• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
জাপানে শ্রমিক পাঠাতে  চেষ্টা করছে সরকার

জাপানে শ্রমিক পাঠাতে  চেষ্টা করছে সরকার

সংরক্ষিত ছবি

শ্রমশক্তি

তালিকায় নেই বাংলাদেশ

জাপানে শ্রমিক পাঠাতে  চেষ্টা করছে সরকার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮

জাপানে আগামী এপ্রিল মাস থেকে বিদেশি শ্রমিকদের জন্য দরজা খুললেও এ মুহূর্তে তা বাংলাদেশের জন্য বন্ধই থাকছে। তবে টোকিওর বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, এ তালিকায় নাম ওঠানোর জন্য কূটনৈতিকভাবে জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাপানের শ্রমবাজারে আমাদের জন্য একটা সম্ভাবনা আছে।

বিদেশি শ্রমিকদের জন্য দরজা খুলছে জাপান- এমন খবরে বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের মতো খুশি হয়েছিল বাংলাদেশের মানুষও। কিন্তু শ্রমিক নেওয়ার বিষয়ে যে আটটি দেশের সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছে সূর্যোদয়ের দেশটি তার তালিকায় নেই বাংলাদেশের নাম। গত ২৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জাপান টুডে জানায়, শিনজো আবের সরকার বিদেশি শ্রমিকদের জাপানে প্রবেশ সহজ করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। মূলত এশিয়ার নয়টি দেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। দেশগুলো হলো- কম্বোডিয়া, চীন, ইন্দোনেশিয়া, মঙ্গোলিয়া, মিয়ানমার, নেপাল, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন এবং ভিয়েতনাম। চুক্তি হলে এই দেশগুলোর নাগরিকদের নতুন ধরনের ভিসা দেওয়া হবে। এসব দেশগুলোর সঙ্গে ইতোমধ্যে জাপান সরকার কথা বলতে শুরু করেছে। এই বিশেষ ভিসা ব্যবস্থা আগামী এপ্রিল থেকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এসব দেশের শ্রমিকদের অবকাঠামো নির্মাণ, রেস্তোরাঁ, কৃষি এবং নার্সিংয়ের কাজে নিয়োগ করা হবে।  পরবর্তীতে ধীরে ধীরে মোট ১৪টি খাত বিদেশি শ্রমিকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। তবে এসব খাতে যারা জাপানি ভাষায় কথা বলতে পারেন এবং কোনো কাজে দক্ষতা রয়েছে তারাই প্রাথমিকভাবে সুযোগ পাবেন।

কিছুদিন আগে সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নূরুল ইসলামও বলেছিলেন, বাংলাদেশ সরকার নতুন নতুন শ্রমবাজার খোঁজার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। জাপান ও রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। 

এ ব্যাপারে অভিবাসন বিশেষজ্ঞ হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জাপানে আমাদের দেশের শ্রমবাজারের জন্য একটা সম্ভাবনা আছে। আমাদের মন্ত্রী দেশটি সফর করেছেন। তাদের আইএম জাপান এবং আমাদের বিএমইটি’র সফর বিনিময় হচ্ছে। তবে সেখানে দক্ষ শ্রমিক প্রেরণ করতে হবে। অদক্ষদের পাঠালে ২/১ বারের পরেই তারা বিষয়টি ধরে ফেলবে এবং পরে আর নেবে না।

এদিকে টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস গত ২১ ডিসেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, জাপানে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এ বিষয়ে যেকোনো তথ্য জানার জন্য সরাসরি টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস বা বাংলাদেশে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো কিংবা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, ক্রমবর্ধমান কর্মী সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি জাপানে কর্মী নিয়োগে একটি আইন পাস হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৮টি দেশ বাছাই করা হয়েছে। বাছাই করা দেশের মধ্যে বাংলাদেশের নাম নেই। এ তালিকায় বাংলাদেশের নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য কূটনৈতিকভাবে জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ ছাড়া টেকনিক্যাল নিয়োগ প্রক্রিয়া আগের মতো অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। জাপানে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে আর্থিক লেনদেন কিংবা বিভ্রান্তিকর কোনো তথ্য না ছড়ানোর জন্য টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

জাপানের শ্রম মন্ত্রণালয়ের হিসাবে গত বছরের অক্টোবরে দেশটিতে বিদেশি শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ১০ লাখ ২৮ হাজার, যা ২০১২ সালে ছিল ছয় লাখ ৮০ হাজার। অর্থাৎ, গত ছয় বছরে জাপানে বিদেশি শ্রমিকের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। এসব বিদেশি শ্রমিকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছেন চীনারা। বাকিরা হলেন, ভিয়েতনামি, ফিলিপিনো, ব্রাজিলীয় এবং নেপালি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads