• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
১৭ জনের ক্ষতিপূরণের রায় আপিলে বহাল

হাইকোর্ট

ছবি : সংগৃহীত

আইন-আদালত

১৭ জনের ক্ষতিপূরণের রায় আপিলে বহাল

চুয়াডাঙ্গায় ভুল চিকিৎসায় চোখ হারানো

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৬ নভেম্বর ২০১৮

ভুল চিকিৎসায় চোখ হারানো চুয়াডাঙ্গার ১৭ জনের প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের  রায় স্থগিতের আবেদনে সাড়া না দিয়ে ‘নো অর্ডার’ আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফলে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার হাইকোর্টের রায় বহাল থাকল। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন। গতকালের এ আদেশের ফলে এখন ওষুধ বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান আইরিশ কোম্পানিকেও ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা করে পরিশোধ করতে হবে। এর আগে ক্ষতিপূরণের ৫ লাখ টাকা করে পরিশোধ করে ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আদালতে আইরিশ কোম্পানির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শ ম রেজাউল করিম। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত।

গত ১১ নভেম্বর ওষুধ বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান আইরিশ কোম্পানি হাইকোর্টের রায় স্থগিতের আবেদন করলে চেম্বার জজ বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান আবেদনটি স্থগিত না করে আপিল শুনানির জন্য বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।  গত ২১ অক্টোবর এক রায়ে চুয়াডাঙ্গার চোখ হারানো ১৭ জনের প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা শহরের ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারকে ৫ লাখ এবং ওষুধ আমদানি ও বাজারজাতকরণ প্রতিষ্ঠান আইরিশ কোম্পানিকে পাঁচ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। রায় প্রকাশের পর এক মাসের মধ্যে এই অর্থ পরিশোধ করতে বলা হয়। এ ছাড়া ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে তা তদারক করতে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেন আদালত। রুল নিষ্পত্তি করে ওইদিন বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ রায় দেন। গত ১৩ নভেম্বর চেকের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা করে পরিশোধ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে আইরিশ কোম্পানি। ওই আপিলের বিরুদ্ধে গতকাল ‘নো অর্ডার’ আদেশ দেন আপিল বিভাগ।

জনস্বার্থে দায়ের করা একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় চক্ষুশিবিরে অস্ত্রোপচারে চোখ হারানো ২০ জন ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেককে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না মর্মে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে যথাযথ নিরাপদ ব্যবস্থা নিশ্চিত না করে অস্ত্রোপচার করায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না— জানতে চাওয়া হয়। এ ছাড়া ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের চক্ষুশিবিরে অস্ত্রোপচারে কার্যকর, পর্যাপ্ত নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত বলে ঘোষণা করা হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়।

গত ২৯ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত ‘চক্ষুশিবিরে গিয়ে চোখ হারালেন ২০ জন!’ শিরোনামের খবর সংযুক্ত করে জনস্বার্থে রিট আবেদন করেন আইনজীবী অমিত দাসগুপ্ত।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, চুয়াডাঙ্গার ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে তিন দিনের চক্ষুশিবিরের দ্বিতীয় দিন ৫ মার্চ ২৪ জন নারী-পুরুষের চোখের ছানি অপারেশন করা হয়। অপারেশনের দায়িত্বে ছিলেন চিকিৎসক মোহাম্মদ শাহীন। অপারেশনের পর বাড়ি ফিরে কারো বিকালে, কারো সন্ধ্যায়, কারো বা রাত থেকে চোখে জ্বালা-যন্ত্রণা ও পানি ঝরতে শুরু করে। পরদিনই তারা যোগাযোগ করেন ইম্প্যাক্ট হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে নামমাত্র চিকিৎসা দিয়ে তাদের বিদায় করে। পরবর্তী পর্যায়ে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর দেখা যায়, ৫ মার্চের ওই অস্ত্রোপচারের ফলে ১৯ জনের চোখের ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। পরে সেখানে তাদের একটি করে চোখ তুলে ফেলতে হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads