• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

আইন-আদালত

গ্রামীণ সড়কের পাশে পুকুর খনন করলে আইনি ব্যবস্থা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০২ জানুয়ারি ২০২১

গ্রামীণ সড়কের পাশে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় না রেখে পুকুর ও নালা খনন করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সরকার। সড়কের ধার ঘেঁষে পুকুর, কূপ, মাটি বা সেচ নালা খননে করলে সড়কের পার্শ্ব-ঢাল এবং আড়িঢালের ক্ষতি রোধে এ ব্যবস্থা নিয়েছে স্থানীয় সরকার।

সম্প্রতি এ সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়, লক্ষ করা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশের বিভিন্ন উপজেলায় এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত সড়কের পাশে পুকুর ও নালা খনন করা হচ্ছে। সড়কের ধার ঘেঁষে পুকুর, কূপ, মাটি বা সেচ নালা ইত্যাদি খনন করলে সড়কের পার্শ্ব-ঢাল এবং আড়িঢাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব ক্ষেত্রে সড়ক সীমানার বাইরে ন্যূনতম দূরত্ব বজায় রেখে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন সম্পর্কিত কার্যক্রম হাতে নেওয়া যায়।

নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে গ্রামীণ সড়কের ধার ঘেঁষে পুকুর, সেচ নালা খনন করা দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কোনো ব্যক্তি রাস্তার ধার ঘেঁষে পুকুর/খাল/কূপ/সেচনালা তৈরি করলে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে নিজ খরচে সুরক্ষা ঢাল নির্মাণ করবেন।

এ সংক্রান্ত কতিপয় আইন/বিধি-বিধান স্মরণ করে দেওয়া হয় নির্দেশনায়।

দ্য বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন অ্যাক্ট, ১৯৫২-এর ৩ ধারা অনুসারে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ছাড়া কোনো পুকুর খনন বা পুনঃখনন করা যাবে না।

যদি কেউ এমনভাবে পুকুর বা সেচনালা ইত্যাদি খনন করেন যার ফলে ভূমির বা সড়কের বা পথের ব্যবহার বা ভোগদখলের ক্ষেত্রে কোনোরূপ অসঙ্গত অসুবিধার সৃষ্টি করে তাহলে কর্তৃপক্ষ দ্য বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন অ্যাক্ট, ১৯৫২-এর ৩ ধারার (৩) উপধারা অনুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে তা অপসারণ, খনন বা পুনঃখনন বন্ধ বা ভরাট করার আদেশ দিতে পারেন।

যদি কেউ দ্য বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন অ্যাক্ট, ১৯৫২-এর ৩ ধারার বিধান লঙ্ঘন করেন বা ৩ ধারা অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের আদেশ পালনে ব্যর্থ হন তাহলে ওই আইনের ১২ ধারা অনুযায়ী আদালত দোষী ব্যক্তিকে ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড অথবা উভয় ধরনের দণ্ডে দণ্ডিত করতে পারেন।

ইমারত নির্মাণ বিধিমালা, ১৯৯৬-এর বিধি ২৮ অনুযায়ী নিজ ভূমির কমপক্ষে ১০ ফুট অভ্যন্তরে পুকুর বা জলাশয় সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। অর্থাৎ সরকারি রাস্তার সীমানার কিনারা হতে কমপক্ষে ১০ ফুট দূরত্বে এবং ৪৫ ডিগ্রি ঢালে পাড় রেখে পুকুর/জলাশয় খনন করতে হবে।

দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর ধারা ৪৩১ অনুযায়ী সরকারি রাস্তার ক্ষতিসাধন ফৌজদারি দণ্ডনীয় অপরাধ। এই আইনে ৫ বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।

সরকারি ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ভূমি ও ইমারত (দখল পুনরুদ্ধার) অধ্যাদেশ-১৯৭০ এর ধারা-৫ অনুযায়ী অবৈধভাবে দখলকৃত ভূমির ওপর পুকুর নালা বা পুকুর খনন বা পুনঃখনন করলে জেলা প্রশাসক উক্ত নালা বা পুকুর ৩০ দিনের মধ্যে অপসারণের আদেশ দিতে পারেন। জনস্বার্থের গুরুত্ব বিবেচনায় তিনি ক্ষেত্র বিশেষে ৭ দিনের মধ্যেও অপসারণের আদেশ দিতে পারেন। উক্তরূপ অবৈধ দখলের জন্য ৭ ধারা অনুযায়ী আদালত দোষী ব্যক্তিকে কারাদণ্ড বা জরিমানা অথবা উভয় ধরনের দণ্ডে দণ্ডিত করতে পারেন।

নির্দেশনায় গ্রামীণ সড়কের পার্শ্বে প্রচলিত আইন/বিধি-বিধানের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কোনো পুকুর, কূপ, মাটি বা সেচনালা খনন করা হলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads