• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
ওবায়দুলের ফাঁসি চান নিহতের স্বজনরা

ছবি : সংগৃহীত

আইন-আদালত

রিশা হত্যা মামলার রায় আজ

ওবায়দুলের ফাঁসি চান নিহতের স্বজনরা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৬ অক্টোবর ২০১৯

রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা হত্যার আলোচিত মামলার রায় আজ। আজ দুপুরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের এ রায় ঘোষণার কথা রয়েছে। গত ১১ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের যুক্তি-তর্ক শুনানি শেষে আদালত রায় ঘোষণার জন্য ৬ অক্টোবর তারিখ ধার্য করেছিলেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) তাপস কুমার পাল বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আসামি অত্যন্ত জঘন্য কাজ করেছে। প্রকাশ্য দিবালোকে একটা মেয়েকে ছুরি মেরে হত্যা করেছে। তার এমন সাজা হওয়া উচিত যেন ভবিষ্যতে আর কেউ এ ধরনের জঘন্য কাজ করতে সাহস না পায়। তার সর্বোচ্চ সাজা হবে বলে আশা করছি। নিহত রিশা রাজধানীর বংশাল থানাধীন সিদ্দিক বাজার এলাকার রমজান হোসেন ও তানিয়া হোসেনের মেয়ে।

ওবায়দুল দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের মীরাটঙ্গী গ্রামের মৃত আবদুস সামাদের ছেলে। তিনি রাজধানীর ইস্টার্ন মল্লিকা শপিং মলের বৈশাখী টেইলার্সের কর্মচারী ছিলেন।

মামলার বাদী ও রিশার মা তানিয়া হোসেন বলেন, ঘাতক ওবায়দুল আমার মেয়েটাকে বাঁচতে দিল না। পাষণ্ড এমনভাবে আমার মেয়েটাকে ছুরিকাঘাত করেছে যে সে আর ফিরল না। একটাই দাবি, ওবায়দুলের ফাঁসি চাই। সঠিক বিচার হলে এরকম ঘটনা আর কেউ ঘটাতে সাহস পাবে না।

রিশার বাবা রমজান হোসেন বলেন, যাকে হারিয়েছি তাকে তো আর ফিরে পাব না। তবে যে আমার মেয়েকে বুক থেকে কেড়ে নিয়েছে, আমি তার সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছি। আমি ওর ফাঁসি চাই।

বাদীপক্ষকে আইনি সহায়তাকারী বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সদস্য ফাহমিদা আক্তার রিংকি বলেন, এটা অপ্রত্যাশিত ঘটনা। আমরা আসামির সর্বোচ্চ সাজা আশা করছি। আর যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।

এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মদ বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। আমরা ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি। আসামি খালাস পাবে বলে আশা করছি।

২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের সামনে ফুটওভার ব্রিজে রক্তাক্ত অবস্থায় রিশাকে পাওয়া যায়। স্কুলের শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর ২৮ আগস্ট সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিশার মৃত্যু হয়।

২৪ আগস্ট রিশার মা তানিয়া রাজধানীর রমনা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় এবং দণ্ডবিধির ৩২৪/৩২৬/৩০৭ ধারায় হত্যাচেষ্টা ও গুরুতর আঘাতের অভিযোগে একটি মামলা করেন। রিশার মৃত্যুর পর হত্যার অভিযোগে ৩০২ ধারা সংযোজন করা হয় ওই মামলায়।

ঘটনার পর থেকে ওবায়দুল পলাতক ছিলেন। ৩১ আগস্ট নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সোনারগাঁও থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ওবায়দুলের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ওবায়দুল। রিশা প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে খুন করার কথা স্বীকার করেন ওবায়দুল।

মামলাটি তদন্ত করে ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর ওবায়দুল হককে একমাত্র আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার পুলিশ পরিদর্শক আলী হোসেন। ২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল মামলার একমাত্র আসামি ওবায়দুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এরপর ‘সঠিক আদালতে বিচার না হওয়ায়’ মামলাটি ঢাকার শিশু আদালতে স্থানান্তর করা হয়। আইনি জটিলতা শেষে মামলাটি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আসে। এরপর আরো দুজন সাক্ষীসহ ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। গত ২৫ আগস্ট নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আত্মপক্ষ শুনানি করেন ওবায়দুল হক।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads