• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
জালাল উদ্দিনের ওকালতির ওপর ৬ মাসের নিষেধাজ্ঞা

হাইকোর্ট

সংরক্ষিত ছবি

আইন-আদালত

জালিয়াতি

জালাল উদ্দিনের ওকালতির ওপর ৬ মাসের নিষেধাজ্ঞা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৯ মে ২০১৮

ফৌজদারি অপরাধের আসামির জামিন জালিয়াতিতে জড়িত থাকায় আইনজীবী মো. জালাল উদ্দিনের মামলা পরিচালনায় ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন হাইকোর্ট। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় ওই আইনজীবী দেশের কোনো আদালতে মামলা পরিচালনা করতে পারবেন না।

এ আদেশ দিয়ে জালিয়াতির ঘটনা তদন্ত করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গতকাল সোমবার বিচারপতি মো. শওকত হোসেন ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ তিন মামলায় জামিন জালিয়াতিতে জড়িত থাকায় অভিযুক্ত আইনজীবীর উপস্থিতিতে এ আদেশ দেন।

শুনানিতে সরকারপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সরওয়ার কাজল।

আইনজীবী মো. জালাল উদ্দিন তিনটি মামলায় কখনো জামাল উদ্দিন আবার কখনো জালাল উদ্দিন নাম ব্যবহার করেছেন। যখন জামাল নাম ব্যবহার করেছেন তখন তিনি পরিচয়পত্রের নম্বর ব্যবহার করেছেন হারুন অর রশীদ নামের এক আইনজীবীর।

গত ২৩ মে শিশু ধর্ষণের একটি মামলায় নথি জালিয়াতি করে জামিন নেওয়ায় আসামি বিল্লাল ভূঁইয়ার জামিন বাতিল করেন হাইকোর্ট। তখন আইনজীবী মো. জালাল উদ্দিনের জালিয়াতির বিষয়টি সামনে আসে।

ওইদিন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সরওয়ার কাজল জানান, গাজীপুর সদরের রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাস এলাকার নয়নপুর গ্রামের ফিরোজ মিয়ার ছেলে মো. রবিউল ইসলামকে আবেদনে তদবিরকারক হিসেবে দেখানো হয়েছে। আবেদনকারী আইনজীবী হলেন মো. জামাল উদ্দিন। কিন্তু জামাল উদ্দিনের যে পরিচয়পত্র দেখানো হয়েছে তাতে আসল আইনজীবী হচ্ছেন মো. হারুন অর রশীদ।

গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর উপজেলার শ্রীপুরে এক শিশুকে ঘর ঝাড়ু দেওয়ার কথা বলে প্রবাসফেরত প্রতিবেশী বিল্লাল ভূঁইয়া ধর্ষণ করে। বিল্লাল ভূঁইয়া একই গ্রামের মৃত রহিম উদ্দিনের ছেলে। তার স্ত্রী ও ছেলে বিদেশে থাকে। ধর্ষণের পর ঘটনা প্রকাশ না করতে হুমকি দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় শিশুটিকে। একপর্যায়ে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে শিশুটি ধর্ষণের কথা জানায় তার মাকে। শিশুটির মা ধর্ষক বিল্লাল ভূঁইয়া (৪৫), তার ভাই দুলাল ভূঁইয়ার ছেলে রুবেল ভূঁইয়া (২২) ও মৃত তাজউদ্দিনের ছেলে হেলাল উদ্দিন ভূঁইয়াকে (৪৫) আসামি করে মামলা করেন। মামলার পর থেকে বিল্লাল ভূঁইয়া পলাতক ছিল। এর মধ্যে মেডিকেল প্রতিবেদনে ধর্ষণের প্রমাণও মিলেছে। পরে ১৭ নভেম্বর এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ মামলা এখন সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে আছে।

গত ১৪ জানুয়ারি আসামি বিল্লাল আত্মসমর্পণ করে। এরপর আদালত তাকে কারাগারে পাঠান। পরে গত ২৪ এপ্রিল গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে জামিন আবেদন করে বিল্লাল। কিন্তু ওই আবেদনটি খারিজ হয়ে যায়। এরপর গত ৯ মে মামলার নথি জালিয়াতি করে হাইকোর্ট থেকে জামিন নেয় আসামি বিল্লাল। হাইকোর্টে দাখিল করা ওই জালিয়াতের জামিন আবেদনে উল্লেখ করা হয়, মেয়েটির বয়স ২১ (প্রকৃত বয়স ১০ বছর)। দুজন একে অন্যকে ভালোবাসে। মেয়ের মা পছন্দ করেন না বলে মামলা করেছে। ধর্ষণের ঘটনাও ঘটেনি। মেডিকেল প্রতিবেদনে ধর্ষণের প্রমাণ নেই। হাইকোর্ট থেকে জামিন নেওয়ার পর তা বিচারিক আদালতে জমা দেওয়া হলে সেখানে জালিয়াতির বিষয়টি নজরে আসে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads