• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
সুবর্ণচরে ধর্ষণের পরিবর্তে আত্মহত্যার মামলা 

ছবি : সংগৃহীত

আইন-আদালত

হাইকোর্টের প্রশ্ন

সুবর্ণচরে ধর্ষণের পরিবর্তে আত্মহত্যার মামলা 

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৭ এপ্রিল ২০১৯

হাইকোর্ট সুবর্ণচর উপজেলার চরমাকসুমুল গ্রামে ধর্ষণের পর এক গৃহবধূর বিষপানে আত্মহত্যার ঘটনায় ধর্ষণ মামলা না করে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

এ নিয়ে এক রিট আবেদনের শুনানিতে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ প্রশ্ন তোলেন। একই সঙ্গে একের পর এক ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে আদালত বলেন, আমাদের নৈতিক অবক্ষয় দেখা দিয়েছে। এজন্য ছাত্র-শিক্ষক, অভিভাবক, প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও রাজনীতিবিদদের সচেতন হতে হবে।

হাইকোর্ট ওই গৃহবধূর ধর্ষণের পর বিষপানে আত্মহত্যার ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না এবং ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ মীমাংসার নামে তথাকথিত সালিশি বৈঠক কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।

এলজিআরডি মন্ত্রণালয় সচিব, নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক, সুবর্ণচরের ওসি, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুনতাসীর মাহমুদ রহমান। গত ৪ মার্চ আইনজীবী মুনতাসীর মাহমুদ রহমান সুবর্ণচরের গৃহবধূর ধর্ষণ নিয়ে একটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে এক গৃহবধূ বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে পরিবারের দাবি, স্বামীর সঙ্গে স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন তিনি। পরে বিষপান করে আত্মহত্যা করেন তিনি। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১ মার্চ রাতে ইউনিয়নের চর মাকসুমুল গ্রামে ধর্ষণের ঘটনার পর ২ মার্চ সকালে ওই গৃহবধূ বিষপান করেন। পরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এতে আরও বলা হয়, মৃত গৃহবধূর পারিবারিক সূত্র জানায়, রাতে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে একই এলাকার আলাউদ্দিন ঘরে ঢুকে ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। এর মধ্যে স্বামী সোহাগ বাড়িতে এসে স্ত্রীর চিৎকার শুনতে পান এবং বিষয়টি বুঝতে পেরে আশপাশের লোকজন ডেকে আলাউদ্দিনকে আটক করে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, একপর্যায়ে পাশের ওয়ার্ডের নুরু মেম্বারসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ওই রাতেই ধর্ষককে মারধর এবং ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেন। পরদিন সকালে ওই গৃহবধূ বিষপান করলে তাকে পরিবারের লোকজন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।

এরপর ওই গৃহবধূর বাবা ধর্ষণ মামলা দায়ের না করে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু ধর্ষণের অভিযোগে মামলা না করে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads