• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
প্রয়োজনে আইন সংশোধন করতে হবে

ছবি : সংগৃহীত

আইন-আদালত

প্রয়োজনে আইন সংশোধন করতে হবে

দ্রুত রায় কার্যকরে দরকার দ্রুত বিচার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৩০ জুন ২০১৯

নিম্ন আদালতে বিচারের পর হাইকোর্টে আপিলের পর আটকে থাকে। এই মামলাগুলো তখন যেন দ্রুত সময়ে নিষ্পত্তি হয়, সে ব্যবস্থা করতে হবে। মানুষ বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর চায়। নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার এবং দ্রুত রায় কার্যকরে প্রয়োজনে আইন সংশোধন করতে হবে। গতকাল সকালে জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

কামরুল ইসলাম বলেন, নিম্ন আদালতে বিচার পেলেও মানুষ তাতে খুশি নয়। মানুষ বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর চায়। নিম্ন আদালতে বিচারের পর হাইকোর্টে আপিলের পর আটকে থাকে। এই মামলার রায়গুলো হাইকোর্টে যাওয়ার পর সেটা আটকে যায়। এই মামলাগুলো যখন হাইকোর্টে যায়, তখন সেগুলো যেন দ্রুত সময়ে নিষ্পত্তি হয়, সে ব্যবস্থা করতে হবে। এটা হলেই আমরা বলতে পারি দ্রুত সময়ে বিচার পাচ্ছি।

কামরুল ইসলাম বলেন, নিম্ন আদালতে বিচার সম্পন্ন হলেও দুঃখজনক হলেও সত্য উচ্চ আদালতে গিয়ে সেই মামলাগুলো আটকে যাচ্ছে। আমাদের দেশে সামাজিক অবক্ষয় হয়েছে। আমাদের মধ্যে পশুবৃত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। সামাজিক মূল্যবোধের চেয়ে পশুবৃত্তি বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। যার কারণে আমাদের বিপদগ্রস্ত হতে হচ্ছে। দুদিন আগে বরগুনায় রিফাতের হত্যাকাণ্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে, অথচ যারা ভাইরাল করছে কেউ এগিয়ে যাচ্ছে না।

রিফাত হত্যা নিয়ে তিনি আরো বলেন, ছেলেটাকে তার স্ত্রীর সামনে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, যেভাবে চাপাতি দিয়ে কোপানো হয়েছে, দেখেও কেউ এগিয়ে যায়নি। এরকম ঘটনাগুলো নৃশংস হত্যা। দিনে দিনে মানবিক মূল্যবোধ, মনুষ্যত্ব ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে। এ কারণে দ্রুত সময়ে এগুলোর বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।

সাবেক এই আইন প্রতিমন্ত্রী বলেন, রিফাত হত্যার পর প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিচার করতে হবে। আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী সবাই বলছেন বিচার করতে হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরাও বলেছি বিচার করতে হবে।

সাবেক এই আইন প্রতিমন্ত্রী তার সময়ের বিভিন্ন মামলার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বিশ্বজিৎ হত্যা মামলা ৬০ মাসের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবায়ের হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করেছি। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার বিচার করেছি। ৭ খুনের মামলার বিচার করেছি। সিলেটে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যা মামলার বিচার হয়েছে।

নুসরাত হত্যার বিচার দ্রুত সম্পন্ন হবে জানিয়ে কামরুল ইসলাম বলেন, মামলার বিচার যেভাবে চলছে, যেভাবে সাক্ষী চলছে, তাতে বিচারটা হবে। আশা করছি, দুই তিন মাসের ভেতরে বিচার শেষ হবে। সর্বোচ্চ শাস্তিও পাবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য নিম্ন আদালতের বিচার পাচ্ছি ঠিক, সর্বোচ্চ শাস্তিও পাচ্ছি। মানুষ কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট না। কারণ চূড়ান্ত বিচার পাচ্ছে না এবং তাদের দণ্ড কার্যকর করা যাচ্ছে না। পরিবারগুলো অভিশাপ দিচ্ছে তারা দ্রুত দণ্ড কার্যকর চায়।

আইনমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, বিচারগুলো নিম্ন আদালত সফলভাবে শেষ করছে; কিন্তু আপিল বিভাগে আটকে যাচ্ছে। নিম্ন আদালতের রায় দিয়ে বলতে পারব না রায় কার্যকর হয়েছে, বিচার হয়েছে। দ্রুত বিচার সম্পন্ন করার জন্য হাইকোর্টে আইনের সংশোধনের প্রয়োজন নেই। শুধু অ্যাটর্নি জেনারেল যখন পেপার রেডি করেন, তখন পেপার বুক তৈরি করতে বলেন, যাতে দ্রুত সময়ে আপিল বিভাগে বিচার নিষ্পত্তি ব্যবস্থা করা যায়।

অনেক ঘটনার বিচার কার্যকর করতে বছরের পর সময় লাগছে জানিয়ে অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, অনেক ঘটনার বিচার কার্যকর করতে পারছি না, বছরের পর বছর আটকে আছে। এসব ক্ষেত্রে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল দিচ্ছেন। বিভিন্নভাবে রুল দিচ্ছেন। কাজেই দ্রুততম সময়ে মধ্যে যাতে আপিল নিষ্পত্তি হয় সেই ব্যবস্থা করুন। দ্রুততম সময়ে আপিল নিশ্চিত করতে পারলে জবাবদিহিতা বাড়বে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads