• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯
নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন কঠিন মিথ্যাচার করছে শ্রমিক সংগঠনগুলো

লোগো বিজিএমইএ

শ্রমশক্তি

সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ

নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন কঠিন মিথ্যাচার করছে শ্রমিক সংগঠনগুলো

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৬ অক্টোবর ২০১৮

তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য ঘোষণা করা নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে বলে মনে করছে এ খাতের উদ্যোক্তারা। বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যন্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ৮ হাজার টাকার ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন করার সক্ষমতা অনেক তৈরি পোশাক কারখানার নেই। তা ছাড়া সম্প্রতি পোশাক উৎপাদনের ব্যয় বেড়েছে। রফতানি বাজারে কমেছে দেশের পোশাকের দাম। এ অবস্থায় নতুন বেতন কাঠামো পোশাক শিল্পের জন্য সঙ্কট বয়ে আনতে পারে। গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান এ কথা বলেন। পোশাক শিল্পে ঘোষিত ন্যূনতম মজুরির প্রভাব তুলে ধরতে রাজধানীর হাতিরঝিলে বিজিএমইএ কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। এ সময় বিজিএমইএর সহসভাপতি ফারুক হাসান, মঈনুদ্দিন আহমেদ, মাহমুদ হাসান খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ন্যূনতম বেতন কাঠামো নিয়ে পোশাক শ্রমিকদের কিছু সংগঠন মিথ্যাচার করছে বলে এ সময় অভিযোগ করেন সিদ্দিকুর রহমান। পোশাক শিল্পের স্বার্থরক্ষা তথা অর্থনীতির উন্নতি ধরে রাখতে মিথ্যাচার বন্ধ করতে তিনি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, কারখানা সংস্কার, মজুরি বৃদ্ধিসহ নানা কারণে ২০১৪ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ২০০ প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। ভবিষ্যতে আরো অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন বিশাল চ্যালেঞ্জ হবে।

বিজিএমইএ সভাপতি আরো বলেন, ঘোষিত মজুরি নিয়ে দুয়েকটি শ্রমিক সংগঠন উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভুল তথ্য দিচ্ছে। পোশাক শ্রমিকদের উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করছে অনেক শ্রমিক নেতা। দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্যই নেতারা এ ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন বিজিএমইএ সভাপতি। তিনি আরো বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, পোশাক শিল্পে ন্যূনতম মজুরি নিয়ে কয়েকটি মহল থেকে বিভিন্ন রকম বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এতে জনমনে গভীর সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে।

সিদ্দিকুর রহমান আরো জানান, ২০১০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত পোশাক শিল্পে মজুরি ৩৮১ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৩ সাল থেকে প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে মজুরি বাড়ছে। উদ্যোক্তাদের ৭ হাজার টাকা সামর্থ্য থাকলেও প্রধানমন্ত্রী নিজে ৮ হাজার টাকা বেতন নির্ধারণ করেছেন। এ অবস্থায় জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন নামের সংগঠন আংশিক সত্য, বিকৃত ও ভুল তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, চার বছর ধরে গার্মেন্ট শিল্পে একটি স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে। যার জন্য আমরা আন্তর্জাতিকভাবে অভিনন্দন পাচ্ছি। তবে অনেকেই আমাদের এই উন্নতিতে খুশি হতে পারছেন না। তারা এই শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি যেকোনোভাবেই বিঘ্নিত করতে চায়। এ শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি হলে শ্রমিকরাই বেশি বিপাকে পড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ সেপ্টেম্বর দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে সরকার। এতে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয় ৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে বেসিক ৪ হাজার ১০০ টাকা; বাড়িভাড়া ২০৫০ টাকা; চিকিৎসাভাতা ৬০০ টাকা; যাতায়াত ভাতা ৩৫০ টাকা; খাদ্যভাতা ৯০০ টাকা। এর আগে সর্বশেষ ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর ৫ হাজার ৩০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করেছিল সরকার। সেই হারেই এখন বেতন পাচ্ছেন শ্রমিকরা।

অবশ্য বেশ কয়েক বছর ধরেই ন্যূনতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি করে আসছে শ্রমিকরা। এর বিপরীতে পোশাক শিল্প মালিকরা প্রস্তাব করেন ৬ হাজার ৩৬০ টাকা। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার টাকা করার পক্ষে মতামত দিয়েছিল।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads