• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
নুসরাত হত্যা মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেওয়ার দাবি

নুসরাত হত্যার বিচারের দাবিতে মহিলা পরিষদের মানববন্ধন

সংরক্ষিথ ছবি

আইন-আদালত

নুসরাত হত্যা মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেওয়ার দাবি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৩ এপ্রিল ২০১৯

ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা, তার নির্যাতনকারী ও এ ঘটনায় ইন্ধনদাতাদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারের দাবি জানানো হয়েছে। এর মাধ্যমে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডও নিশ্চিত করার জোর দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টায় এ কর্মসূচি শুরু হয়ে বেলা পৌনে ১২টায় শেষ হয়। রাজপথে একযোগে এ কর্মসূচি পালন করে নিরাপদ বাংলাদেশ চাই, নিরাপদ নোয়াখালী চাই, মুসলিম সাপোর্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ মাইনোরিটি সংগ্রাম পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন।

মানববন্ধনে বলা হয়, অন্য ঘটনার মতো নুসরাত হত্যার বিচার যাতে ঝুলে না যায়। এর বিচার ঝুলে যেতে দেওয়া হবে না। হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।

এ সময় বৃহত্তর নোয়াখালী সমিতি ঢাকার সিনিয়র সেক্রেটারি জেনারেল মনোয়ার হোসেন তৌফিক বলেন, ‘সরকার চাইলেই নুসরাতের হত্যাকারীদের বিচার করা সম্ভব। আমি সরকারকে অনুরোধ করছি, এর বিচার করুন। না-হলে নোয়াখালীবাসী আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে এ বিচার নিশ্চিত করতে বাধ্য করবে।’

ওয়াসিম এমদাদ নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রচলিত আইনের মাধ্যমে নুসরাতের হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা আছে বলেই আজকে আমরা মানববন্ধন করছি। না-হলে নুসরাতের হত্যাকারী এখন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারত না, নোয়াখালীবাসী বেঁচে থাকতে দিত না ওই হত্যাকারীকে।’

সরকারের সমালোচনা করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার ঢাকা মহানগরের সাহিত্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক মো. মিনহাজুল আবেদিন বলেন, ‘অত্যন্ত ভারাক্রান্ত মনে বলতে ইচ্ছে করছে, আজকে নিজেকে বাংলাদেশি বলে পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করছি, নিজেকে দেশের নাগরিক বলে পরিচয় দিতে লজ্জা লাগছে। কারণ আমরা এমন একটা দেশে বসবাস করছি, যে দেশে শিক্ষকের কাছে ছাত্রী হেফাজত নয়। এ দেশে মানুষদের জানমাল নিরাপদ নয়। একটার পর একটা অবাক করা ঘটনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। প্রতিদিন কোনো না কোনো বিষয়ে মানববন্ধন হচ্ছে, আন্দোলন হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের সরকার কোনো বিষয়ে কর্ণপাত করেছে? আমরা দেখি নাই, একটা বিষয়েরও সরকার বিচার করেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি সরকারকে ও সরকারের দায়িত্বশীলদের উদ্দেশে বলতে চাই, এ ঘটনা আপনাদের পরিবারে ঘটলে নিশ্চয় আপনারা চুপ করে থাকতেন না। এ ঘটনা আজকে যেখানে ঘটেছে, কালকে যে আরেকজনের ঘরে ঘটবে না, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই সরকারকে বলতে চাই, মেহেরবানি করে এ দেশের মানুষের প্রতি একটু লক্ষ করুন।’

নুসরাত হত্যার বিচারের দাবিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার দুই শতাধিক ব্যক্তি অংশ নেন।

নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিমের পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা বিরুদ্ধে নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা করেন।

এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। এর মধ্যে ৬ এপ্রিল (শনিবার) সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় তাকে কৌশলে একটি বহুতল ভবনে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।

পাঁচ দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (১০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যান নুসরাত। বৃহস্পতিবার গ্রামের বাড়িতে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads