• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
সাত খুন মামলা : হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

সংগৃহীত ছবি

আইন-আদালত

সাত খুন মামলা : হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৯ নভেম্বর ২০১৮

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে।

আজ সোমবার হাইকোর্টের ওয়েবসাইটে নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের ঘটনায় আনা দুই মামলায় ১ হাজার ৫৬৪ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশ করা হয়। রায় প্রদানকারী বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম রায়ে সই করেন।

নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২৬ আসামির মধ্যে নূর হোসেন, তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, আরিফ হোসেনসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে গত বছরের ২২ আগস্ট রায় ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। চাঞ্চল্যকর এ মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদন্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেছিলেন।

মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা আসামিরা হলেন-সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, সাবেক কোম্পানি কমান্ডার মেজর (অব.) আরিফ হোসেন, লে. কমান্ডার (চাকরিচ্যুত) এম মাসুদ রানা, ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেন, হাবিলদার মো. এমদাদুল হক, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হিরা মিয়া, সিপাহি আবু তৈয়ব, কনস্টেবল মো. শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্ণেন্দু বালা, সৈনিক (চাকরিচ্যুত) আবদুল আলিম, সৈনিক (বরখাস্ত) মহিউদ্দিন মুন্সি, সৈনিক (চাকরিচ্যুত) আল আমিন শরিফ ও সৈনিক (চাকরিচ্যুত) তাজুল ইসলাম। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে আসামী মহিউদ্দিন মুন্সি, আল আমিন শরিফ ও তাজুল ইসলাম পলাতক।

মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমে যাদের যাবজ্জীবন হয়েছে তারা হলেন- সৈনিক আসাদুজ্জামান নুর, সার্জেন্ট (চাকরিচ্যুত) এনামুল কবীর, নূর হোসেনের সহযোগী মুর্তুজা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দিপু অরফে মিজান, মো. রহম আলী, মো. আবুল বাসার, সেলিম, মো. সানাউল্লাহ ওরফে ছানা (পলাতক), ম্যানেজার শাহজাহান (পলাতক) ও জামাল উদ্দিন।

এ মামলার ৩৫ জন আসামির মধ্যে হাইকোর্ট ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল, ১১ আসামির সাজা পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বিচারিক আদালতের দেয়া কারাদণ্ড বহাল রেখে রায় দিয়েছে।

চাঞ্চল্যকর সাত খুনের মামলায় সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেন ও র‌্যাবের বরখাস্তকৃত তিন কর্মকর্তাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন রায় দেয়। এ মামলার ৩৫ জন আসামির মধ্যে বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

নয়জনের মধ্যে বিচারিক আদালত কর্পোরাল রুহুল আমীনকে ১০ বছর, এএসআই বজলুর রহমানকে ৭ বছর, হাবিলদার নাসির উদ্দিনকে ৭ বছর, এএসআই আবুল কালাম আজাদকে ১০ বছর, সৈনিক নুরুজ্জামান ১০ বছর, কনস্টেব বাবুল হাসানকে ১০ বছর, কর্পোরাল (পলাতক) মো. মোখলেছুর রহমানকে অপহরণের দায়ে ১০ বছর, এএসআই কামাল হোসেন (পলাতক) অপহরণের দায়ে ১০ বছর, কনস্টেবল হাবিবুর রহমানকে অপহরণের দায়ে ১০ বছর ও আলামত সরানোর দায়ে ৭ বছর কারাদন্ড দেয়। এ দন্ড আজ হাইকোর্টও বহাল রাখে।

বিচারিক আদালতের ১৬৩ পাতার পূর্ণাঙ্গ রায় গত বছর ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত হয়। ওইদিনই পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি, জুডিশিয়াল রেকর্ড, সিডিসহ বিভিন্ন নথিপত্র (ডেথ রেফারেন্স) হাইকোর্টে পৌঁছে দেয় বিচারিক আদালত।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে ওঠে ছয়টি লাশ। পরদিন মেলে আরেকটি লাশ। নিহত অন্যরা হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম।

ঘটনার এক দিন পর কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বাদী হয়ে নূর হোসেনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads