• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
মানুষ কেন হাসপাতালে-হাসপাতালে ঘুরছে, প্রশ্ন হাইকোর্টের 

সংগৃহীত ছবি

আইন-আদালত

মানুষ কেন হাসপাতালে-হাসপাতালে ঘুরছে, প্রশ্ন হাইকোর্টের 

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১০ জুন ২০২০

রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে আইসিইউ না পেয়ে বরিশালের আধুনিক রাহাত-আনোয়ার হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ডা. মো. আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুসহ একাধিক রোগী মারা যাবার ঘটনায় হাইকোর্ট উষ্মা প্রকাশ করেছেন। আদালত রাষ্ট্রপক্ষের কাছে প্রশ্ন করে বলেছেন, হাসপাতালে মনিটরিং ব্যবস্থা ঠিক থাকলে মানুষ কেন হাসপাতালে-হাসপাতালে ঘুরছে? 

এদিকে বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ সরকারের অধীনে অধিগ্রহণ করা এবং কেন্দ্রীয়ভাবে একটি ‘সেন্ট্রাল বেড ব্যুরো’ গঠন করার নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদনের ওপর আগামী ১৪ জুন আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ।

বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ৮ জুন রাষ্ট্রপক্ষের কাছে এ তথ্য জানতে চান। আদালত ১০ জুনের মধ্যে এ তথ্য জানাতে নির্দেশ দেন।

এদিকে দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে কতগুলো নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) আছে, সেগুলো কিভাবে বণ্টন হয় তার তথ্য আজ আদালতকে জানায় রাষ্ট্রপক্ষ।

তারা জানায়, সারা দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মোট ৭৩৩টি শয্যা রয়েছে। এর মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত ১৭ হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা আছে ২৩৫টি।

এছা[আ আদালত এ রিট আবেদনটিসহ অক্সিজেন সংকটের বিষয়ে করা রিটের ওপর এক সাথে আদেশ দেয়ার জন্য ১৪ জুন দিন ঠিক করেছে।

দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কতগুলো আইসিইউ আছে, সেগুলো কীভাবে বণ্টন হয় তার তথ্য গত ৮ জুন জানতে চেয়েছিল হাইকোর্ট।

সে অনুযায়ী অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা আজ আদালতকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী শুধুমাত্র করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীর চিকিৎসার জন্য সারা দেশে ১৭ হাসপাতালে ২৩৫টি আইসিইউ রয়েছে। আর দেশজুড়ে সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ রয়েছে ৭৩৩টি। এ সংখ্যা বাড়ানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আর এটা বাড়ানো সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। শুধু আইসিইউ করলেই হবে না, তা পরিচালনার জন্য দক্ষ জনবলেরও প্রয়োজন রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে আইসিইউগুলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে। কারও যদি আইসিইউ সাপোর্ট প্রয়োজন হয় তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইনে ফোন দিলেই জানা যায় যে নিকটস্থ কোন হাসপাতালে শয্যা খালি আছে। সেখানে রোগী পাঠানোর পরামর্শ দেয়া হয়। এভাবেই কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক আইসিইউ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।’

এ সময় রিট আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান আদালতকে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য সঠিক নয়। গত মঙ্গলবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে যে একজন চিকিৎসক রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে-হাসপাতালে ঘুরেও আইসিইউ পাননি। অ্যাম্বুলেন্সে করে ওই চিকিৎসক ঘুরতে ঘুরতে কোনো হাসপাতালে আইসিইউ না পেয়ে এক প্রকার বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন।

‘একজন চিকিৎসক কি জানেন না স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইনের কথা? হটলাইনে ফোন করলেই যদি শয্যা বা আইসিইউ খালি থাকার তথ্য জানা যেত, তাহলে একটি আইসিইউ শয্যার আশায় ওই চিকিৎসক কেন এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটেছেন? আমি নিজে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঁচটি হটলাইনে ফোন করেছি। এর মধ্যে চারটিই রিসিভ করেননি কেউ। একটি হটলাইন রিসিভ করে আমাকে দুটি হাসপাতালের নাম বলল। কিন্তু শয্যা খালি আছে কি না তা বলতে পারেনি। একটি হাসপাতালের ফোন নম্বর দিয়ে ওই হাসপাতালে ফোন করতে বলা হলো। এই হলো অবস্থা,’ যোগ করেন তিনি। 

করোনাভাইরাসের সংক্রমণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বেসরকারি হাসপাতালের ‘আইসিইউ বেড অধিগ্রহণ’ ও অনলাইনে ‘সেন্ট্রাল বেড ব্যুরো’ গঠনের নির্দেশনা চেয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ডেপুটি রেজিস্ট্রার শেখ আবদুল্লাহ আল মামুন গত ৬ জুন এ রিটটি করেন। রিটে স্বাস্থ্য সচিব, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সচিব এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট ছয়জনকে বিবাদী করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads