• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
শহিদুলের মানসিক নির্যাতনের প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ

আলোকচিত্রী ও দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলম

সংরক্ষিত ছবি

আইন-আদালত

শহিদুলের মানসিক নির্যাতনের প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১০ আগস্ট ২০১৮

আলোকচিত্রী ও দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলমকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে কি না, পরীক্ষা করে বিচারিক আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে স্বরাষ্ট্র সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ২০১৩ সালের নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের ২(৬) ধারা অনুসারে এ পরীক্ষা শেষে আগামী সোমবারের মধ্যে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে ওই প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

রিমান্ডের বৈধতা চ্যালেঞ্জ ও হাসপাতালে নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে শহীদুল আলমের স্ত্রী রেহনুমা আহমেদের করা রিট আবেদনের নিষ্পত্তি করে গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি ইকবাল কবির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে শহিদুল আলমের পক্ষে শুনানি করেন সারা হোসেন। সঙ্গে ছিলেন ড. কামাল হোসেন, ড. শাহদীন মালিক ও জ্যেতির্ময় বড়ুয়া। সরকার পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

শুনানিতে সারা হোসেন আদালতকে বলেন, ‘শহিদুল আলমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে যে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে, সেখানে চারজন চিৎিসকের নাম আছে। তবে তাদের মধ্যে কোনো মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন না। অথচ হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের ২(৬) ধারায় ‘নির্যাতন’ এর অর্থ কষ্ট হয় এমন ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনকে বোঝায়। এজন্য আমরা তার মানসিক অবস্থাও পরীক্ষার আবেদন জানাচ্ছি।’

অ্যাটর্নি  জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘এই রিট চলমানযোগ্য নয়। তাকে সঠিকভাবেই আটক করে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। তিনি কোনো ভিকটিম নন যে এই রিট চলতে পারে।’ এ সময় একটি মোবাইল ফোনে ধারণ করা ডিবি কার্যালয়ে স্বাভাবিকভাবে শহিদুল আলমের হাঁটা-চলার ভিডিও আদালতে উপস্থাপন করা হয়।

এরপর সারা হোসেন আদালতকে বলেন, ‘তার মুখে ঘুষি মারা হয়েছে। তার নাকের চারপাশে কী অবস্থা তা পরীক্ষা করে শারীরিক অবস্থা নির্ধারণ প্রয়োজন। এ ছাড়া মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে।’

এরপর আদালত রিট আবেদনটি নিষ্পত্তি করে আদেশ দেন। আদেশে আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে শহিদুল আলমের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন আদালত। আইনজীবী সারা হোসেন তখন বলেন, ‘এর মধ্যে তো রিমান্ড শেষ হয়ে যাবে। রিমান্ড শেষ হওয়ার আগেই তার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখতে চাই।’

এরপর এক দিন এগিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সোমবার দিন নির্ধারণ করেন। গত মঙ্গলবার হাইকোর্টের একই বেঞ্চ শহিদুল আলমকে হাসপাতালে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। নির্দেশ অনুসারে গত বুধবার তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নেওয়ার পর সেখান থেকে আবার ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়। বিএসএমএমইউ চিকিৎসকদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ‘অস্বাভাবিক কিছু খুঁজে পাওয়া যায়নি’।

এর আগে সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শহীদুল আলমের বিষয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে সরকারের করা আবেদনের শুনানি ১৩ আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি করেন। গত বুধবার সরকার স্থগিতের এ আবেদন করে। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads