• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
সাহিত্যে জানা-অজানা

‘টুইংকল টুইংকল লিটল স্টার’ ছড়াটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ছড়া হিসেবে এখনো সর্বজনবিদিত

ছবি : ইন্টারনেট

সাহিত্য

অন্য দেশ

সাহিত্যে জানা-অজানা

  • প্রকাশিত ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

নাঈমা সিদ্দিকা

ব্যা, ব্যা, ব্ল্যাক শিপ’ ও ‘টুইংকল টুইংকল লিটল স্টার’, ইংরেজিতে লেখা এই ছড়া বা রাইমসগুলো নার্সারি, শিশু ও প্রথম শ্রেণিতে পড়ে আমরা বড় হয়েছি। বড় হয়েছে আমাদের মা-বাবা, বড় হচ্ছে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম। প্রাথমিক কিংবা কিন্ডারগার্টেন স্কুলের দেয়ালচিত্রে অংকন করা হয় ছড়াগুলোর চিত্ররূপ। শিক্ষকরা ছবি দেখিয়ে ছড়াগুলোর অর্থ বাচ্চাদের বুঝিয়ে দেন। অনেক বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন বাচ্চাদের ছড়াগুলো শুনিয়ে ঘুম পাড়ান বা তাকে উৎসাহিত করেন পড়ার প্রতি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না এ ছড়াগুলোর লেখক কে, কখন লেখা হয়েছিল, লেখার পেছনে কী উদ্দেশ্যই বা ছিল? ১৮০৬ সালে ইংরেজ লেখক জেন টেইলরের লেখা ‘লিটল স্টার’ নামে ‘টুইংকল টুইংকল লিটল স্টার’ ছড়াটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ছড়া হিসেবে এখনো সর্বজনবিদিত। বিশ লাইনে, পাঁচটি পিক্ততে রচিত ছড়াটির প্রথম চার লাইন সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। ‘টুইংকল টুইংকল লিটল স্টার’ ছড়াটি শিশুদের জন্য রচিত হলেও ‘ব্যা, ব্যা, ব্ল্যাক শিপ’ ছড়াটির রয়েছে প্রাচীন ইতিহাস, বিতর্ক, সমালোচনা ও ইঙ্গিতমূলক ব্যবহার। ১৭৩১ থেকে বর্তমান পর্যন্ত টিকে থাকা সংস্করণগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরনো ছড়া এটি। ইংরেজিতে রচিত ছড়াটি ১৭৪৪ সালে ‘টমি থাম্ব’স্ প্রিটি সং বুক’ বইয়ে প্রথম প্রকাশিত হলেও ছড়াটির রচয়িতা বা রচনাকাল সম্পর্কে কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি। ছড়াটি রচনার উৎস বা ব্যাখ্যা সম্পর্কে অনেক বিতর্ক রয়েছে। ক্যাথরিন এলওয়েল থামাস ছড়াটির উৎস সম্পর্কে তার ‘দ্যা রিয়াল পার্সোনেজেস অব মাদার গুজ’ (১৯৩০) বইয়ে বলেন, ‘ছড়াটি ছিল পশমের ওপর ইংরেজদের অতিরিক্ত শুল্কের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ।’ অনেকেই আবার এর উৎস হিসেবে দাসপ্রথা বা ভেড়ার কালো পশমের সহজলভ্যতাকে মনে করেছেন।

ছড়াটি নিয়ে বিতর্কের অন্যতম কারণ হলো ‘ব্ল্যাক’ শব্দটি। ১৯৮৬ সালে ব্রিটেনে ছড়াটির ‘ব্ল্যাক’ শব্দটি নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে এবং ট্যাবলয়েড সংবাদপত্রগুলো একে বর্ণবাদের দোষে অভিযুক্ত করে। অনেক স্কুলে ‘ব্ল্যাক’ শব্দের পরিবর্তে রেইনবো, হ্যাপি, স্যাড, হোপিং, পিঙ্ক এবং লিটল শব্দ ব্যবহার করা হতো। তবে অনেকেই মনে করেন, ছড়াটি সংবাদমাধ্যম দ্বারা প্রভাবিত এবং অতিরঞ্জিত হয়েছিল রাজনৈতিক শুদ্ধতার বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে। এমনকি ছড়াটি যৌন বিতর্কের খড়গের নিচেও পড়েছিল। ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার কিছু কিন্ডারগার্টেন ‘ব্ল্যাক’ শব্দের পাশাপাশি ছড়াটির শেষ লাইনটিও (অহফ ড়হব ভড়ৎ ঃযব ষরঃঃষব নড়ু যিড় ষরাবং ফড়হি ঃযব ষধহব) পরিবর্তন করতে সচেষ্ট হয়। এর কারণ হিসেবে তারা লাইনটিকে যৌন সম্পর্কিত বলে অভিহিত করে। ‘ব্যা, ব্যা, ব্ল্যাক শিপ’ ছড়াটি বিতর্কের পাশাপাশি ইঙ্গিতমূলক অর্থেও ব্যবহূত হতো। ‘ইয়েস স্যার, ইয়েস স্যার, থ্রি ব্যাগস ফুল’ লাইনটি ১৯১০ সাল থেকে অধস্তনদের চাটুকারিতা বোঝাতে ব্যবহূত হতো এবং ব্রিটিশ রয়েল নেভিতে প্রচলিত ছিল। ‘টুইংকল টুইংকল লিটল স্টার’ এবং ‘ব্যা, ব্যা, ব্ল্যাক শিপ’ ছড়া দুটি একক স্তবক ও দ্বিমাত্রিক ছন্দে রচিত। ১৭৬১ সালের ফরাসি সঙ্গীত ‘অয! ঠড়ঁং ফরৎধল-লব; গধসধহ’-এর সুরে ছড়া দুটি গাওয়া হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads