• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
একটিতে খালেদার জামিনের মেয়াদ ফের বেড়েছে অন্যটিতে জামিন

বিএনপি চেয়ার পারসন বেগম খালেদা জিয়া

সংরক্ষিত ছবি

আইন-আদালত

কুমিল্লার মামলা জামিন নিষ্পত্তির নির্দেশ

একটিতে খালেদার জামিনের মেয়াদ ফের বেড়েছে অন্যটিতে জামিন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৪ আগস্ট ২০১৮

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ডাদেশের মামলায় বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়িয়েছেন হাইকোর্ট। নড়াইলে মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যে মানহানির মামলায় হাইকোর্টে ছয় মাসের জামিন পেয়েছেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাসে পেট্রল বোমা মেরে আট যাত্রীকে হত্যার ঘটনায় করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের নাশকতার মামলা এক সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকার আদালতে করা মানহানির মামলায় জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন তার আইনজীবীরা।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার খালাসের আপিলের শুনানি চলছে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে। এ বেঞ্চে জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আরজি পেশ করলে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত তা বাড়ানোর আদেশ দেন আদালত। এই নিয়ে ছয় দফায় জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হলো। গত ৮ আগস্ট এক আদেশে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। এ মামলার আপিলের শুনানি আগামী ১ অক্টোবর পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন আবদুর রেজ্জাক খান ও এ জে মোহাম্মদ আলী। সঙ্গে ছিলেন নওশাদ জমির। এ ছাড়া শুনানিতে খালেদা জিয়ার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জয়নুল আবেদীন, মাহবুব উদ্দিন খোকন, এ কে এম এহসানুর রহমান। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

এ মামলায় গত ১২ মার্চ খালেদা জিয়াকে চার মাসের অন্তর্বর্তী জামিন দেন হাইকোর্ট। গত ১২ জুলাই জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করে ১৯ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। এরপর ১৯ জুলাই জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ২৬ জুলাই পর্যন্ত জামিন দেন আদালত। ২৬ জুলাই জামিনে মেয়াদ বাড়িয়ে ৩১ জুলাই করা হয়। এরপর জামিনের মেয়াদ ৮ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ওইদিন আবার ১৩ আগস্ট পর্যন্ত পঞ্চম দফায় জামিনের মেয়াদ বাড়ান আদালত।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ঢাকার ৫ম বিশেষ জজ আদালত খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে গত ২০ ফেব্রুয়ারি আপিল আবেদন করেন খালেদা জিয়া। দুদিন পর আপিল গ্রহণ করে বিচারিক আদালতের দেওয়া জরিমানার রায় স্থগিত করা হয়। পরবর্তী সময়ে গত ১২ মার্চ খালেদা জিয়াকে চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন হাইকোর্ট। জামিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও সরকার আপিল করলে গত ১৬ মে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের বেঞ্চ তা খারিজ করে দেন। তবে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার আপিল নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর গত ১২ জুলাই থেকে খালেদার আপিলের শুনানি শুরু হয়। এর মধ্যে গত ৩১ জুলাই আপিল বিভাগ আপিল নিষ্পত্তির মেয়াদ ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বৃিদ্ধ করেন।

এ মামলার দণ্ডিত কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমদের করা আপিলের শুনানি হবে। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার সাজা বাড়াতে দুদকের একটি রিভিশন আবেদন রয়েছে।

নড়াইলের মানহানি মামলায় জামিন 

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে নড়াইলে করা মানহানির মামলায় খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল সোমবার বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি কাশেফা হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ জামিন আদেশ দেন।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন এ জে মোহাম্মদ আলী। সঙ্গে ছিলেন কায়সার কামাল ও এ কে এম এহসানুর রহমান। সরকার পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কামরুল ইসলাম খান আসলাম।

গত ৫ আগস্ট নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালত খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। সেখানে জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা।

২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশে খালেদা জিয়ার বক্তব্যে স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে বলে মন্তব্য করেন। ওই বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে নড়াইলের কালিয়ার চাপাইল গ্রামের রায়হান ফারুকী ইমাম দুদিন পর ২৪ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নড়াইল সদর আমলি আদালতে মামলা করেন। ২০১৬ সালের ২৩ আগস্ট খালেদা জিয়াকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। নির্ধারিত সময়ে খালেদা জিয়া আদালতে হাজিরা না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

কুমিল্লায় জামিন আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নাশকতার মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন সাত দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের লিখিত আদেশের অনুলিপি প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে কুমিল্লার বিচারিক আদালতকে এ আদেশ অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।

জামিন চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদন নিষ্পত্তি করে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এ মামলায় আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন খন্দকার মাহবুব হোসেন। সঙ্গে ছিলেন মো. মাসুদ রানা। সরকার পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. বশির উল্লাহ।

আদেশ অনুযায়ী কুমিল্লার আদালতে খালেদা জিয়াকে আবারো জামিন আবেদন করতে হবে।

২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুরে একটি বাসে পেট্রল বোমা ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। এতে দগ্ধ হয়ে আট যাত্রী মারা যান। আহত হন ২০ জন। এ ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুজ্জামান বাদী হয়ে পরদিন ৭৭ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন।

ঢাকার মানহানি মামলায় জামিন আবেদন

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগে করা মানহানির মামলায় হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন খালেদা জিয়া। গতকাল সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তার আইনজীবীরা এ আবেদন করেন। বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি কাশেফা হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হবে। তার আইনজীবী এ কে এম এহসানুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন। গত ৭ আগস্ট ঢাকার একটি আদালত এই মানহানির মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন নামঞ্জুর করেন। এর প্রেক্ষিতে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করলেন তার আইনজীবীরা।

২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী মানহানির অভিযোগে মামলাটি করেন।

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads