• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

আইন-আদালত

ঘোড়াঘাটের ইউএনওর উপর হামলা

রবিউলকে মামলার একমাত্র আসামী করে আদালতে চার্জশীট পেশ

  • দিনাজপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২২ নভেম্বর ২০২০

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলী শেখের উপর হামলার মামলায় আদালতে চার্জশীট জমা করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাম জাফর আদালতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে এই চার্জশীট পেশ করেন। চার্জশীটে ইউএনওর বাসভবনের সাবেক কর্মচারী রবিউলকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।

অভিযোগপত্র দাখিল শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইমাম আবু জাফর জানান, প্রায় দুই মাস মামলার প্রতিটি বিষয় পূঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে জব্দকৃত আলামত, আসামি রবিউলের বাড়ি থেকে উদ্ধারকৃত আলামত, সিসিটিভির ফুটেজ, ব্যক্তির স্বাক্ষ্যপ্রমাণ, ডিএনএ রিপোর্ট ও তার ব্যবহৃত মুঠোফোনের অবস্থানসহ বিভিন্ন বিষয়ে তদন্ত করে শুধুমাত্র ঘটনার সাথে রবিউলের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে অন্য যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো ঘটনার সাথে তাদের কোন সম্পৃক্ততা না থাকায় মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

ঢাকায় চিকিৎসা শেষে বর্তমানে ইউএনও ওয়াহিদা খানম বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে।

উল্লেখ্য, বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ২টার দিকে সরকারি ডাকবাংলাতে ঘোড়াঘাট ইউএনওর ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলী শেখের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় তাদেরকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে দুপুর ১টায় হেলিকপ্টার যোগে জাতীয় নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভাই শেখ ফরিদ বাদী হয়ে ঘোড়াঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। একই দিন রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব ভূঞা ৩সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। ৫সেপ্টেম্বর ভোরে অভিযান পরিচালনা করে যুবলীগ নেতা আসাদুল ইসলামকে র‌্যাব সদস্যরা ও রং মিস্ত্রি নবিরুল ইসলাম ও সান্টু কুমারকে পুলিশ গ্রেফতার করে। ৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে রং মিস্ত্রি নবিরুল ও সান্টুকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিশির কুমার বসুর আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। বিজ্ঞ বিচারক তাদের ৭দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পরে ৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে ঘোড়াঘাট উপজেলার অভিযান চালিয়ে আসাদুল ইসলামের বড় ভাই আশরাফুল ইসলাম শাওন, ইউএনওর বাসভবনের মালি নাদিম হোসেন পলাশ ও মামলার অন্যতম আসামি সান্টু কুমারের আত্মীয় শ্যামল কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মামলার অন্যতম আসামি আটক আসাদুলকে র‌্যাব সদস্যরা ঘোড়াঘাট থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করেন। ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে দিনাজপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আমলী আদালত-৭) মনিরুজ্জামান সরকারের আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। বিজ্ঞ বিচারক আসাদুলকে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উপজেলা ভূমি অফিসের গাড়িচালক ইয়াসিন আলী ও উপজেলা পরিষদের পরিচ্ছন্নতাকর্মী অরসোলা হেমব্রমকে আটক করা হয়। আটক রং মিস্ত্রি নবিরুল ইসলাম, সান্টু কুমার ও আসাদুলের রিমান্ড শেষে তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। ১১সেপ্টেম্বর দায়িত্বে অবহেলা ও কাজে গাফিলতির অভিযোগে ঘোড়াঘাটের ওসি আমিরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়। ১১ সেপ্টেম্বর রাতে জেলার বিরল উপজেলার বিজোড়া ইউনিয়নের বিজোড়া গ্রামের খতিব উদ্দীনের ছেলে ও ঘোড়াঘাটের ইউএনও বাসভবনের সাবেক কর্মচারী রবিউল ইসলামকে আটক করা হয়।

১২ সেপ্টেম্বর বিকেলে দিনাজপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আমলি আদালত-৭) ইসমাইল হোসেনের আদালতে রবিউলকে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে তদন্তকারী কর্মকর্তা। বিজ্ঞ বিচারক রবিউলকে ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ১৭সেপ্টেম্বর ৬ দিনের রিমান্ড শেষে দিনাজপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে আরও ৭দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। বিজ্ঞ বিচারক রবিউলকে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ২০ সেপ্টেম্বর ৩ দিনের রিমান্ড শেষে দিনাজপুর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজেষ্ট্রিট আমলী আদালত-৭ এর বিচারক ইসমাইল হোসেনের নিকট নিজের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন রবিউল ইসলাম।##

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads