• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
নিজস্ব চিপ তৈরিতে উদ্যোগী চীন

ছবি : সংগৃহীত

তথ্যপ্রযুক্তি

নিজস্ব চিপ তৈরিতে উদ্যোগী চীন

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৩ জুন ২০১৯

মার্কিন প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসা করা বেশ কঠিন হয়ে উঠছে হুয়াওয়ের জন্য। আর তাই সবক্ষেত্রেই নির্ভরশীলতা কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে চীন। চিপ ব্যবসাও রয়েছে এর মধ্যে। সেমিকন্ডাক্টর বা চিপের বাজারে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর। তবে এ দুর্গে হানা দিতে চাইছে চীন।

অবশ্য নিজস্ব সেমিকন্ডাক্টর শিল্প উন্নয়নের পরিকল্পনা চীন কখনই গোপন রাখেনি। অন্তত বছর দুয়েক ধরে এ নিয়ে প্রকাশ্যেই কথা বলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধ ও হুয়াওয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা এ উদ্যোগে গতি এনেছে।

চীন সরকারের অনেক পরিকল্পনার মধ্যে অগ্রাধিকারমূলক একটি হলো সেমিকন্ডাক্টর শিল্প। বেইজিং ২০২৫ সালের মধ্যে উচ্চমানের প্রযুক্তিপণ্য তৈরির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। প্রয়োজনীয় সেমিকন্ডাক্টরের অন্তত ৪০ শতাংশ ২০২০ সালের মধ্যে এবং ৭০ শতাংশ ২০২৫ সালের মধ্যে তৈরির সক্ষমতা অর্জন করতে চায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির এ দেশ। এ লক্ষ্যে সরকার অন্তত ১ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। গত মাসে দেশীয় সেমিকন্ডাক্টর ও সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোর জন্য কর অবকাশ সুবিধারও ঘোষণা এসেছে।

যেখানে বর্তমানে অভ্যন্তরীণ চাহিদার মাত্র ১৬ শতাংশ চিপ চীনে তৈরি হয়। আবার এর অর্ধেক পরিমাণ তৈরি করে চীনা কোম্পানি। সেন্টার ফর স্ট্যাট্রেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের প্রতিবেদনে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে। তার মানে চীন এখনো মূলত বিদেশি কোম্পানি, বিশেষত মার্কিন কোম্পানির ওপর নির্ভরশীল।

নিজস্ব চিপ তৈরিতে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল বলা যায় হুয়াওয়েকে। স্মার্টফোনের জন্য কিরিন সিরিজের প্রসেসর বানিয়েছে হুয়াওয়ে। এ ছাড়া সর্বাধুনিক মোবাইল ইন্টারনেট প্রযুক্তির জন্য ফাইভজি মডেমও বানিয়েছেন তারা। হুয়াওয়ের চিপ ডিজাইন করে কোম্পানির সহায়ক (সাব-সিডিয়ারি) প্রতিষ্ঠান হাইসিলিকন।

চীনের অন্যান্য বৃহৎ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব চিপ তৈরির পরিকল্পনা করছে। এর মধ্যে স্মার্টফোন নির্মাতা শাওমি গত বছর সিএনবিসিকে জানায়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির উপযুক্ত চিপ বানানোর চিন্তা করছেন তারা। আলিবাবা এরই মধ্যে এআই প্রসেসর তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

তবে চিপ তৈরির ক্ষেত্রে এর নকশার বিষয়টি বেশ জটিল। দ্বিতীয়ত, উৎপাদনের অনুমোদন পাওয়াও কঠিন। যেমন হুয়াওয়ের চিপ ডিজাইন করে হাইসিলিকন। ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) হিসাবে, এটি চীনের বৃহত্তম সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি। এই চিপ তৈরি করে আবার তাইওয়ানের একটি কোম্পানি।

তা ছাড়া চিপের মৌলিক নকশার জন্য হাইসিলিকন এখনো জাপানি সফটব্যাংক মালিকানাধীন ব্রিটিশ কোম্পানি ‘আর্ম’-এর ওপর নির্ভরশীল। চিপ ডিজাইনার এ কোম্পানিও সম্প্রতি হুয়াওয়ের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে বাজার অংশীদারির দিক থেকে বৃহত্তম এ চিপ ডিজাইন কোম্পানির বিকল্প খুঁজতে হবে হুয়াওয়েকে।

চিপ ডিজাইনের দিক থেকে আর্মের পরবর্তী অবস্থানেই রয়েছে সিনোপসিস ও কাডেন্স। এ দুটিও মার্কিন কোম্পানি।

আইডিসি ও কাউন্টার পয়েন্ট রিসার্চের গবেষকরা বলছেন, বিপুল বিনিয়োগের পাশাপাশি মেধাবী জনবল এবং অংশীদার খুঁজে নিতে পারলে চীন দ্রুতই সেমিকন্ডাক্টরের বাজারে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারবে।

চীনের এ পদক্ষেপ মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য নিঃসন্দেহে দুঃসংবাদ। আইসিওয়াইজের গু ওয়েনজুন বলেন, নিজস্ব সেমিকন্ডাক্টর ইকোসিস্টেম তৈরির লক্ষ্যে চীন জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্ব দিতে পারে। ফলে এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য স্থান সংকুচিত হবে। তাতে মার্কিন কোম্পানিগুলোই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads