• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলতে উদ্যোগ

ছবি : সংগৃহীত

শ্রমশক্তি

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলতে উদ্যোগ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১২ মে ২০১৯

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার প্রায় আট মাস ধরে বন্ধ। বাংলাদেশের জন্য বড় এ শ্রমবাজার। দেশটিতে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর আগের কর্মী নিয়োগ পদ্ধতি বাতিল করায় মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানো বন্ধ আছে।

আগে দেশের ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো হতো। এ প্রক্রিয়ায় নানামুখী অনিয়মের অভিযোগে মালয়েশিয়া সরকার নিয়োগ বন্ধ করে দেয়। পরে কর্মী নিয়োগের নতুন কোনো পদ্ধতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়নি দেশটি।

জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে আলোচনা না করলে বড় এই শ্রমবাজারটি সহসা খুলবে না।

এদিকে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ মালয়েশিয়া সফরে যাবেন। তিনি অসুস্থ স্ত্রীর পাশে সিঙ্গাপুরে আছেন। সেখান থেকে মালয়েশিয়া যাবেন। সফরকালে তিনি দেশটিতে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৪ মে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ-বিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদের বৈঠকের কথা রয়েছে। এ ছাড়া ওই বৈঠকে যোগ দিতে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ছেন প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অভিবাসী কল্যাণ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, উপসচিব (কর্মসংস্থান-৩) আবুল হোসেন। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক সেলিম রেজারও বৈঠকে থাকার কথা ছিল। কিন্তু অসুস্থতার কারণে তিনি মালয়েশিয়া যেতে পারছেন না।

জানতে চাইলে প্রবাসীকল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব আহমদ কবীর বলেন, বন্ধ শ্রমবাজার খোলার বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের জন্য প্রতিমন্ত্রী মালয়েশিয়া সফরে যাচ্ছেন। এ ছাড়া তিনি মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত প্রবাসীদের খোঁজখবরও নেবেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম কোনো সরকারের কোনো ঊর্ধ্বতন ব্যক্তি মালয়েশিয়া সফর করছেন।

প্রতিমন্ত্রীর এই সফরকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বায়রা। তারা বলছে, বৈঠকটি দুই দেশের জন্যই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়ার বন্ধ শ্রমবাজার খোলার জন্য ভূমিকা রাখবে।

এ ব্যাপারে বায়রা সভাপতি বেনজীর আহমেদ বলেন, আমরা যতটুকু আভাস পেয়েছিলাম যে, মালয়েশিয়া সরকার অপেক্ষা করছিল আমাদের কোনো মন্ত্রী সেখানে গিয়ে তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে তারা আলোচনা করে কোন পদ্ধতিতে কর্মী পাঠানো হবে, তা ঠিক করবেন। এখন প্রতিমন্ত্রী মালয়েশিয়া সফরে যাচ্ছেন। তার সঙ্গে মানবসম্পদ মন্ত্রীর যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ফলপ্রসূ হবে বলে আমরা মনে করি।

বায়রার সদস্য কল্যাণ সচিব কফিল উদ্দিন মজুমদার বলেন, মন্ত্রী পর্যায়ের এই বৈঠক ফলপ্রসূ হওয়া খুবই জরুরি। কারণ এই বৈঠকের পর বোঝা যাবে, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার কবে নাগাদ খুলতে পারে।

দেশের জনশক্তি রফতানির ৮০ শতাংশ যায় মধ্যপ্রাচ্যে। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মালয়েশিয়া বাংলাদেশের জন্য অন্যতম বড় শ্রমবাজার। কিন্তু সৌদিতে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি, আরব আমিরাতে সীমাবদ্ধতা, মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানিতে অনিয়মসহ নানা কারণে জনশক্তি রফতানি কমে এসেছে।

বিএমইটি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে বৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ৭ লাখ ৩৪ হাজার ১৮১ জন কর্মী কাজ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়েছেন। আগের বছর এটি ছিল ১০ লাখ ৮ হাজার ৫২৫ জন। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) জনশক্তি রফতানি হয়েছিল ২ লাখ ৪ হাজার ২০১ জন। এ বছর তা কমে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৬৯৯ জনে।

বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত গত বছর মালয়েশিয়াতে জনশক্তি রফতানি হয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৯২৭ জন। গত সেপ্টেম্বরের পর থেকে নতুন করে আর ভিসা দেয়নি মালয়েশিয়া। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে রফতানি হয়েছে ৩৮ হাজার ৮৬৫ জন। আর এ বছর ওই সময়ে গেছে ৫০ জনের কম।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads