• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
খালেদার বিচারের আয়োজন জেলে

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া

সংরক্ষিত ছবি

আইন-আদালত

জিয়া চ্যারিটেবল মামলা

খালেদার বিচারের আয়োজন জেলে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার বিচার কার্যক্রম কারাগারেই বসছে। নির্ধারিত শুনানি বারবার পিছিয়ে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরিত্যক্ত কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের সাত নম্বর কক্ষে বসবে এ বিচার। গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কারাবন্দি হওয়ার পর থেকে আদালতে হাজির করতে না পারায় শুনানি পিছিয়ে যাচ্ছিল। কারা কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে তাকে নির্ধারিত দিনে আদালতে হাজির না করায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলেছেন, কারাগারে আদালত বসানো আইনের পরিপন্থি।

গতকাল মঙ্গলবার আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বকশীবাজারে সরকারি আলিয়া মাদরাসার ও সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মাঠের এলাকাটি জনাকীর্ণ থাকে। সেজন্য নিরাপত্তাজনিত কারণে ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ আদালত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের ৭ নম্বর কক্ষকে আদালত হিসেবে ঘোষণা করা হল। বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন বিশেষ মামলা নম্বর ১৮/২০১৭-এর বিচার কার্যক্রম পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের কক্ষ নম্বর ৭-এর অস্থায়ী আদালতে অনুষ্ঠিত হইবে।’

আজ বুধবার এ মামলার যুক্তিতের্কর দিন ধার্য রয়েছে। এরই মধ্যে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে আদালতের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। কারাগারের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, পুরনো কারাগারের দাফতরিক কার্যালয়ে আদালতের অবকাঠামো প্রস্তুত করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতের অবকাঠামো দেখে এসেছেন।

তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘গত ছয় মাস ধরে চ্যারিটেবল মামলার কোনো কার্যক্রম করতে পারছি না। এ কারণে আমরা বলেছি, খালেদা জিয়া যেখানে আছেন সেখানেই আদালত বসানো প্রয়োজন। আমরা বলার পর কারাগারে আদালত স্থাপনের প্রজ্ঞাপন জারির সম্ভাবনা আছে। প্রজ্ঞাপন হলে আগামীকাল (আজ বুধবার) থেকে কারাগারে আদালতের কার্যক্রম বসবে।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘এটা প্রকাশ্য আদালত। জনগণ ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে, তার আইনজীবীদের উপস্থিতিতে এ মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালনা হবে। ফৌজদারি কার্যবিধির বিধানমতে এ আদালত হচ্ছে।’

এদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেছেন, কারাগারের ভেতর স্থাপিত আদালতে বিচার করার বিষয়টি তারা জানেন না। যদি কারাগারের ভেতর আদালত করা হয় তবে সেটা হবে আইনের পরিপন্থি।

সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ও খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী আবদুর রেজ্জাক খান বলেন, কারাগার কখনো প্রকাশ্য আদালত বলে বিবেচিত হতে পারে না। সংবিধান অনুযায়ী বিচার হতে হবে প্রকাশ্য আদালতে। তিনি জানান, বাংলাদেশে সামরিক আইনে কারাগারের ভেতর কর্নেল তাহেরের বিচার হয়েছিল। আর পাকিস্তান আমলে একজন রাজনীতিকের মামলার বিচার কারাগারের ভেতরের আদালতে হয়েছিল।

সর্বশেষ গত ৭ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জামিন দিয়েছিলেন আদালত। ওই দিন যুক্তিতর্ক শুনানির দিনে খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় তাকে আদালতে হাজির করেননি কারা কর্তৃপক্ষ।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। খালেদা জিয়া ছাড়া অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব ড. জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads