• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
সিন্ডিকেট দমনে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধের সিদ্ধান্ত

ছবি : সংগৃহীত

শ্রমশক্তি

সিন্ডিকেট দমনে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধের সিদ্ধান্ত

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৭ আগস্ট ২০১৮

আগামী মাস থেকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিক নেওয়া বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ।

এত দিন ধরে বাংলাদেশের ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সি ও মালয়েশিয়ার সিনারফ্ল্যাক্স নামে একটি কোম্পানি মিলে একচেটিয়াভাবে মালয়েশিয়ায় লোক পাঠাত। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো সুযোগ পেত না। এই ধরনের সিন্ডিকেট ভেঙে দিতেই মালয়েশিয়া সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

আজ সোমবার এ নিয়ে কথা হয় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে। তবে, এই সিদ্ধান্তকে একদিক থেকে ‘মন্দের ভালো’ হিসেবেই দেখছেন বেশকিছু রিক্রুটিং এজেন্সি থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট অনেকেই।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আব্দুল হাই বলেন, ‘এক হাজার ২০০ লাইসেন্স আমাদের। সেখানে ১০ জনে ব্যবসা করবে, অন্যেরা ব্যবসা করতে পারবে না। এটা অনৈতিক। এটা অবৈধ ও অনৈতিকভাবে এরা করছিল। ওখানে, মালয়েশিয়াতে মাহাথির মোহাম্মদ সাহেবের সরকার আসার পর এই অনৈতিকতা বন্ধ হয়ে যাবে- এটা তো সবারই আশা ছিল।’

‘আমি মনে করি, এটা ইতিবাচক। কারণ দ্য ভেরি বিগিনিং যখন তাঁরা এই সিন্ডিকেট করতে যাচ্ছে, তখন স্পেশালি বায়রাতে আমিই বলেছিলাম, আমরা এটা মানি না। এটা যদি এককভাবে কারো জন্য, বা কোনো গোষ্ঠীর জন্য করা হয় আমরা আন্দোলন করব’, যোগ করেন মোহাম্মদ আব্দুল হাই।

এদিকে, এমন সিন্ডিকেট ব্যবসার ব্যাপারে এক বছর আগেই সতর্ক করেছিল দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা-টিআইবি। তাদের একটি গবেষণার ফলাফলে বিষয়টি উঠে এসেছিল।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এটা আমাদের একটা সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এই বিষয়গুলো সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছিলাম পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য। এ ধরনের শংকা প্রকাশ করেছিলাম যে, এটা অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে না পারলে এই যে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে, জোগসাজশের দুর্নীতির মাধ্যমে এই খাতটাকে আপনার ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া। এই অবস্থার পরিবর্তন করা সম্ভব না হলে এ রকম একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে আমাদের শংকা ছিল।’

‘বাস্তবে কিন্তু আমাদের সেটা ঘটল। এটা একদিক থেকে উদ্বেগজনক, অন্যদিক থেকে আমি এটাকে সুযোগ হিসেবে দেখতে চাই। সরকার এটাকে সুযোগ হিসেবে ভাবা উচিত। কারণ, যে সিন্ডিকেটের দ্বারা এ বিষয়টি পরিচালিত হচ্ছিল, তারা কিন্তু সরকারের নলেজের বাইরে নয়। যদি তাই থাকে, তাহলে কেন সেখানে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারবে না- সেই প্রশ্নটা করাটা খুবই স্বাভাবিক’, যোগ করেন টিআইবির নির্বাহী।

এর আগে গত তিন বছরে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় এক লাখ শ্রমিকও পাঠানো যায়নি। সেখানে, এ বছর জানুয়ারি থেকে জুলাই- এই সাত মাসেই দেশটিতে গেছে প্রায় এক লাখ ১০ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক।

শ্রমিক নেওয়ার দিক থেকে সৌদি আরবের অবস্থান যখন এক নম্বর, তখন দুই নম্বর অবস্থানটি দখল করে নিয়েছে মালয়েশিয়া। অথচ এ রকম একটি ভালো সময়েই এলো এমন একটি ঘোষণা।

তবে, সংশ্লিষ্টরা বলছেন সিন্ডিকেট ব্যবসার মাধ্যমে দুর্নীতি যেহেতু দুই দেশেই হয়েছে, সেক্ষেত্রে দুই দেশকেই পদক্ষেপ নিতে হবে কী করে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে আবারও দ্রুত চালু করা যায় বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক নেওয়ার কার্যক্রম।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads