• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
চাঁদপুরে কারাগার থেকে মুক্তির অপেক্ষায় ১’শ ৪০ কয়েদী

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

আইন-আদালত

চাঁদপুরে কারাগার থেকে মুক্তির অপেক্ষায় ১’শ ৪০ কয়েদী

  • চাঁদপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৪ এপ্রিল ২০২০

করোনা ভাইরাস উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কিছু কিছু কারাবন্দীদের মুক্তির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তারই অংশ হিসেবে চাঁদপুর জেলা কারাগার থেকে স্বল্প মেয়াদে বিভিন্ন পর্যায়ের সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তির জন্য ১‘শ ৪০ কারাবন্দীর তালিকা কারা অধিদপ্তরে পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ তালিকা অনুযায়ী ১‘শ ৪০ কারাবন্দী মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কারাগারের জেল সুপার মোঃ মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া।

তিনি জানান, করোনা সংক্রমণ এড়াতে চাঁদপুর জেলা কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য স্বল্প মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ১‘শ ৪০ জন কয়েদির নাম ঢাকা কারা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এই তালিকা পাঠানো হয়েছে। কারা অধিদপ্তর থেকে এই তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই শেষে অনুমতি স্বাপেক্ষে তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করা হবে।

জেল সুপার মোঃ মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া আরো জানান, প্রায় দেড় হাজার আসামী ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন চাঁদপুর জেলা কারাগারে পুরুষ বন্দীদের জন্য ৮ কক্ষ বিশিষ্ট ২টি ৪ তলা এবং ৪ কক্ষ বিশিষ্ট ১টি ২ তলা ভবন রয়েছে।

অন্যদিকে নারী কয়েদীদের জন্য ৪ কক্ষ বিশিষ্ট ১টি ২তলা ভবন রয়েছে। যার মধ্যে ২টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ৬টি কন্ডেম সেল রয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে ৪০-৫০ জন আসামীকে রাখা যায়। সবমিলিয়ে ফাঁসির আসামীদের জন্য এখানে ১০টি কন্ডেম সেল রয়েছে।

২২শে এপ্রিল পর্যন্ত কারাগারে সাজাপ্রাপ্ত ও আন্ডার ট্রায়ালে মোট বন্দী রয়েছেন ৭‘শ ৪৩ জন। যার মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত ২‘শ ২৯জন, বিচারাধীন ৫‘শ ১১জন এবং ফাঁসির আসামী ৩ জন।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কেমন প্রস্তুতি জেলা কারাগারে নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে জেল সুপার মোঃ মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, এ কারাগারে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সতর্কতামূলক নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিদিনই হয়তো ২/৩ জন নতুন বন্দী আসে। তাদেরকে কারাগারের ভেতরে ঢোকানোর আগে প্রধান গেটে হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে হাতমুখ ধোয়ানো হয়। পরীক্ষা করা হয় শরীরের তাপমাত্রা। স্প্রে করা হয় জীবাণুনাশক স্প্রে। এভাবে প্রাথমিকভাবে সুস্থ্যতার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ভেতরে ঢুকানো হয় আসামিদের।

জেল সুপার আরো বলেন, নতুন আসামীদের ক্ষেত্রে আমরা ১৪ দিন তাদের কে আলাদা ওয়ার্ডে রাখি। সেই ওয়ার্ড থেকে আবারো পুনরায় অন্য একটি আলাদা ওয়ার্ডে আরো ১৪দিন তাদের কে রাখি। প্রতিদিন সকাল বিকাল দু’বার পুরো কারাগার এলাকায় জীবাণুনাশক স্প্রে ছিটানো হয়। রেডক্রিসেন্টের পক্ষ থেকেও একবার করে জীবাণুনাশক স্প্রে ছিটানো হয়েছে। বাইরের দর্শণার্থীরা ভেতরে প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ। বিকল্প হিসেবে দিনে ৫ মিনিট আসামীদের ফোনে কথা বলার নির্দেশনা রয়েছে।

জরুরী অবস্থা মোকাবেলা প্রসঙ্গে জেল সুপার বলেন, জেলা কারগারে আমরা ৩ জন করে মোট ৬জন রাখার মতো ২টি আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রেখেছি। যা দেখভালে ১জন সহকারী সার্জন সহ কারাগারের মোট ৭৯ জনবল কাজ করছে। কারাগারের রান্নাঘর পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি খাবার ভালোভাবে সিদ্ধ হওয়ার পর পরিবেশন করা হয়।এছাড়াও কারাগারের ভেতরে বন্দীদের মাঝে করোনা সম্পর্কে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

এ ব্যপারে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান জানান, করোনা পরিস্থিতিতে জেলা কারাগার ঝুঁকিমুক্ত রাখতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

মহিলা কয়েদীদের জন্য ডিপ্লোমা নার্সের শূণ্য পদটি পূরণে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তালিকা প্রেরণকৃত কয়েদীদের মুক্তির ব্যাপারে যাচাই-বাছাই চলছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads