হাফিজ রশিদ খান
মেদুর বৃষ্টিধারা
একজন কবি, কালো কবি
বর্ষামেঘে চোখ রেখে ভুলে যেতো সবি
ঘর নেই তার, নেই কিছু কেউ
পাড়া-প্রতিবেশী নেই, পিছু নেই কোনো ফেউ
মেঘেদের সঙ্গে সে থাকে সহজ জলকণা
গাছের পাতায় ক্লোরোফিলের নিখুঁত বনিবনা
কবি কালিদাস লিখছিলেন যখন উত্তরমেঘের গল্প
তার কিছুদিন আগে দৃষ্টি বিনিময় হলো দুজনের অল্প
সেই থেকে শ্বেতবরষার প্রণত মেদুর বৃষ্টিধারা
বাংলাদেশকে করেছে উর্বর, মুখর মানুষের পাড়া...
গিরীশ গৈরিক
ব্যাঙ
গন্ধের আনন্দে-গন্ধের অভিশাপে ছুটে আসে মাছি
মৃতদেহ কিংবা মলের গন্ধে মাছি-ফুলের গন্ধেও মাছি
এই মাছি ও মৌমাছি হয়ে বেঁচে রয় মানব-হূদয়।
মৌমাছির মল চাকের ভেতর জমে জমে মোম হয়ে যায়
এসব মোম আলো হয়ে জ্বলে জীবনের অন্ধকারে
তাই ভাবি আমার কবিতা মাছি নাকি মৌমাছি।
গভীর অন্ধকারে মোমবাতি হাতে
ঘোলা নদীর অস্পষ্ট জীবন নিয়ে বয়ে চলি চোখের জলে।
বৃষ্টির আনন্দে ব্যাঙের মতো ডেকে উঠি প্রণয় আখ্যানে
তবুও কোথাও কেউ নেই- শুধু রাজপথে পড়ে আছে আমার মৃতদেহ।
আমার এ মৃতদেহ- আমিই আবার ডোম হয়ে কাটি
আর অনুসন্ধান করি, এই দেহের কোথায় লুকিয়ে ছিল বাংলা কবিতা।
নুরুন্নাহার শিরীন
রক্তক্ষরা সময়জাল
আকাশটা ধূসর যখন—
মনে পড়ে মেঘ ছিল অমল তখন।
আমাদের বাংলার ঘরে-ঘরে
যখন-তখন খুশি ঝরে পড়ে।
কত না সামান্যেই খুশিরা উড়তো
কত সীমাহীন অনটন মানুষ ভুলতো!
পরম্পরা সম্পর্কের মধুর বাঁধন—
কারা আলগা করছে পশুর মতোন?
পশুরাও নয় অতটা অধম
ওরা ধর্মের নামে অধর্মে পারঙ্গম।
আজ মানুষ ওদের ঘৃণা করে—
মানুষ ওদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে ঘুরে।
আকাশে ধূসর মেঘে সিন্দুরিয়া ব্যথাভার
তারও অধিক রক্তক্ষরা সময় আমার।