• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
তিন বছরেও জমি অধিগ্রহণ হয়নি প্লাস্টিক শিল্প নগরীর

দ্বিতীয় ধলেশ্বরী ব্রিজের পশ্চিম পাশে বড়বর্ত্তা এলাকায় ৫০ একর জমিতে প্লাস্টিক শিল্প নগরী গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে

ছবি: সংগৃহীত

শিল্প

তিন বছরেও জমি অধিগ্রহণ হয়নি প্লাস্টিক শিল্প নগরীর

  • কাওসার আলম
  • প্রকাশিত ২৯ জুলাই ২০১৮

চলতি বছরের জুনের মধ্যে প্লাস্টিক শিল্প নগরী গড়ে তোলার কথা ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত জমিই অধিগ্রহণ করতে পারেনি প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। অবশেষে ব্যয় না বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ আরো এক বছর বাড়ানোর জন্য একনেকের অনুমোদনে পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব পাঠানো হয়। সে প্রস্তাব একনেক সভায় অনুমোদন পাওয়ায় প্লাস্টিক শিল্প নগরী গড়ে তুলতে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত সময় পেল বিসিক। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে কি না, তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। প্রকল্প এলাকায় অবৈধভাবে ৪০টির মতো ভূমিহীন পরিবার বসবাস করছে। তাদের উচ্ছেদ করতে গিয়ে বার বার বাধার মুখে পড়ছে স্থানীয় প্রশাসন। এ অবস্থায় অবৈধভাবে বসবাসকারীদের সেখান থেকে সরিয়ে অন্যত্র পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে সম্প্রতি প্রকল্প পরিচালক এএসএম ফজলুর রহমান শিল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে উল্লেখ করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার দ্বিতীয় ধলেশ্বরী ব্রিজের পশ্চিম পাশে বড়বর্ত্তা এলাকায় ৫০ একর জমিতে প্লাস্টিক শিল্প নগরী গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ১ ডিসেম্বর একনেক বৈঠকে ১৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুলাইয়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়।

কিন্তু নির্ধারিত মেয়াদের ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো জমি অধিগ্রহণ করা যায়নি। ৫০ একর প্রকল্প এলাকায় ৩০ থেকে ৩৫ একর সরকারের খাস জমি। আর বাকি জমি ব্যক্তি মালিকানাধীন। ব্যক্তিমালিকরা তাদের এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে জমি দিতে কোনো ধরনের আপত্তি জানায়নি। প্রকল্প বাস্তবায়ন এলাকা বর্তমানে খুব একটা উন্নত নয়। শিল্প কারখানা গড়ে উঠলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্থানের একটি সুযোগ তৈরি হবে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন। এ ছাড়া এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নতি হবে।

কিন্তু ৩০ থেকে ৩৫ একর খাস জমিতে অবৈধভাবে বসবাসকারী প্রায় ৪০টির মতো পরিবার বসবাস করছে। পাকা, আধাপাকা, টিনের তৈরি ঘরবাড়ির পাশাপাশি মসজিদ, মাদরাসা নির্মাণ করে দখলদারিত্ব বজায় রেখেছে। মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েক দফা তাদের নোটিশ জারি করা হয়। কিন্তু তারা সেই নোটিশ অগ্রাহ্য করে আসছে। চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল যৌথ তদন্ত দল প্রকল্প এলাকায় গেলে ভূমিহীন লোকজন তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। এ ঘটনায় একটি মামলাও হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তদন্ত দলের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক।

এ অবস্থায় ভূমিহীনদের পুনর্বাসন করা গেলে জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম ত্বরান্বিত হবে বলে প্রকল্প পরিচালকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

জমি অধিগ্রহণের পর শুরু হবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন। অবকাঠামোগত উন্নয়নের মধ্যে রয়েছে রাস্তাঘাট উন্নয়ন, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ স্থাপন, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, অফিস বিল্ডিং নির্মাণ ইত্যাদি। এসব কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর প্রকল্প এলাকা বিসিককে হস্তান্তর করা হবে এবং পরবর্তীতে তা প্লাস্টিক শিল্প মালিকদের বরাদ্দ দেওয়া হবে।

 প্লাস্টিক শিল্প নগরীতে মোট ৩৭০টি প্লটে ৩৬০টি কারখানা গড়ে উঠবে। এতে ১৮ হাজার লোকের কর্মসংস্থান তৈরি হবে বলে আশা করছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বিসিক।  

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads