পোশাক শ্রমিকদের বেতন বৈষম্য দূর করতে সরকার ও মালিক পক্ষ থেকে বার বার আশ্বাসের পরও শ্রমিক অসন্তোষে উসকানি দিচ্ছে ইন্ধনদাতারা। নেপথ্যে থেকে শ্রমিকদের আন্দোলনের কলকাঠি নাড়ছেন তারা। শ্রমিকদের ভুল বুঝিয়ে অরাজকতা তৈরির চেষ্টা করার প্রাথমিক তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওইসব ইন্ধনদাতাকে খুঁজে বের করতে ইতোমধ্যে গোয়েন্দারা মাঠে নেমেছেন।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, সরকারকে দেশে-বিদেশে প্রশ্নবিদ্ধ ও বিব্রত করতে একটি মহল পেছন থেকে পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনে উসকানি দিচ্ছে। মাঠের বিরোধী রাজনৈতিক দলের সমর্থক কতিপয় শ্রমিক নেতা ও রাজনৈতিক নেতার জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ জন্য সন্দেহভাজনদের মোবাইলে কথাবার্তা নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বিদেশ থেকেও কেউ কেউ শ্রমিক আন্দোলনে ইন্ধন দিচ্ছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভে কোনো মহল যদি ব্যক্তিগতভাবে ইন্ধন দিয়ে থাকে, সেই ইন্ধনদাতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে জনদুর্ভোগ কেন করা হচ্ছে, এরই মধ্যে আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) নির্দেশ দিয়েছি, এটা খতিয়ে দেখার জন্য। ব্যক্তিগতভাবে কেউ যদি এই ধরনের ষড়যন্ত্র করে থাকে, তাদের চিহ্নিত করে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে বেতন কাঠামোতে বৈষম্য দূর করাসহ বিভিন্ন দাবিতে ৭ম দিনের মতো গতকাল রোববারও রাজধানীর রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা। পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষে অন্তত ১০ শ্রমিক আহত হয়েছেন। সকালে আশুলিয়ার আবদুল্লাহপুর ইপিজেড সড়কের জামগড়া এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে আশুলিয়ার জামগড়া ও নরসিংহপুরের অন্তত অর্ধশতাধিক কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
শ্রমিকরা জানান, রোববার সকালে হামীম গ্রুপের হামীম ও ঘোষবাগ এলাকার বান্দু ডিজাইনের শ্রমিকরা কাজে যোগ দেওয়ার উদ্দেশে কারখানায় যান। কারখানায় যাওয়ার পথে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা তাদের পথে পথে বাধা দেন। এমনকি মার খেয়ে আহত হয়ে বাসায় ফিরেছেন অনেক শ্রমিক। যারা বাধা উপেক্ষা করে কারখানায় গেছেন তারাও আন্দোলনরত শ্রমিকদের ভয়ে কাজ বিরতি রেখেছেন। ফলে সকালেই ওই কারখানা দুটি ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।