• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
 আটকে গেল বিএনপির পাঁচ প্রার্থিতা

বিএনপি লোগো

সংগৃহীত ছবি

আইন-আদালত

আদালতের আদেশ

আটকে গেল বিএনপির পাঁচ প্রার্থিতা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮

শেষ পর্যন্ত আটকেই গেল বিএনপির চার প্রার্থীর প্রার্থিতা। হাইকোর্টের আদেশ সুপ্রিম কোর্ট বহাল রাখায় অনিশ্চিত হয়ে গেছে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা।  সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৭ বিচারপতির বেঞ্চ চেম্বারের দেওয়া ইতঃপূর্বের আদেশ বাতিল করে হাইকোর্টের আদেশই বহাল রাখেন। প্রার্থীরা হলেন বগুড়া-৩ আসনে আদমদিঘী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিএনপির প্রার্থী আবদুল মোহিত তালুকদার, বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনের প্রার্থী সরকার বাদল এবং ঢাকা-২০ আসনের বিএনপি প্রার্থী তমিজ উদ্দিন। এদিকে মানিকগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপি প্রার্থী আফরোজা খানম রিতার এক আবেদনের ‘নো-অর্ডার’ করেছেন সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে তিনিও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী। এ ছাড়া হাইকোর্টের আদেশে আটকে গেলেন ধানের শীষের প্রার্থী আবদুল হান্নান। চাঁদপুর-৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হান্নানের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে ইসির দেওয়া সিদ্ধান্ত গতকাল স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

আদালত সূত্র জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-২০ আসনে বিএনপি প্রার্থী তমিজ উদ্দিনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের ওপর চেম্বার আদালত যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্ট সেটি স্থগিত করে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। একইভাবে বগুড়া-৩ আসনে আদমদিঘী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিএনপির প্রার্থী আবদুল মোহিত তালুকদার ও বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনের বিএনপি প্রার্থী শাহজাহানপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরকার বাদলের মনোনয়নপত্র অবৈধ করে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের আদেশের ওপর চেম্বার আদালতের স্থগিতাদেশ চলমান রাখেন আপিল বিভাগ। এ কারণে উপজেলা পরিষদের উক্ত তিন চেয়ারম্যান আর নির্বাচন করতে পারছেন না বলে তাদের আইনজীবীরা নিশ্চিত করেছেন। চেয়ারম্যানদের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী ও প্রবীর নিয়োগী। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

যে কারণে বাতিল হলো তমিজ উদ্দিনের মনোনয়ন : ধামরাই উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে তমিজ উদ্দিনের পদত্যাগপত্র গ্রহণের আগেই তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা ২ ডিসেম্বর তা বাতিল করেন। এর বিরুদ্ধে তিনি আপিল করলে ইসি ৬ ডিসেম্বর আপিল মঞ্জুর করে প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করে। এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করেন একই আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী বেনজীর আহমেদ। ১১ ডিসেম্বর বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ তমিজ উদ্দিনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে গত বুধবার (১২ ডিসেম্বর) চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে শুনানির জন্য গত বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানোর আদেশ দেন।

মোহিত ও সরকার বাদলের প্রার্থিতা বাতিল যে কারণে : উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ না করায় বগুড়া-৩ আসনে আদমদিঘী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিএনপির প্রার্থী আবদুল মোহিত তালুকদার ও বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনের বিএনপির প্রার্থী শাহজাহানপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরকার বাদলের মনোনয়নপত্র বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। প্রার্থিতা ফেরত চেয়ে রিট করেন তিনি। হাইকোর্ট গত ৯ ডিসেম্বর পৃথক রিটের শুনানি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। পরে এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে নির্বাচন কমিশন। আপিল বিভাগের চেম্বার জাস্টিস হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। একই সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানোর আদেশ দেন। গতকাল সোমবার পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ চেম্বার জাস্টিসের আদেশ বহাল রাখেন।

‘নো-অর্ডার’-এ আটকে গেলেন রিতা : এদিকে মানিকগঞ্জ-৩ আসনের প্রার্থী আফরোজা খানম রিতার এক আবেদনের ‘নো-অর্ডার’ করেছেন সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে তিনিও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী। রিতার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি। সোনালি ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট কাজী আকতার হামিদ। আদালত সূত্র জানায়, ঋণখেলাপির অভিযোগ এনে আফরোজা খানম রিতার বিরুদ্ধে রিট করে সোনালী ব্যাংক। গত ১২ ডিসেম্বর এ রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের ডিভিশন বেঞ্চ তার মনোনয়নপত্র বৈধতার ওপর স্থগিতাদেশ দেন। ফলে তার ভোটের পথ আটকে যায়। এর বিরুদ্ধে তিনি আপিল করলে গতকাল আপিল বিভাগ ‘নো-অর্ডার’ করেন। বিএনপির প্রার্থী আফরোজা খানম রিতার বাবা সাবেক মন্ত্রী হারুনুর রশীদ খান মুন্নু মারা যাওয়ায় এবার বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন আফরোজা খানম রিতা। তিনি মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি।

ঋণ খেলাপিতে আটকে গেলেন ধানের শীষের প্রার্থী হান্নান : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আবদুল হান্নানের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে ইসির দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এই আদেশের ফলে আবদুল হান্নানের মনোনয়নপত্র আর টিকল না। ঋণ খেলাপির অভিযোগে সোনালী ব্যাংকের করা রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আবদুল হান্নানের মনোনয়নপত্র স্থগিত করেন। আদালতে আজ সোনালী ব্যাংকের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট হোসনে আরা। চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads