• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
বাজারে থাকা দুধ ও দইয়ের তালিকা চান হাইকোর্ট

ছবি : সংগৃহীত

আইন-আদালত

বাজারে থাকা দুধ ও দইয়ের তালিকা চান হাইকোর্ট

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৪ জুন ২০১৯

ঢাকার বাজারে কতগুলো কোম্পানির তরল দুধ আছে দুই সপ্তাহের মধ্যে তার তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)-কে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করার নির্দেশ দিয়ে আগামী ১৫ জুলাই শুনানির পরবর্তী তারিখ রেখেছেন আদালত। গতকাল রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

শুনানির শুরুতেই আদালত বিএসটিআই’র আইনজীবী সরকার এম আর হাসান ও কর্মকর্তা নুরুল ইসলামের বক্তব্য শোনেন। তারা বলেন, পাস্তুরিত দুধ ও দইয়ের ১৮টি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দিয়েছে বিএসটিআই। এগুলোর মান ঠিক থাকছে কি না তা দেখভাল করার দায়িত্ব বিএসটিআই’র। এর বাইরে কারা দুধ ও দইয়ের ব্যবসা করছে বা বাজারজাত করছে তা দেখার দায়িত্ব বিএসটিআই’র নয়। বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার তখন বলেন, লাইসেন্সপ্রাপ্তগুলো দেখার দায়িত্ব যদি আপনাদের হয় তাহলে লাইসেন্স ছাড়া যেগুলো আছে সেগুলোও দেখার দায়িত্ব আপনাদের। আপনাদের বক্তব্য এফিডেভিট আকারে আদালতে দাখিল করেন।

বিএসটিআই’র আইনজীবী দাবি করেন, ঢাকায় অভিজাত দোকানগুলোতে (সুপার শপগুলোতে) এই ১৮টি ছাড়া অনিবন্ধিত কোনো কোম্পানির দুধ বা দই বিক্রি হয় না। বিচারক জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের জাতীয় নিরাপদ খাদ্য গবেষণাগারের (এনএফএসএল) প্রধান ডা. শাহলীনা ফেরদৌসীর প্রতিবেদন দেখিয়ে বলেন, গুলশানের অভিজাত দোকানগুলোতে লাইসেন্সবিহীন কোম্পানির দুধ বিক্রির কথাও উল্লেখ রয়েছে। সুতরাং আইনজীবীর ওই বক্তব্য সঠিক নয়। মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার আপনাদের কে দিয়েছে! লাইসেন্স নেই অথচ দুধ বাজারজাত করছে। এটা দেখার দায়িত্ব কার? বিএসটিআই’র আইনজীবী বলেন, এটা দেখার দায়িত্ব কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের।

দুদকের আইনজীবী মামুন মাহবুব ও রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন বলেন, আইনে বিএসটিআইকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তারা দায়িত্ব এড়িয়ে অন্যর ওপর দোষ চাপাচ্ছে। এরপর বিএসটিআই’র আইনজীবী অনিবন্ধিত কোম্পানির দুধ ও দই ধ্বংস করার আদেশ চান আদালতের কাছে। বিচারক সে সময় বলেন, আপনারা স্ববিরোধী কথা বলছেন। একটু আগে বললেন, দেখার দায়িত্ব আপনাদের না, এখন ধ্বংস করার আদেশ চাইছেন- এসব বাদ দিন। আগে তালিকা দাখিল করুন। বাকিটা আদালত দেখবে।

এরপর আদালত দুই সপ্তাহের মধ্যে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত কোম্পানির তালিকা দাখিলের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের জাতীয় নিরাপদ খাদ্য গবেষণাগারের (এনএফএসএল) প্রধান ঢাকা মেডিকেল কলেজের বায়ো কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শাহলীনা ফেরদৌসীকে কোনো রকম বিরক্ত না করতে বিএসটিআই, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষসহ সরকারি সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেন আদালত।

প্রসঙ্গত, সারা দেশ থেকে দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য পণ্যের ৩০৫টি নমুনা সংগ্রহ করে এনএফএসএলের ল্যাবে তা পরীক্ষা করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছিলেন শাহলীনা। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকার একটি এবং সিলেটের একটি দইয়ের নমুনা নিম্নমানের। বাকিগুলোতে কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি। কিন্তু প্রতিবেদনটি ‘অগোছালো’ হওয়ায় বিএসটিআইকে এ বিষয়ে আবার প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এনএফএসএলের ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবর দেখে গত ১১ ফেব্রুয়ারি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads