপুর ও উত্তর রূপসী মৌজায় এ অর্থনৈতিক অঞ্চল হতে চলেছে।

এরই মধ্যে সিটি ইকোনমিক জোনের মাটি ভরাট করে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে বীজ প্রক্রিয়াকরণ, আটোরাইস মিল, ডালের মিল এবং ভোজ্য তেলের কারখানা করার জন্য ক্যাপিটাল মেশিনারিজের এলসি খোলা হয়েছে।

এদিকে অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাণিজ্যিক উৎপাদনের প্রথম বছর থেকে দক্ষ-অদক্ষ, নারী-পুরুষ মিলিয়ে মোট তিন হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, যা পরবর্তী ৫ বছরের মধ্যে ২০ হাজারের অধিক হবে বলে আশা করছে সিটি গ্রুপ।

বেজা জানায়, এ অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ রয়েছে, যা অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের সরবরাহ করা হবে। এর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পানি শোধনাগার প্ল্যান্ট, বর্জ্য পরিশোধনাগার প্ল্যান্ট, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাসহ পরিবেশবান্ধব সব ব্যবস্থা থাকবে।

সিটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রস্তাবিত শিল্পখাতের মধ্যে ফুড ও বেভারেজ এবং রফতানি জাতীয় শিল্পখাত রয়েছে। এখানে সিটির গ্রুপের সঙ্গে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের যৌথ বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে কি না জানতে চাইলে ফজলুল রহমান বলেন, ভালো বিদেশি বিনিয়োগ এলে তাকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।

পবন চৌধুরী বলেন, আমরা এখন সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে কোম্পানিগুলোর চাহিদামতো জায়গা দিতে পারছি না। কিন্তু এ অঞ্চলগুলোর কাজ যখন শুরু করেছিলাম তখন ভারতসহ অনেক দেশ এমনকি ওয়ার্ল্ড ব্যাংকও এসব জায়গা কল-কারখানার জন্য অনুপযুক্ত বলেছিল। এখন ভারতই সেখানে জায়গা চাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা মাত্র তিন বছরে অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছি। আগামী ১৫ বছরে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। ২০৩০ সালে ৪০ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত রফতানি হবে।

পবন চৌধুরী বলেন, আমরা আশা করছি সিটি গ্রুপ তার সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে সিটি ইকোনমিক জোন সফলভাবে বাস্তবায়নে সক্ষম হবে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বেজা জানায়, এরই মধ্যে ১৭টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। আর পাঁচটি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো-মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চল, আবদুল মোনেম অর্থনৈতিক অঞ্চল, আমান অর্থনৈতিক অঞ্চল, বে-অর্থনৈতিক অঞ্চল ও মেঘনা ইন্ডাস্ট্র্রিয়াল অর্থনৈতিক অঞ্চল।

জানা গেছে, সিটি গ্রুপও তিনটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার আবেদন করেছিল। এর মধ্যে বাকি দুটি আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর মধ্যে একটি শীতলক্ষ্যা নদীর পারেই প্রায় ২৪১ একর জমি নিয়ে।

এদিকে মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চলের ডেভেলপার নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে। একই সঙ্গে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে (প্রথম পর্যায়) নিয়োগের জন্য নির্বাচিত ডেভলপারকে লেটার অব অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। নাফ ট্যুরিজম পার্ক উন্নয়নে ডেভেলপার নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে বেজার পক্ষ থেকে জানানো হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads