পাবনার ঈশ্বরদীতে রেলস্টেশনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি ও বোমা হামলার মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত সাতজন আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। আজ রোববার দুপুরে পাবনা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ তারা আত্মসমর্পণ করেন।
আত্মসমর্পণকারী সাত আসামিরা হলেন-যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ঈশ্বরদীর পিয়ারাখালী গ্রামের আছির উদ্দিনের ছেলে আমিনুল ইসলাম, পশ্চিমটেংরী ব্লাকপাড়ার আব্দুল গফুর গার্ডের ছেলে মো. রবি, একই গ্রামের জালাল গার্ডের ছেলে মামুন, যুক্তিতলা গ্রামের জয়েন উদ্দিনের ছেলে আবুল কালাম আজাদ। এবং দশ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো পশ্চিমটেংরী বাবুপাড়া গ্রামের মহসীন রিয়াজীর ছেলে রনো, মিরকামারী গ্রামের জামাত আলী সরকারের ছেলে চাঁদ আলী, চরসাহাপুর গ্রামের মতিউর রহমান সরদারের ছেলে হুমায়ুন কবির। আত্মসমপর্ণের পর আদালত তাদের কারাগারে পাঠান।
পাবনার সরকারি কৌঁসুলী আকতারুজ্জামান মুক্তা জানান, গত ৩ জুলাই ওই মামলার রায়ে ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ২৫ জনের যাবজ্জীবনসহ ১৩ জনের দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন পাবনার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক রোস্তম আলী। এ মামলায় পলাতক ১৩ আসামির মধ্যে ৭ জন গতকাল আত্মসমর্পণ করেন। তাদের মধ্যে ৪ জন যাবজ্জীবন এবং ৩ জন ১০ বছর করে কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাওয়ার পথে ঈশ্বরদী স্টেশনে যাত্রাবিরতি ও পথসভার করার কথা ছিল। শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনটি ঈশ্বরদী স্টেশনে পৌঁছালে বিএনপি নেতাকর্মীরা ট্রেন ও তার কামরা লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ ও বোমা নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় ওই সময়ে জিআরপি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সিআইডি মামলাটি পুনঃতদন্ত করে। তদন্ত শেষে নতুন করে ঈশ্বরদীর বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ ৫২ জনকে এই মামলায় আসামি করা হয়। পরে সিআইডির তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। দীর্ঘ ২৫ বছর পর গত ৩ জুলাই এই মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত।
